বিলি: পরীক্ষামূলক ভাবে তৈরি আইসক্রিম। নিজস্ব চিত্র
গরমের আগেই আইসক্রিম উৎপাদন শুরু করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তা আর হয়নি। তবে মাসখানেকের মধ্যে দুর্গাপুর স্টেট ডেয়ারি থেকে বাণিজ্যিক ভাবে আইসক্রিম উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে। দিনে পাঁচ হাজার লিটার দুধের আইসক্রিম তৈরি হবে। শনিবার রাজ্যের প্রাণিসম্পদ দফতরের প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ডেয়ারি পরিদর্শনে এসে বৈঠক করলেন সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের সঙ্গে।
দুর্গাপুরের সগড়ভাঙায় ডেয়ারি চালু হয় ১৯৭২ সালে। দুর্গাপুর ছাড়াও রানিগঞ্জ, আসানসোল অঞ্চলে এই ডেয়ারি থেকে দুধ সরবরাহ হতো। দিনে ৫০ হাজার লিটার দুধ প্রক্রিয়াকরণ এবং ১২০০ লিটার দুধের আইসক্রিম ও ঘি উৎপাদন হত। কর্মীদের অভিযোগ, পরিচালনাগত ত্রুটির কারণে ডেয়ারিটি রুগ্ণ হতে শুরু করে। ২০১১ সালের মে মাসে যান্ত্রিক গোলযোগে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এর পরে থেকে হরিণঘাটা থেকে দুধ এনে তা সরবরাহ করতে থাকে ডেয়ারিটি। ২০১২-র এপ্রিলে নানা কারণে দুধ সরবরাহ বন্ধের সরকারি নির্দেশ জারি হয়। ২০১৪-র শেষ দিকে নতুন ভাবে ডেয়ারিটি চালুতে উদ্যোগী হন মন্ত্রী স্বপনবাবু। বরাদ্দ হয় প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা। প্রয়োজনীয় যন্ত্র বসানো ও পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু হয়।
এ বছর ফেব্রুয়ারিতে এক দিন হঠাৎ ডেয়ারি পরিদর্শনে এসে ঢিমেতালে কাজের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্বপনবাবু। তিনি জানিয়ে দেন, গরম পড়ার আগেই ডেয়ারি থেকে আইসক্রিম উৎপাদনের পরিকল্পনা হয়েছে। ১৫ মার্চ লক্ষ্যমাত্রা রেখে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে যান মন্ত্রী। সেই সময়সীমা অবশ্য পেরিয়ে গিয়েছে। শনিবার ফের ডেয়ারি পরিদর্শনে আসেন মন্ত্রী। কলকাতার মাদার ডেয়ারি আইসক্রিম উৎপাদন করবে।
সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, খাঁটি দুধের আইসক্রিম তৈরি হবে। কোনও রাসায়নিক ব্যবহার করা হবে না। কাপ ও স্টিক, দু’রকম আইসক্রিমই বানানো হবে। আইসক্রিমের বিপুল বাজার ধরতে সব ধরনের উদ্যোগ হবে। ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়ে গিয়েছে দুর্গাপুরের ডেয়ারিতে। তবে গবেষণাগারটি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তাই উৎপাদনের পরে আইসক্রিম পাঠানো হচ্ছে ডানকুনির গবেষণাগারে।
মন্ত্রী স্বপনবাবু বলেন, ‘‘বাম আমলে ডেয়ারিটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফের তা চালুর মুখে।’’ মাদার ডেয়ারির মার্কেটিং ম্যানেজার সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় জানান, সব ঠিক থাকলে মাসখানেকের মধ্যেই বাজারে আসবে আইসক্রিম। রাজ্য জুড়ে বিপণনের পরিকল্পনা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ৫ হাজার লিটার দুধের আইসক্রিম হবে। পরে চাহিদা অনুযায়ী বাড়ানোর কথা ভাবা যাবে। ডেয়ারির কর্মচারী সংগঠনের সম্পাদক বিশ্বনাথ কর্মকার বলেন, ‘‘আবার গমগম করবে চত্বর, তাই কর্মীরা খুশি।’’
এ দিন মন্ত্রীর পরিদর্শনের সময়ে অবশ্য তৃণমূলের স্থানীয় দু’টি গোষ্ঠীর লোকজন গেটের কাছে চাকরির দাবি জানাতে হাজির হন। ফেব্রুয়ারিতে এই দু’পক্ষের মধ্যে এই দাবি নিয়ে গোলমালও বেধেছিল। এ দিন কোনও অশান্তি হয়নি। তবে মন্ত্রী দলের নেতাদের জানান, এ ভাবে চাকরির দাবি তোলা বরদাস্ত করা হবে না। এলাকার তৃণমূল নেতা সুনীল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মন্ত্রী যা পরামর্শ দিয়েছেন তা মেনে চলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy