—প্রতীকী চিত্র
ঘরে উনুন জ্বেলে ঘুমোতে গিয়ে ফের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল খনি অঞ্চলে। অণ্ডালের উখড়ায় মৃত্যু হল এক খনিকর্মীর। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন তাঁর স্ত্রী। সপ্তাহখানেক আগেই সালানপুরের দেন্দুয়ায় একই রকম ঘটনায় মৃত্যু হয় এক বালকের। বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে বলে দাবি নানা পক্ষের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইসিএলের শীতলপুর কোলিয়ারির কর্মী সোনা লোহার (৪৮) পরিবার নিয়ে থাকতেন উখড়া সারদাপল্লি এলাকায়। তাঁর ছেলে রাজ লোহার জানান, বুধবার রাতে বাবা ও মা মিঠুদেবী একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। তাঁরা দুই ভাই পাশের ঘরে ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বাবা-মাকে ঘর থেকে বেরোতে না দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। ঘরের দরজাটি ধাক্কা দিতেই খুলে যায়। রাজের কথায়, ‘‘দেখি, ঘরে একটি উনুন রাখা আছে। পুরো ঘর ধোঁয়ায় ভরে আছে। বাবা-মা অচেতন।’’
প্রতিবেশীদের সাহায্যে দু’জনকে উদ্ধার করে খান্দরা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সোনাবাবুকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মিঠুদেবীকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাজ বলেন, ‘‘আমরা মাকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছি।’’
কয়েক দিন আগেই সালানপুরের দেন্দুয়ায় রাতে বন্ধ ঘরে উনুন জ্বেলে ঘুমিয়েছিলেন এক পরিবারের চার জন। সকালে তাঁদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে এক বালককে মৃত ঘোষণা করা হয়। বাকিরা চিকিৎসায় সুস্থ হন। উখড়া পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্য শরণ সাইগল জানান, বছরখানেক আগে পাণ্ডবেশ্বরে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে দরজা-জানলা বন্ধ করে উনুন জ্বেলে ঘুমোতে গিয়ে এক দম্পতির মৃত্যু হয়। তার পরে ফের এমন ঘটনা ঘটল। এ নিয়ে পঞ্চায়েতের তরফে সচেতনতা প্রচারের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
আসানসোল জেলা হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার শ্যামল স্যান্যাল জানান, যে কোনও বদ্ধ জায়গায় আগুন জ্বলার পরে তা থেকে নির্গত ধোঁয়া বেরনোর জায়গা না পেলে কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস জমা হয়ে যায়। সেই জায়গায় কোনও মানুষ কিছুক্ষণ থাকলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ওই বিষাক্ত গ্যাস শরীরে ঢুকে বিষক্রিয়াও তৈরি করে। তার জেরে অচেতন হয়ে পড়া, এমনকি, মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। দেহ ময়না-তদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy