প্রতীকী ছবি।
গা-ঝাড়া দিয়ে উঠেছে একশো দিনের প্রকল্প— এমনটাই দাবি পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের কর্তাদের। যেখানে সাধারণত সারা বছরে খরচ হয় সাতশো কোটি টাকা। সেখানে তৃতীয় ও চতুর্থ দফার ‘লকডাউন’ পর্বেই পূর্ব বর্ধমানে ওই প্রকল্পে খরচ হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশির ভাগ খরচ হয়েছে মজুরি খাতে। ফলে, এক দিকে ,বহু দরিদ্র পরিবার টাকা পেয়েছেন, আবার পরিযায়ী শ্রমিকেরাও জেলায় ফিরে কাজ পেতে শুরু করেছেন, দাবি তাঁদের।
জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘একশো দিনের প্রকল্পে আরও জোর দেওয়া হচ্ছে। ছোট ছোট লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে এগনো হচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিক তো বটেই, যাঁদের কাজ প্রয়োজন, তাঁদেরও কাজ দেওয়ার সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’’ জেলা প্রশাসনের দাবি, বেশি করে কাজ দেওয়ায় চারটে উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে— ১) মজুরির মাধ্যমে স্থানীয় গরিব মানুষের হাতে টাকা যাচ্ছে। ২) এলাকা পুনর্গঠন হচ্ছে। ৩) একশো দিনের প্রকল্পে গতি আসছে। ৪) পরিযায়ী শ্রমিকেরা উপকৃত হচ্ছেন।
এপ্রিল মাসের শেষ থেকেই ১০০ দিনের প্রকল্পে গতি আনতে প্রশাসনিক উদ্যোগ শুরু হয়। মে ও জুন—দু’মাসে ৪১ লক্ষ কর্মদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। প্রথম দিকে গড়ে ২০ হাজার থেকে ৪০ হাজার কর্মদিবস তৈরি হচ্ছিল। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে গড় কর্মদিবস হয় ৭০ হাজার। বৃহস্পতিবার জেলায় কর্মদিবস হয়েছে প্রায় এক লক্ষ ৪০ হাজার। প্রশাসনের দাবি, এক লক্ষ ৩১ হাজার পরিবার কাজ পেয়েছে। সাড়ে তিন হাজারের মতো প্রকল্প চালু রয়েছে। তাতে গত দেড় মাসে খরচ হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা।
ওই প্রকল্পের জেলার নোডাল অফিসার প্রদীপ্ত বিশ্বাস বলেন, “প্রথম দু’মাসে লক্ষ্যমাত্রার কাছে পৌঁছে গিয়েছি। সারা বছর যাতে আরও বেশি করে কাজ করা যায়, তার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।’’ জেলা প্রশাসনের দাবি, বৃক্ষরোপণ, বাংলা আবাস যোজনা, সেচখাল, পুকুর ঘিরে আনাজ, হাঁস-মুরগি পালনের খামারের মতো পরিকল্পনায় জোর দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, আউশগ্রামে মৎস্য দফতরের হাতে থাকা যমুনাদিঘির ৩৯টি পুকুরের মধ্যে ১৩টি পুকুরের সংস্কারের কাজে হাত লাগানো হয়েছে।
সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’ পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। একশো দিনের প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়। মন্ত্রীর নির্দেশ ছিল, পরিযায়ী শ্রমিকদের একশো দিনের কাজ দিতে হবে। প্রাণিসম্পদ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজ নিয়ে বৈঠক হয়েছে। আমাদের আবার প্রথম হতে হবে। সেইমতো পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy