Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মোবাইল হাতসাফাইয়ে ছোটদের নামাচ্ছে পাণ্ডারা

চোখের পলকে পকেট থেকে হাতসাফাই মোবাইল ফোন। আসানসোল শিল্পাঞ্চল জুড়ে মোবাইল চোরের এমন উৎপাতে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৪২
Share: Save:

ভিড় বাস হোক বা বাজার, অথবা লোকজনে ভরা রাস্তা— একটু অন্যমনস্ক হলেই বিপদ। চোখের পলকে পকেট থেকে হাতসাফাই মোবাইল ফোন। আসানসোল শিল্পাঞ্চল জুড়ে মোবাইল চোরের এমন উৎপাতে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা।

সম্প্রতি মোবাইল চুরির বেশ কিছু অভিযোগ পেয়ে কুলটি ও হিরাপুর থানার পুলিশ নানা এলাকায় অভিযান চালায়। প্রায় ৭০টি দামি চোরাই মোবাইল উদ্ধারও হয়। গ্রেফতার করা হয় পাঁচ জনকে। পুলিশ জানায়, তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, পকেট থেকে মোবাইল চুরির কাজটি দুষ্কৃতীরা মূলত করায় কিছু নাবালককে দিয়ে। এর নেপথ্যে থাকে কিছু পাকা মাথা। সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে ওই নাবালকদের কাজে নামানো হয়। পরে চোরাই ফোনটি বেশি দামে বিক্রি করে তারা।

পুলিশ জানায়, এই ফাঁদে পড়ে চুরি করতে গিয়ে ওই নাবালকেরা মাঝে-মধ্যে ধরা পড়ে যায়। প্রকাশ্যে নিগ্রহের ঘটনা ঘটে। অনেক সময়ে নেহাত সন্দেহের বশেও কমবয়সীদের উপরে চড়াও হয় জনতা। রবিবার আসানসোলের মহিশীলায় মোবাইল চুরির অভিযোগে বছর বারোর একটি ছেলেকে দীর্ঘক্ষণ রেলিংয়ে বেঁধে রাখা হয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বাড়ি পাঠায়। দিন কয়েক আগে আসানসোলের চেলিডাঙায় ভিড় বাসে মোবাইল চুরির চেষ্টার অভিযোগে দুই নাবালককে ধরে চড়-থাপ্পড় মারেন যাত্রীদের একাংশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৬ জুলাই কুলটির চিনাকুড়ি নোনিয়া বস্তি অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে বলরাম নোনিয়া ও রাজমনি নোনিয়া নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা মোবাইল চুরি চক্রের পাণ্ডা বলে সন্দেহ। উদ্ধার হয় প্রায় তিরিশটি ফোন। ২৭ সেপ্টেম্বর হিরাপুরের ৮ নম্বর বস্তি অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় প্রায় চল্লিশটি ফোন।

মোবাইল চুরি চক্রের এই রমরমা নিয়ে কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘পুলিশের ধারাবাহিক নজরদারি রয়েছে। তাতেই দু’টি চক্র ধরা পড়েছে।’’ পুলিশের দাবি, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, কুলটির চিনাকুড়ির ছাইগাদা বস্তি, রাধানগর নোনিয়া বস্তি, বারাবনির দোমোহানি রেল কলোনি লাগোয়া গুলগুলিয়া বস্তি, বার্নপুরের ৮ নম্বর বস্তি এলাকায় কয়েকটি মোবাইল চুরি চক্র রয়েছে। সেগুলির পাণ্ডারা বস্তি এলাকার কিছু নাবালককে হাত-সাফাইয়ের কায়দা শিখিয়ে কাজে নামায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চিনাকুড়ি রাধানগর ও ৮ নম্বর বস্তি এলাকায় চোরাই মোবাইলের বাজার রয়েছে। কিন্তু দোকান থেকে এই মোবাইল বিক্রি হয় না। স্থানীয় কিছু যুবকের পকেটে মোবাইল থাকে। গ্রাহককে ‘নিরাপদ জায়গায়’ নিয়ে যায় তারা। দরদামের পরে মোবাইল গ্রাহকের হাতে তুলে দেয়। কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তা জানান, এক পুলিশকর্মীকে ওই সব এলাকায় পাঠিয়ে এই চক্রের বিষয়ে তথ্য জোগাড় করা হয়। পরে সুযোগ বুঝে অভিযান চালানো হয়। আর কোথায় এই ধরনের চক্র চলছে, তার সন্ধান চলছে বলে জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

pick-pocketing Asansol আসানসোল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE