চলছে তদন্ত। নিজস্ব চিত্র
দিন দশেক আগেই মহিলার রক্তাক্ত দেহ মিলেছিল বাড়িতে। মাথায় আঘাত, খুনের হিংস্রতা দেখে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল পড়শিদের মধ্যে। তার সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই মেলে ‘খুনি’র হদিস। পুলিশ জানতে পারে, মন্তেশ্বরের শ্যামনবগ্রামের এই মহিলাও ‘চেন কিলার’ কামরুজ্জামান সরকারের শিকার। শুক্রবার ওই বাড়িতে তদন্তে গিয়ে ঘটনার আরও কিছু তথ্য প্রমান জোগাড় করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল।
এ দিন ভবানী ভবন থেকে চার জনের ওই দল যে ঘরে মৃতার দেহ মিলেছিল ‘সিল’ খুলে ঢুকে সেখান থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন। বিকেল ৪টের পরে ওই দলের তিন জন এবং ওসি মন্তেশ্বর কালনা থানায় আসেন। সেখানে দরজা বন্ধ করে জেরা করা হয় ধৃতকে। এক সময়ের কালনা থানার ওসি অমিত মিত্র-সহ হুগলি জেলা পুলিশের একটি দলও কালনায় এসে কামরুজ্জামানকে জেরা করেন। অমিতবাবু কায়লায় থাকাকালীনই ২০১৩ সালে ধাত্রীগ্রামে গলায় চেন পেঁচিয়ে একই কায়দায় খুন হন এক মহিলা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে মন্তেশ্বর ও কালনার দুটি খুনের ঘটনা ও একটি খুনের চেষ্টার ঘটনার চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা পড়ে গিয়েছে আদালতে। কিন্তু কামরুজ্জামানকে জেরা করে আরও তথ্য মেলায় পুলিশ পুনরায় মামলা শুরু করার প্রস্ততি নিচ্ছে। ইতিমধ্যেই পুলিশ সুপার থেকে বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকেরা জেরা করেছেন চল্লিশ ছুঁই ছুইঁ কামরুজ্জামানকে। পুলিশএর দাবি, ধৃত জানিয়েছে, ২০১৩ থেকে ২০১৮ এই সময়টা কেরলে গিয়ে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করেছে সে। কখনও ভাঙাচোরা জিনিসপত্র বেচা, গুল বিক্রি করেছে। বছর দেড়েক আগে পূর্বস্থলীর চরগোয়ালপাড়ায় মুদিখানার দোকাও খুলেছিল সে। কিন্তু কোনওটাতেই টিঁকতে না পারায় ‘চুরি’ই তার আয়ের পথ ছিল বলে পুলিশের অনুমান।
পুলিশের দাবি, চুরি নিশ্চিত করতে নিম্ন মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত বাড়ি, যেখানে নিরাপত্তার কড়াকড়ি কম বেছে নিত সে। ‘টার্গেট’ করত শুধুমাত্র মহিলাদের। বেছে নিত সেই সময়, যখন মহিলা একা। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘বাড়িতে পুরুষ থাকলে প্রতিরোধের সম্ভাবনা থাকত। সে জন্যই মহিলাদের বেছে নিত ধৃত। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে আঘাত করে মহিলা কাবু করে দিত এই কারণেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy