—প্রতীকী চিত্র
ডেঙ্গি প্রতিরোধে গাপ্পি মাছই এখন মূল অস্ত্র জেলা প্রশাসনের। কর্তারা তো বটেই পতঙ্গবিদদেরও দাবি, ডেঙ্গির জীবাণু বহনকারী মশা এডিস ইজিপ্টাইয়ের প্রধান শত্রু ও মানুষের বন্ধু হয়ে উঠেছে গাপ্পি মাছ। এর পাশাপাশি মশা নিধনে দেশীয় মাছ তেচোখার ভূমিকাও নজর টানছে পতঙ্গবিদদের।
গত বছর পূর্ব বর্ধমানে ডেঙ্গির প্রকোপে আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রায় ৩২৮ জন। গলসির এক বালিকা-সহ তিন জন মারাও যান। এ বছর এখনও পর্যন্ত ১৮০ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ পেয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। প্রশাসন ডেঙ্গি প্রতিরোধে আশা কর্মী, কন্যাশ্রীদের মাঠে নামিয়েছে। সম্প্রতি রাজ্যের যুব ও ক্রীড়া কল্যাণ দফতর থেকে অনুদান পাওয়া জেলার ক্লাবগুলিকেও ডেঙ্গি প্রতিরোধ করার জন্যে মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। কী কী করতে হবে সে নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু সচেতনতা বাড়ালে মশার লার্ভা নিধন করা সম্ভব নয়। তাই এ বছর জেলার পুকুরে, নর্দমায় নমুনা হিসেবে ৭ লক্ষ গাপ্পি মাছ ছেড়েছিল প্রশাসন। তাতে কাজ হয়েছে কি না জানার জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পতঙ্গবিদ তথা মশা গবেষক গৌতম চন্দ্রকে দিয়ে সমীক্ষাও করানো হয়। সেই রিপোর্টে গৌতমবাবু লিখেছেন, গাপ্পি মাছের দৌলতে শহরের নর্দমায় মশার লার্ভা অনেকটাই কমে গিয়েছে। তবে বাঁকা নদীতে গাপ্পি মাছ ছাড়া হলেও তার হদিশ মেলেনি। কিন্তু বাঁকা বা শহরের একাধিক নর্দমায় আবার তেচোখা মাছের হদিশ মিলেছে। এই মাছও মশার লার্ভা নষ্ট করায় ওস্তাদ বলে পরিচিত। পতঙ্গবিদরা জানান, তেচোখা মাছ দেশীয়। মাঠেঘাটে এই মাছ দেখা যায়। আর গাপ্পি মাছ হল দক্ষিণ আমেরিকার প্রজাতি। প্রায় একশো বছরের ইতিহাস রয়েছে এই মাছের। ১৯১০ সালে এই মাছ ভারতে প্রবেশ করে। মশার শত্রু হিসবে বিশ্বের দরবারে পরিচিত গাপ্পি মাছ।
বৃহস্পতিবার গৌতমবাবু বলেন, “মর্শার লার্ভা নষ্ট করার জন্য জেলার বিভিন্ন নর্দমায় গাপ্পি মাছ ছাড়া দরকার। আবার বাঁকার মতো নদীতে তেচোখা মাছ ছাড়লে বেশি উপকার মিলবে। দেশীয় মাছের ব্যবহারে পরিবেশও রক্ষা পাবে।’’
প্রশাসন ঠিক করেছে, মশা নিধন করার জন্য প্রতিটি ব্লকে ও শহরে একটি করে পরিত্যক্ত পুকুর (যেখানে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে মাছ চাষ হয় না) খুঁজে বের করে গাপ্পি মাছের উৎপাদন বাড়ানো হবে। তারপর বিজ্ঞান সম্মতভাবে সেই মাছ সারা বছর ধরে শহর ও গ্রামের নর্দমায় ছেড়ে মশার বংশ ধ্বংসের চেষ্টা করবে প্রশাসন। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “এ ব্যাপারে বিশদ রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy