Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Migrant Workers

রেশন না মেলার নালিশ, অবরোধে পরিযায়ী শ্রমিকেরা

পূর্ব বর্ধমান জেলায় ২৫ হাজার পরিযায়ী শ্রমিককে ‘অস্থায়ী কুপন’ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল।

বামশোরে অবরোধ। রবিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

বামশোরে অবরোধ। রবিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাতার শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২০ ০১:১৩
Share: Save:

রেশন থেকে সব রকম খাদ্যসামগ্রী না মেলার অভিযোগে রাস্তা অবরোধ করলেন বেশ কিছু পরিযায়ী শ্রমিক। ভাতারের বামশোরে বাদশাহি রোডে রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। কিছুক্ষণ পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে। যুগ্ম বিডিও (ভাতার) ও খাদ্য পরিদর্শক (ভাতার) ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের অভিযোগ শুনে আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। বিডিও (ভাতার) শুভ্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমস্ত বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে যে সব পরিযায়ী রেশন-ব্যবস্থা থেকে দূরে রয়েছেন তাঁদের হাতে মে ও জুন মাসের এক সঙ্গে ১০ কেজি চাল আর পরিবার পিছু ২ কেজি করে গোটা ছোলা দেওয়ার কথা বলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পূর্ব বর্ধমান জেলায় ২৫ হাজার পরিযায়ী শ্রমিককে ‘অস্থায়ী কুপন’ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে এই কুপন দেওয়া নিয়ে গলসির জয়কৃষ্ণপুরে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে। ভাতারের বামশোর গ্রামে কুপন না পাওয়া এবং রেশন থেকে খাদ্যসামগ্রী মিলছে না বলে অভিযোগ উঠল।

ভাতার ব্লক প্রশাসনের দাবি, পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ নিয়ে সমস্যা থাকায় কোনও কোনও পরিযায়ী শ্রমিক ছোলা পাননি। তবে সরবরাহ না থাকলেও খাদ্য দফতরের নির্দেশে সব পরিযায়ী শ্রমিককেই চাল দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অভিযোগ, এখনও অনেকে রেশন কার্ড না থাকা সত্ত্বেও ‘অস্থায়ী ফুড কুপন’ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর জেলা সম্পাদক পরেশনাথ হাজরার দাবি, ‘‘ব্লক দফতর থেকে কুপন দেওয়া হয়েছে। সেই কুপনে যে খাদ্যসামগ্রীর উল্লেখ রয়েছে, রেশন দোকান থেকে সেই সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। এখানে রেশন ডিলারের কোনও ভূমিকা নেই।’’

বামশোর গ্রামের বাসিন্দা, অবরোধে শামিল হওয়া শেখ হামিদ, সাদ্দাম হোসেনদের দাবি, তাঁদের গ্রামের প্রায় ৯০০ জন পরিযায়ী শ্রমিক ফিরে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকের রেশন কার্ড নেই। তাঁরা এখনও ‘অস্থায়ী ফুড কুপন’ পাননি। আবার অনেকে কুপন পেলেও প্রকল্প থেকে বরাদ্দ ছোলা পাচ্ছেন না। রেশন ডিলারকে বারবার বলার পরেও শুধুমাত্র চাল দিচ্ছেন। অবরোধকারীদের দাবি, ‘‘এক জায়গায় নানা রকম দর হচ্ছে। এ নিয়ে গ্রামে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। দাবি আদায়ের জন্যও রাস্তা অবরোধ করা হয়েছিল।’’ খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, ভাতার ব্লকে এখনও পর্যন্ত ন’হাজার পরিযায়ী শ্রমিকের তালিকা ব্লক অফিস থেকে পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে সাত হাজার শ্রমিককে ‘অস্থায়ী ফুড কুপনের’ মাধ্যমে চাল ও ছোলা দেওয়া গিয়েছে। বাকি দু’হাজার শ্রমিকের হাতে শুধু চাল দেওয়া হয়েছে।

বামশোর গ্রামের রেশন ডিলার কলিমুর রহমানের আবার দাবি, ‘‘আমার কাছে যত ছোলা মজুত ছিল, তা নিয়ম মেনে সব শ্রমিককে দেওয়া হয়েছে।’’ খাদ্য আধিকারিক (ভাতার) দয়ানন্দ গোস্বামীর বক্তব্য, ‘‘যে সব পরিযায়ী শ্রমিক এখনও রেশন থেকে বঞ্চিত রয়েছেন, তাঁরা তালিকা করে আমাদের কাছে পাঠালে উপর মহলে জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE