ভোটের আগে তাঁরা মাঠে নেমেছিলেন একে অপরের বিরোধিতায়। কিন্তু ফল বেরোনোর আগে বসেছেন একই উদ্দেশ্য নিয়ে। আসানসোলের কন্যাপুর ডিএভি পাবলিক স্কুলে ভোট গণনা কেন্দ্র চত্বরে ইভিএম পাহারায় নেমেছেন সব দলের কর্মীরাই। গণনা শুরু না হওয়া পর্যন্ত স্ট্রং রুমে কড়া নজর রেখেছেন তৃণমূল, সিপিএম থেকে বিজেপি— সব দলের নেতা-কর্মীরাই।
আগে আসানসোলে গণনা কেন্দ্র ছিল এসবি গড়াই রোডের সেন্ট ভিনসেন্ট স্কুল। এ বছর তা পাল্টে গণনা কেন্দ্র হয়েছে ডিএভি পাবলিক স্কুলে। ভোট গ্রহণের পরেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের নেতা-কর্মীদের স্ট্রং রুম পাহারায় নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তা পালন করা হয়েছে বলে জানান তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির সভাপতি ভি শিবদাসন। বুধবার সকাল থেকে তিনি নিজেও স্ট্রং রুমের একশো মিটার দূরে তাঁবু খাটিয়ে পাহারায় বসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘স্ট্রং রুমের দরজায় দু’জন পাহারায় বসেছেন। আমরা কয়েকজন পালা করে বাইরে অপেক্ষা করছি।’’ শিবদাসন দাবি করেন, ‘‘বিজেপিকে বিশ্বাস নেই। জেতার জন্য ওরা যা কিছু করতে পারে। বিশ্বাস নেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও। তাই নেত্রীর নির্দেশ মেনে দলের নেতা-কর্মীরা স্ট্রং রুমে নজর রেখেছেন।’’
স্ট্রং রুমে নজরদারিতে দলের নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকার পরামর্শ আগেই দিয়েছেন সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বও। সেই পরামর্শ ভাল ভাবেই মেনে চলেছেন তাঁরা, জানান আসানসোলের সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁরা ডিএভি স্কুল চত্বরের বাইরে তাঁবু খাটিয়ে বসেননি। তবে স্ট্রং রুমের দরজায় পাহারা বসিয়েছেন। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই কাজে আমরা কোনও গাফিলতি করছি না। ২৪ ঘণ্টাই দরজার সামনে কর্মীরা পাহারায় থাকছেন।’’
সপ্তাহ তিনেক ধরে স্ট্রং রুমের পাহারা দিচ্ছেন বিজেপি কর্মীরাও। দলীয় প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট তথা রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস রায়ের অভিযোগ, ‘‘শিল্পাঞ্চলের নানা বুথে যে ভাবে ভোট লুট করা হয়েছে তার পরে রাজ্যের শাসকদলের উপরে আমাদের কোনও ভরসা নেই। ওরা যে কোনও সময়ে ইভিএম-ও লুট করতে পারে। তাই আমরা সতর্ক রয়েছি।’’ তাপসবাবু জানান, নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনে দু’জন করে দলীয় কর্মী স্ট্রং রুমের দরজায় পাহারা দিচ্ছেন। গণনা কেন্দ্রের একশো মিটার দূরে দলের বাকি কর্মী-সমর্থকেরা জমায়েত হয়ে রয়েছেন।
স্ট্রং রুম পাহারা নিয়ে অবশ্য বিশেষ চিন্তিত নন কংগ্রেস প্রার্থী বিশ্বরূপ মণ্ডল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শাসক ও দুই বিরোধী দল যে ভাবে স্ট্রং রুম আগলে রেখেছে, তাতে ইভিএম লুট হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’’ আজ, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ প্রার্থী বা তাঁদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে স্ট্রং রুমের দরজা খুলে সব ইভিএম বার করে আনা হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ এলাকা ছাড়বেন না, জানিয়েছেন নানা দলের কর্মীরা। সকাল ৮টা থেকে গণনা শুরু হওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy