টক্কর: ধাত্রীগ্রামে যোগী আদিত্যনাথের সভার প্রস্তুতি।
রাত পোহালেই জেলায় সভা দুই দলের তিন তারকার। রবিবার তাই সাজো-সাজো রব শোনা গেল পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ-প্রশাসনে। মোট পাঁচটি সভার মধ্যে বর্ধমান শহরে রয়েছে দু’টি। সভাস্থলে নিরাপত্তার বন্দোবস্তের পাশাপাশি শহরে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
আজ, সোমবার জেলায় তিনটি সভা করবেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম সভাটি পূর্বস্থলীর জামালপুরে। দ্বিতীয়টি বর্ধমান উত্তর বিধানসভা এলাকায় কামনারার কাছে বিদ্যাসাগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের মাঠে ও শেষটি রায়নার সেহেরবাজারের সি কে ইনস্টিটিউট মাঠে। এ দিন বিকেলে বর্ধমান শহরে বাঁকার ধারে উৎসব ময়দানে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ সভা করবেন। দুপুরে কালনার ধাত্রীগ্রাম ফুটবল মাঠে বিজেপির সভায় আসবেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকালে তৃণমূল নেত্রীর তিনটি সভাস্থলে হেলিকপ্টার ঘুরে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টারা তিন জায়গা পরিদর্শনও করেছেন। কামনারার কাছে মাঠে সকাল থেকে সভার প্রস্তুতি নজরদারি করেন ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল, জেলা পরিষদ সদস্য গার্গী নাহা। রায়নার সভাস্থলে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুই, জেলা পরিষদ সদস্য অপার্থিব ইসলামেরা।
পূর্বস্থলীর জামালপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার আগে হেলিকপ্টারে মহড়া।ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল ও উদিত সিংহ
বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুনীল মণ্ডলের নির্বাচনী এজেন্ট উত্তম সেনগুপ্ত বলেন, “জেলায় নেত্রীর তিনটি সভারই প্রস্তুতি শেষলগ্নে। বিকেলে ঝড়-বৃষ্টি হওয়ায় সাময়িক সমস্যা হয়েছে। রাতের মধ্যেই মঞ্চ ও এলাকা সাজার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে।’’ তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, কামরানার সভার জন্য ব্লক দফতরের সামনে ও পালিতপুরের রাস্তায় গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রায়নায় দু’টি হাট ও বন্ধ চালকলে গাড়ি রাখার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ। তৃণমূল সূত্রের খবর, পূর্বস্থলীর সভায় কাটোয়া বিধানসভা ও কালনা মহকুমার কর্মী-সমর্থকেরা যাবেন। কামনারায় বর্ধমান উত্তর ও দক্ষিণ, ভাতার ও গলসির একাংশের কর্মী-সমর্থকেরা ভিড় জমাবেন। রায়নার সভায় থাকবেন খণ্ডঘোষ, রায়না, মেমারি, জামালপুরের লোকজন।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রায়নায় আইজি পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে দু’জন এসপি পদমর্যাদার আধিকারিক থাকবেন। তাঁদের নেতৃত্বে ছ’জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ১১ জন ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার-সহ ৩৫০ জন পুলিশকর্মী থাকবেন। এ ছাড়া বর্ধমান-বাঁকুড়া, বর্ধমান-আরামবাগ রাস্তায় প্রচুর সিভিক ভলান্টিয়ার রাখা হবে। রবিবার পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় দফায়-দফায় আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কামনারা ও পূর্বস্থলীর সভায় ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসারেরা থাকবেন। তাঁদের নেতৃত্বে সাত জন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ১৬ জন ডিএসপি-সহ ৪০০ জন পুলিশকর্মী থাকবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অমিত শাহ দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে একটি মাঠে হেলিকপ্টারে করে নামবেন। সেখান থেকে গাড়িতে সভাস্থলে পৌঁছনোর কথা। তাঁর যাতায়াতের সময়ে সংশ্লিষ্ট এলাকায় যান চলাচল বন্ধ রাখার কথা ভাবছে পুলিশ। এই সভার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপারদের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের নেতৃত্বে ২০০ জন পুলিশকর্মী থাকবেন।
এই পাঁচটি সভায় যাওয়ার জন্য তৃণমূল এবং বিজেপি-র তরফে বেশ কিছু বাস ভাড়া নেওয়া হতে পারে। তার জেরে বাসের অভাবে যাত্রীদের হয়রানি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে আজ। বর্ধমান শহর ও তার উপকণ্ঠে তিন ‘হেভিওয়েট’ নেতানেত্রীর সভার জেরে বর্ধমান শহর ‘স্তব্ধ’ হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। জেলা পুলিশের দাবি, সে কথা মাথায় রেখে শহর জুড়ে ট্র্যাফিক পুলিশের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বর্ধমান শহরে তৃণমূল নেত্রী পদযাত্রা করতে পারেন বলেও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
এক দিনে এতগুলি বড় সভার সুষ্ঠু আয়োজন করতে ব্যস্ত পুলিশ-প্রশাসন। বিভিন্ন দলের কর্মী-সমর্থকেরা এখন নেতানেত্রীদের ভোট-তর্জার অপেক্ষায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy