Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নকল আইডি দিয়ে টিকিট-প্রতারণা, ধৃত

বেনামে আইআরসিটিসি-তে একাধিক অ্যাকাউন্ট বানিয়ে সেখান থেকে কাটা হচ্ছে সংরক্ষিত টিকিট। পরে সেগুলি চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে রেলযাত্রীদের কাছে। —এ ভাবে অবৈধ কারবার চালানোর অভিযোগে সম্প্রতি একটি চক্রের মূল পান্ডাকে গ্রেফতার করল দক্ষিণ-পূর্ব রেলের নিরাপত্তা বাহিনী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৬ ০৭:১৬
Share: Save:

বেনামে আইআরসিটিসি-তে একাধিক অ্যাকাউন্ট বানিয়ে সেখান থেকে কাটা হচ্ছে সংরক্ষিত টিকিট। পরে সেগুলি চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে রেলযাত্রীদের কাছে। —এ ভাবে অবৈধ কারবার চালানোর অভিযোগে সম্প্রতি একটি চক্রের মূল পান্ডাকে গ্রেফতার করল দক্ষিণ-পূর্ব রেলের নিরাপত্তা বাহিনী। কুলটির চিনাকুড়ি বাজার এলাকার একটি সাইবার ক্যাফে থেকে রঞ্জন সিংহ নামে ওই পান্ডাকে গ্রেফতার করা হয়।

রেলের আদ্রা ডিভিশন সূত্রে খবর, বেশ কয়েক দিন ধরেই বিভিন্ন এলাকায় টিকিটের অবৈধ কারবারের খবর মিলছিল। রেল কর্তারা জানান, সম্প্রতি গোপন সূত্রে খবর মেলে কুলটির চিনাকুড়ি এলাকার একটি সাইবার ক্যাফেতে রমরমিয়ে চলছে টিকিটের অবৈধ কারবার। বিষয়টি আরপিএফ-কে জানানো হয়। আরপিএফ জানিয়েছে, এরপরেই চক্রের মূল পান্ডার হদিস পেতে ঘুটি সাজানো হয়। আরপিএফ আধিকারিক মহম্মদ সালাউদ্দিন জানান, বিজেন্দ্র কুমার নামে এক অফিসার ও কয়েকজন আরপিএফ কর্মীকে খদ্দের সাজিয়ে ওই সাইবার ক্যাফেতে পাঠানো হয়। আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যাফেতে গিয়ে দেখা যায়, রঞ্জন সিংহ নামে এক যুবক সব কাজকর্ম সামলাচ্ছেন। আরপিএফের ওই অফিসার রঞ্জনের কাছে সংরক্ষিত টিকিট কাটাতে চান। রঞ্জন রাজি হয়। তবে শর্ত দেয়, টিকিট নিতে হবে ভুয়ো নামে ও প্রতিটি টিকিটে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৩০০ টাকা করে বেশি দিতে হবে। টিকিট হাতে পেয়েই রঞ্জনকে গ্রেফতার করে আরপিএফ। সালাউদ্দিনের দাবি, ‘‘৯টি অ্যাকাউন্ট থেকে ওই যুবক কাজ চালাত। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে প্রায় ১৯ হাজার টাকার সংরক্ষিত টিকিট, বেশ কয়েকটি মোবাইল, কম্পিউটার ও প্রিন্টার।

কী ভাবে হয় এই জালিয়াতি? ডিভিশনের এক কর্তা জানান, প্রথমেই ওই অবৈধ চক্রগুলি ভুয়ো নাম ব্যবহার করে আইআরসিটিসি-তে বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্ট বানিয়ে ফেলে। পরে সেগুলি ব্যবহার করে এক সঙ্গে বহু সংরক্ষিত টিকিট কেটে নেওয়া হয়। পরে সেগুলি চড়া দামে বিক্রি করা হয় যাত্রীদের কাছে। তবে এ ক্ষেত্রে যাঁরা বেনামে টিকিট কিনতে হয় যাত্রীদের। ডিভিশনের সিনিয়র ডিসিএম ভাস্কর কুমার জানান, এর ফলে অনেক সময়েই দেখা যায় সংরক্ষিত টিকিটের ক্ষেত্রে ‘ছদ্ম-অভাব’ তৈরি হয়। ডিভিশনের এক কর্তা জানান, এই চক্রগুলির থেকে টিকিট কিনে ট্রেনে চড়লে অনেক সময়েই বিপদে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।

আদ্রা ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি এ রকম বেশ কয়েকটি টিকিট-বিক্রি চক্র চলছে বলে অভিযোগ। তবে ভাস্করবাবু বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এ রকম কোনও অভিযোগ বা খবর এলেই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হয়। রেল নিরাপত্তা বাহিনীকে দিয়ে চক্রের পান্ডাকে পাকড়াও করার ব্যবস্থাও করানো হয়।’’

ডিভিশনের কর্তাদের দাবি, এলাকার বেশ কয়েকটি জায়গায় এমন বেআইনি কারবার চলছে বলে নির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে। গোপন অভিযান চালিয়ে বেআইনি কারবারের সঙ্গে জড়িত ওই সব চক্রের পান্ডাদের দ্রুত পাকড়াও করা হবে রেল কর্তাদের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

miscreants IRCTC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE