Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বই বাঁধানোর কাজ করত শামিম, দাবি পরিবারের

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন শামিম। কিছু দিন বাইরে কাজ সেরে ফিরতেন গ্রামে। এ বার অবশ্য খবর আসে, পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছেন তিনি। পরিবারের লোকজন দাবি করেছেন, শামিম ভাল ছেলে ছিলেন। বই বাঁধাইয়ের কাজ করতেন। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি ও মগরাহাট শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:২৫
Share: Save:

গুলিতে নিহত দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটের মাহিতালাব গ্রামের যুবক শামিম খানের দেহের ময়না-তদন্ত হল সোমবার। রাত পৌনে ৮টা নাগাদ দেহ পৌঁছয় গ্রামে। আগে থেকেই বহু মানুষ জড়ো হন গ্রামে। গন্ডগোলের আশঙ্কায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন শামিম। কিছু দিন বাইরে কাজ সেরে ফিরতেন গ্রামে। এ বার অবশ্য খবর আসে, পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছেন তিনি। পরিবারের লোকজন দাবি করেছেন, শামিম ভাল ছেলে ছিলেন। বই বাঁধাইয়ের কাজ করতেন।

ডাকাতি করে পালাচ্ছে খবর পেয়ে শনিবার গভীর রাতে একটি পিক-আপ ভ্যানকে ধাওয়া করেছিল মেমারি থানার পুলিশ। অভিযোগ, ওই ভ্যান থেকে পুলিশের গাড়ির দিকে বোমা-গুলি ছোড়া হয়। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ। হুগলির সিমলাগড়ে রেলগেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভ্যানটি আটকে পড়লে দু’জনকে ধরে ফেলে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ শামিমকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে রবিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।

সোমবার ওই পিক-আপ ভ্যানটি পরীক্ষা করে দেখে সিআইডি-র একটি দল। গাড়িতে থাকা চারটি বোমা মেমারির একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে নিষ্ক্রিয় করে তারা। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শামিমের মৃত্যুর ঘটনার পরে বিচারবিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। বর্ধমান আদালতের চতুর্থ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রঞ্জনী কাশ্যপ রবিবার হাসপাতালে গিয়ে মৃতের সুরতহাল করেন। এক এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটও হাজির ছিলেন। মেমারি থানা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে বলে আদালতে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ধৃত গুডডু মোল্লাকে রবিবার আদালত ৫ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। তাকে জেরা করে আরও তথ্য ও বোমা-অস্ত্রের সন্ধান মিলবে বলে পুলিশের ধারণা।

পুলিশ আদালতে জানায়, শনিবার গভীর রাতে মন্তেশ্বরে দু’টি গ্রামের চারটি বাড়িতে ডাকাতি হয়। সেই দলটি পিক-আপ ভ্যানে করে দ্রুত গতিতে মেমারির দিকে যাচ্ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ তাড়া করে। রসুলপুরে রেলগেট পড়ে যাওয়ায় গাড়ি ঘুরিয়ে পান্ডুয়ার দিকে পালাতে থাকে দুষ্কৃতীরা। তখন তারা পুলিশের দিকে দশ রাউন্ড গুলি ও বেশ কয়েকটি বোমা ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা ৫ রাউন্ড গুলি ছুড়েছে। পান্ডুয়ার সিমলাগড় রেলগেটে ডাকতদের গাড়িটি আটকে গেলে কয়েকজন পালিয়ে যায়। দু’জন আটকে পড়ে।

রবিবার দুপুরে মগরাহাট থানার পুলিশ নিহতের পরিজনদের খবর দেয়। রবিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁরা বর্ধমানে পৌঁছন। এ দিন সকালে মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে মৃতের মামা গিয়াসুদ্দিন খান বলেন, ‘‘সল্টলেক, নিউটাউন, মহিষবাথান-সহ নানা এলাকায় বই বাঁধাইয়ের কাজ করত শামিম। শনিবার দুপুরে বাড়ি থেকে বেরোয়। রাতে ফেরেনি। এ রকম আগে কখনও করেনি বলে চিন্তা হচ্ছিল। রবিবার দুপুরে পুলিশ দুঃসংবাদ দেয়।’’ শামিমের দাদা মুন্না খান বলেন, ‘‘ভাই এখানে কেন এসেছিল জানি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Magrahat Clash Police Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE