ভোট-পর্বে কোনও রকম অশান্তি চাইছে না জেলা পুলিশ। তাই আগেভাগেই গোলমাল পাকাতে পারেন এমন আট হাজার জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় নোটিস পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের বড় অংশই রাজনৈতিক দলের কর্মী বলে জানা গিয়েছে। যাঁরা নোটিস পাচ্ছেন তাঁদের মহকুমাশাসক দফতরের এগজিকিউটিভ কোর্টে গিয়ে মুচলেকা জমা দিতে হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় শান্তি বিঘ্নিত করলে, অতীতে কোনও গোলমালে জড়িয়ে থাকলে কিংবা কোনও ব্যাক্তির বিরুদ্ধে গন্ডগোল পাকানোর সন্দেহ থাকলে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১০৭ ও ১০৯ ধারায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নোটিস পাঠানো হয়। এ ছাড়াও দাগি অপরাধী বলে আগে থেকেই নজরে রয়েছেন, এমন ব্যক্তিদেরও ১১০ ধারায় নোটিস পাঠায় পুলিশ। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে ও শান্তি বজায় রাখার জন্যেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। এ রকম নোটিস পাঠানোর প্রক্রিয়া চলতেই থাকে।’’
জেলা প্রশাসনের দাবি, গত বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচন কমিশন সাপ্তাহিক রিপোর্ট নিতে শুরু করেছে। ওই দিন থেকে এখনও পর্যন্ত জেলায় গোলমালে চিহ্নিত করা হয়েছে ৭,৮৫৬ জনকে। তাঁদের বিরুদ্ধে ৩১৬৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, জেলার ১৬টি থানার মধ্যে গোলমালে অভিযুক্ত চিহ্নিত করায় এগিয়ে রয়েছে বর্ধমান থানা (৭৮১), তারপরেই রয়েছে কালনা (৪৭২)। আর ৯৫টি মামলায় দাগি অপরাধী হিসেবে ৯৫ জনকে নোটিস ধরানো হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ২৮৯৯টি মামলায় ৬৭৮৯ জন মুচলেকা জমা দিয়েছেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ১০৭ ও ১০৯ ধারায় চিহ্নিতকারীদের আদালতে এসেছে মুচলেকা দিয়ে জানাতে হয়, আগামী এক বছর তাঁরা কোনও রকম গোলমালের সঙ্গে জড়িত থাকবেন না। আর ১১০ ধারায় অভিযুক্তদের জমির দলিল জমা রাখতে হয়। কারও জমি না থাকলে পুলিশের কাছে রিপোর্ট তলব করেন বিচারক। সেই রিপোর্ট দেখেই নির্দেশ দেন বিচারক।
বিরোধীদের অভিযোগ, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কালনা ও মেমারির একাংশ ছাড়া সর্বত্র আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। শাসকদলের ‘বাধা’য় মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি তাঁরা। মনোনয়ন আটকাতে জেলাশাসকের দফতরেও হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ওই সব অভিযোগ মানেননি। পুলিশের সক্রিয়তা নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ, নিরীহ কর্মীদের বিরুদ্ধে ১০৭ নোটিস ধরানো হচ্ছে, অথচ পঞ্চায়েত ভোটে গোলমালে জড়িতদের বিরুদ্ধে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্তের দাবি, “আমাদের দলের কর্মীদের বিরুদ্ধেও পুলিশ ১০৭ ধারার নোটিস পাঠিয়েছে। আমরা গণতন্ত্র ও আইন মেনে চলি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy