Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

নতুন মুখের প্রার্থীই ভরসা সিপিএমের

একসময়ের গড় ফিরে পেতে নতুন মুখেদের সামনে রেখেই ভোটে লড়ছে সিপিএম। মেমারি পুরসভার ১৬টি আসনে যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের ১১ জনই নতুন, অর্থাৎ এ বারই প্রথম ভোটে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা। তাঁদের কেউ সদ্য কলেজ পাশ করা যুবতী, কয়েকজন শিক্ষক, কেউ পাড়ার মধ্যেই সমাজসেবা করেন আবার এমনও অনেকে রয়েছেন যাঁরা সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্তই ছিলেন না।

মেমারিতে বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার সিপিএম প্রার্থীর। —নিজস্ব চিত্র।

মেমারিতে বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার সিপিএম প্রার্থীর। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৫ ০২:০৬
Share: Save:

একসময়ের গড় ফিরে পেতে নতুন মুখেদের সামনে রেখেই ভোটে লড়ছে সিপিএম।

মেমারি পুরসভার ১৬টি আসনে যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের ১১ জনই নতুন, অর্থাৎ এ বারই প্রথম ভোটে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা। তাঁদের কেউ সদ্য কলেজ পাশ করা যুবতী, কয়েকজন শিক্ষক, কেউ পাড়ার মধ্যেই সমাজসেবা করেন আবার এমনও অনেকে রয়েছেন যাঁরা সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্তই ছিলেন না।

কেন এত নতুন মুখ? মেমারির প্রাক্তন উপপুরপ্রধান তথা বাম নেতা অভিজিৎ কোঙারের দাবি, ‘‘দলের অনেকেই বয়সের কারণে সরে গিয়েছেন। অনেকে দাঁড়াতে চাননি সময় দিতে পারবেন না বলে। কয়েকজন পেশাগত কারণে অসুবিধায় পড়ে দাঁড়াননি। তাই আমাদের দলের প্রার্থীদের বেশির ভাগই নতুন। তাঁদের গড় বয়েস ২৮ থেকে ৩০, এঁদের বেশির ভাগই দলের গণসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।” বলাবাহুল্য, এই তরুণ দলের সেনাপতি হয়ে হাল ধরেছেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী অভিজিৎবাবুই।

এমনিতেই জেলা সম্মেলনের খসড়া রিপোর্টে, রাজ্য সম্মেলনে নতুন মুখ তুলে আনার উপর জোর দিতে বলছিলেন নেতারা। জেলার বিশাখাপত্তনমে দলের ২১তম পার্টি কংগ্রেসে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পরে সীতারাম ইয়েচুরিও নতুনদেরদলে টানার উপরেই জোর দেন। এ পরিস্থিতিতে মেমারির নতুন মুখেরা আশা জাগাবে বলেই ভরসা দলের কর্মী-সমর্থকদের। যদিও শুরুতে যেভাবে ১৬-০য় জেতার কথা বলছিলেন নেতারা, পরে সে সুর অনেকটাই বদলে যায়। ভোট আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে হুমকি, মারধর, সন্ত্রাসের অভিযোগ। যদিও দলের নেতাদের দাবি, শূন্য হাতে ভোটের ময়দান ছাড়বেন না তাঁরা।

অভিজিৎ কোঙার এর আগেও তিন বার পুরভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সনত্‌ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনও প্রার্থী তিন বারের বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন না। সেই নিয়ম মেনে অভিজিৎবাবু গত বার ভোটে দাঁড়াননি। কিন্তু দলেরই নির্দেশে তিনি এ বার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী।” কর্মীদের দাবি, এই ১৩ নম্বরটি অভিজিতবাবুর পয়া আসন। এখান থেকেই জিতে তিনি উপপুরপ্রধান হয়েছিলেন।

তবে পয়া-অপয়া নয়, অভিজিৎবাবুর জোর বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচারেই। তিনি বলেন, “আমরা অন্য দলের মতো কোনও বড় নেতাকে এনে সভা করছি না। তার বদলে গোটা মেমারি শহরের প্রতিটি বাড়িতে বারবার যাচ্ছি। সব মিলিয়ে এই বাড়িগুলিতে চার বার ঘোরা হয়েছে আমাদের।” তবে সন্ত্রাসের সুর রয়েছে তাঁর মুখেও। অভিজিৎবাবুর অভিযোগ, “আমরা নির্বিঘ্নে প্রচার করতে পারছি না। যে বাড়িতেই যাচ্ছি, পরে সেখানে গিয়ে তৃণমূলের লোকেরা সেই পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে। আমাদের পতাকা, ব্যানার, দেওয়াল লিখন নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোনও লাভ হচ্ছে না। আমি নিজেই বার দুই আক্রান্ত হয়েছি।” ভোটের দিনও সন্ত্রাসের আশঙ্কাও করছেন তাঁরা। অভিজিৎবাবুর অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে না শুনে মেমারির তৃণমূলের সদস্যেরা দারুন উত্‌ফুল্ল। রাজ্য পুলিশের কথা না তোলাই ভাল। ওরা তো মেমারিতে তৃণমূলের সদস্য হিসেবেই কাজ করছে।”

তবে এর মধ্যেও নতুন মুখই ভরসা সিপিএমের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE