Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভরা শ্রাবণেও পাতে নেই ইলিশ

কাটোয়ার বড়বাজারে মাছের আড়তের পাশেই খুচরো মাছ নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। তাঁদের দাবি, অন্য বছর এই সময় নানা মাপের ইলিশে বাজার ভরে যায়, কিন্তু এ বছরের ছবিটা কার্যত উল্টো।

খোকা ইলিশ বিকোচ্ছে কাটোয়া বাজারে। নিজস্ব চিত্র

খোকা ইলিশ বিকোচ্ছে কাটোয়া বাজারে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৯ ২২:২৪
Share: Save:

বাক্সে বরফের উপর রাখা গোটাকতক ইলিশ। চকচকে আঁশের টানে দু’এক জন ক্রেতা এগিয়ে এলেও দাম শুনেই ছিটকে যাচ্ছেন। কেউ আবার ইলিশের আকার দেখে উল্টো পথ নিচ্ছেন। ক্রেতাদের আক্ষেপ, ভরা শ্রাবণেও বড় ইলিশের দেখা নেই কাটোয়া বাজারে। অগত্যা চড়া দামের খোকা ইলিশেই রসনা তৃপ্ত করছেন তাঁরা।

কাটোয়ার বড়বাজারে মাছের আড়তের পাশেই খুচরো মাছ নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। তাঁদের দাবি, অন্য বছর এই সময় নানা মাপের ইলিশে বাজার ভরে যায়, কিন্তু এ বছরের ছবিটা কার্যত উল্টো। স্থানীয় আড়তদার মুক্ত ঘোষ বলেন, ‘‘গত বছর অগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ১৫ কুইন্টাল ইলিশ বিক্রি করেছিলাম। এই বছরের বিক্রি মোটে দু’কুইন্টাল।’’ তিনিই জানান, গত বছর এই বাজারে এক কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছিল দু’হাজার টাকা কেজিতে। এ বছর সেখানে ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রামের বেশি ওজনের ইলিশ মিলছেই না। মাছ বিক্রেতাদের দাবি, জুলাই থেকে নভেম্বরের শেষ অবধি ইলিশের মরসুম চলে। এ বছরের শুরু থেকেই মাছের আমদানিতে টান। হিমঘরে কিছু মাছ থাকলেও সেগুলোর দাম চড়া, তাঁদের দাবি।

বাজারে গিয়ে দেখা যায়, তিন-চারশো গ্রামের ইলিশ ছ’শো টাকা, পাঁচশো থেকে সাতশো গ্রামের ইলিশ সাতশো টাকা ও দু’শো গ্রামের ইলিশ পাঁচশো টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর অন্তত শ’দুয়েক টাকা করে কম দাম ছিল, দাবি ক্রেতাদের। শমীক নাগ, মধুমিতা দাসদের দাবি, ‘‘এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশের স্বাদই আলাদা। তবে এ বছর একটাও তেমন মাছ পেলাম না।’’

কাটোয়ায় মূলত ডায়মন্ডহারবার, দিঘা থেকে ইলিশ আসে। মাছ ব্যবসায়ী মুস্তাক দফাদার, সৈয়দ সালেহদের দাবি, বড় মাপের ইলিশের আমদানি না থাকায় বাধ্য হয়ে চাহিদা মেটাতে খোকা ইলিশ আনা হচ্ছে। তাতেও লাভ নেই। আর এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘বছর চারেক আগেও গঙ্গার ইলিশ পাওয়া যেত। মিলত কোলাঘাটের ইলিশ। এ বছর শুধু ইলিশই নয়, বাচা, ইটে, বড় আড় মাছের জোগানও খুব কম।’’

মাছ ব্যবসায়ীদের মতে, বর্ষা দেরিতে আসায় এমন হচ্ছে। মৎস্য দফতর সূত্রেও জানা যায়, যে ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে ইলিশ সমুদ্র ছেড়ে নদীর মিষ্টি জলে ডিম পাড়তে ঢোকে সেই বৃষ্টি এখনও হয়নি। কাটোয়া ১ ব্লকের মৎস্য আধিকারিক দেবীপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ বছর সমুদ্রের জলের তাপমাত্রায় হেরফের হওয়ায় ইলিশ নদীতে আসতে দেরি হয়েছে। সঙ্গে বৃষ্টি কম হওয়ায় নদীর জলও বাড়েনি।’’ খোকা ইলিশের বিক্রি নিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘খোকা ইলিশ ধরা, বিক্রি বন্ধে প্রচার চলছে। তবে মানুষকেও সচেতন হতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Monsoon Hilsa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE