Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
পুলিশের বিরুদ্ধে টাকা তোলার অভিযোগ

৩ ঘণ্টা অবরুদ্ধ জাতীয় সড়ক

জাতীয় সড়কে নজরদারি চালানোর নাম করে পুলিশ নানা ভাবে অনিয়ম করছে! এই অভিযোগে শনিবার প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের সুইডি মো়ড়ে ছ’টি লেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন ট্রাক চালকেরা। অবস্থা সামাল দিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ, পুলিশের গাড়ি ভাঙারও অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ।

ঘটনাস্থল: ২ নম্বর জাতীয় সড়কে গোলমাল। শনিবার। (ইনসেটে) পুলিশের এই গাড়িতেই ভাঙচুর বলে এলাকাবাসী জানান। নিজস্ব চিত্র

ঘটনাস্থল: ২ নম্বর জাতীয় সড়কে গোলমাল। শনিবার। (ইনসেটে) পুলিশের এই গাড়িতেই ভাঙচুর বলে এলাকাবাসী জানান। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:১০
Share: Save:

জাতীয় সড়কে নজরদারি চালানোর নাম করে পুলিশ নানা ভাবে অনিয়ম করছে! এই অভিযোগে শনিবার প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের সুইডি মো়ড়ে ছ’টি লেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন ট্রাক চালকেরা। অবস্থা সামাল দিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ, পুলিশের গাড়ি ভাঙারও অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার ভোড় সাড়ে ৫টা নাগাদ আচমকা শতাধিক ট্রাক চালক ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এই ঘটনায় জাতীয় সড়কে গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। আটকে পড়ে একাধিক যাত্রিবাহী বাস, প্রচুর ছোট-বড় গাড়ি। গোটা এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে চরম সমস্যার সম্মুখীন হন শহরবাসী।

ট্রাক চালকেরা অভিযোগ করেন, নজরদারি চালানোর নাম করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁদের জাতীয় সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখছে পুলিশ। আরও অভিযোগ, নিয়ম না মেনে টাকা নেওয়া হচ্ছে। বিক্ষোভে যোগ দেওয়া ট্রাক চালক, হরিয়ানার বাসিন্দা পরমজিৎ গোয়রা বলেন, ‘‘গাড়িতে পরিবহণ সংস্থার মূল্যবান সামগ্রী রয়েছে। সময়মতো পৌঁছতে না পারলে খেসারত গুনতে হবে।’’ বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ চলার পরে আসানসোল ট্র্যাফিক গার্ডের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশকে দেখেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের একটি নজরদারি গাড়ির কাচও ভাঙা হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ একাধিক পুলিশ কর্মীকে হেনস্থা করা হয়। অবস্থার অবনতি দেখে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় বলে জানা গিয়েছে।

এই পরিস্থিতি চলতে থাকায় কয়েক ঘণ্টা পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (ট্র্যাফিক) এম পুষ্পা। তিনি ট্রাক চালকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। শেষমেশ সাড়ে ৮টা নাগাদ অবরোধ ওঠে।

তবে ট্রাক চালকদের অভিযোগ প্রসঙ্গে ডিসিপি (ট্র্যাফিক) বলেন, ‘‘এই অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয়। জাতীয় সড়কে ট্রাক চালকদের সঙ্গে পুলিশ কোনও রকম দুর্ব্যবহার করে না। উল্টে সহযোগিতা করে।’’ তবে পুলিশকে হেনস্থা বা পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুরের কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন এম পুষ্পা। এ দিনের ঘটনায় কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এর আগেও অবশ্য পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। ঘাঘরবুড়ি এলাকায় এর আগে ভিন-রাজ্যের ট্রাক আটকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই সময়েও পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান ট্রাক চালকদের একাংশ। মাস ছয়েক আগে আসানসোলের কাল্লা মোড়েও একই অভিযোগ ওঠে। সেই সময়েও পুলিশের একটি ট্র্যাফিক পোস্ট ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ।

কলকাতা থেকে বারাণসী, গিরিডি-সহ ভিন রাজ্যগামী বেশ কিছু বাস চলাচল করে এই এলাকা দিয়ে। এই বিক্ষোভের জেরে বাসগুলিও আটকে পড়ে। রাজেশ চৌহান, গৌরব কুমার-সহ বেশ কয়েক জন যাত্রীর কথায়, ‘‘রাতভর বাসে বসে আছি। এতক্ষণে বাড়ি পৌঁছে যাওয়ার কথা। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে আটকে রয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

National Highway Road Blockade
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE