Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
general-election-2019/west-bengal

ভোটের পরে অশান্তি জেলা জুড়েই

ট্রাঙ্ক রোডে বিজেপির হামলায় দলীয় দুই কর্মী জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব।

আসানসোলের ডিএভি স্কুলে স্ট্রংরুমে কড়া পাহারা।

আসানসোলের ডিএভি স্কুলে স্ট্রংরুমে কড়া পাহারা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৯ ০২:০৮
Share: Save:

ভোট মিটে গিয়েছে। কিন্তু তার পরেও সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত দফায় দফায় নানা এলাকায় অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে তেতে রইল জেলা। যদিও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বারাবনি

ফের গোলমালের অভিযোগ বারাবনি বিধানসভা এলাকায়। বিজেপির অভিযোগ, মঙ্গলবার সকালে নান্দাই গ্রামে হারাধন সোরেন, রামলাল কিস্কুকে মারধর করে এক দল দুষ্কৃতী। তাঁদের আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সোমবার রাতে দাশকেয়ারি এলাকায় নওয়াল কিশোর সিংহ, দীপককুমার সিংহ নামে দু’জন দলীয় কর্মীর বাড়িতে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ বিজেপির। দলের আসানসোল জেলা সহ-সভাপতি প্রশান্ত চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল ভয় পেয়ে আমাদের উপরে হামলা চালাচ্ছে।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি (বারাবনি) অসিত সিংহের দাবি, ‘‘মারধরে আমাদের দল কোনও ভাবেই জড়িত নয়।’’ পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু হয়েছে।

দুর্গাপুর

দুর্গাপুরে বিজেপি, তৃণমূল পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছে। সোমবার ভোটের পরে রাত পর্যন্ত শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শালবাগান, নিশানহাট, ট্রাঙ্ক রোড-সহ কিছু এলাকায় তৃণমূলের হামলায় মোট ছ’জন দলীয় কর্মী জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। জখমদের দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দু’জনের চোট গুরুতর। মঙ্গলবার বিকেলে তাঁদের দেখতে হাসপাতালে এসেছিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। যদিও তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের দলের কেউ এ সবে জড়িত নয়।’’ দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য সুজিত মুখোপাধ্যায়ের আবার অভিযোগ, সোমবার রাতে ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার ইছাপুরে দলীয় কার্যালয় তাক করে বোমা ছোড়ে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতা কার্তিক হালদারের অবশ্য দাবি, ‘‘নিজেরা বোমা ছুড়ে আমাদের ঘাড়ে দায় চাপাতে চাইছে তৃণমূল।’’ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ এলাকায় যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।

ট্রাঙ্ক রোডে বিজেপির হামলায় দলীয় দুই কর্মী জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

জখমদের সঙ্গে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। ছবি: বিকাশ মশান, পাপন চৌধুরী।

কাঁকসা

চতুর্থ দফার ভোটের দিন, সোমবার কাঁকসা এলাকায় শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু রাত হতেই অশান্তি বাড়ে বলে অভিযোগ সিপিএমের। তাদের দাবি, কাঁকসার মোল্লাপাড়া এলাকায় দলের প্রাক্তন প্রধান শেখ সামসুজ্জোহার বাড়িতে রাত ১১টা নাগাদ তৃণমূলের লোকেরা হামলা চালায়। মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ ওই নেতার ভাইয়ের বাড়িতে ও এক জনের দোকানে হামলা চালায় তৃণমূল। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডলের অভিযোগ ‘‘শেখ সামসুজ্জোহা পোলিং এজেন্ট ছিলেন। তৃণমূল বুথ দখল করতে না পারায় হামলা চালিয়েছে।’’ কাঁকসার তৃণমূল নেতা অলোক চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই।’’ তৃণমূলের পাল্টা দাবি, মোল্লাপাড়ায় তাঁদেরই দলীয় কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর চালান ওই সিপিএম নেতা। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে।

বুদবুদ

বুদবুদের নতুনপল্লি এলাকা। সোমবার রাতে বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দুই মহিলা-সহ পাঁচ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মঙ্গলবার আক্রান্তদের বাড়িতে যান বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। স্থানীয় সূত্রে খবর, নতুনপল্লির বাসিন্দা অর্পিতা দে’র বাড়িতে রাতে জনা দশেক লোক হামলা চালায়। অভিযোগ, তৃণমূলের নিষেধ উপেক্ষা করে এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার ভোট না দিতে যাওয়ায়, তাঁদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। অর্পিতাদেবীর অভিযোগ, তাঁকে মারধর ও তাঁর স্বামী দেবাশিস দে’কে দা দিয়ে কোপানো হয়। হামলা চালানো হয় সুরজিৎ আচার্য নামের এক ব্যক্তির দোকানেও। তাঁর স্ত্রী, ছেলেকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে তৃণমূলের গলসি ১ ব্লক সভাপতি জাকির হোসেনের সঙ্গে বার বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব দেননি এসএমএসেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE