শিল্পোদ্যোগীর বাড়িতে তল্লাশি। ঢুকতে গিয়ে বাধা পান আইনজীবী-সহ দু’জন। মঙ্গলবার দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র
অতি বাম জঙ্গি সংগঠনগুলিকে অর্থসাহায্যের অভিযোগে মঙ্গলবার দেশের চারটি শহরের পনেরোটি জায়গায় তল্লাশি চালাল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। রাঁচী, হাজারিবাগ, জামসেদপুর ও পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে তল্লাশি চালানো হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকসার বামুনাড়া শিল্পতালুকের একটি বেসরকারি কারখানা ও কারখানা মালিকের বিধাননগরের বা়ড়িতে এ দিন ভোরে একই সময়ে তল্লাশি চলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার ভোরে সিআরপি-কে সঙ্গে নিয়ে এনআইএ-র তদন্তকারীরা কারখানায় ঢোকেন। কাঁকসা থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হলেও ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। দিনভর কারখানার ভিতর থেকে তদন্তকারীদের কাউকে বার হতে দেখা যায়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোরে প্রায় একই সময়ে কারখানার অন্যতম মালিক এক শিল্পোদ্যোগীর বিধাননগরের কবি মুকুন্দরাম সরণির বাড়িতেও ঢোকেন এনআইএ-র তদন্তকারীরা। বাইরে পাহারায় থাকে সিআরপি।
তার পরে থেকে ওই বাড়ির ভিতরে আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বাড়ির পরিচারকদের বারান্দায় একসঙ্গে বসে থাকতে দেখা যায়। দুপুরে তাঁদেরই এক জন বাইরে বেরিয়ে সবার জন্য খাবার নিয়ে ভিতরে ঢুকে যান। দুপুর ১টা নাগাদ দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেন ওই শিল্পোদ্যোগীর আইনজীবী সুজিত রায়। কিন্তু তাঁকেও ঢুকতে দেয়নি সিআরপি। সুজিতবাবুর বক্তব্য, ‘‘বাড়িতে শিল্পোদ্যোগীর স্ত্রী একা রয়েছেন। এনআইএ-র তল্লাশি চলছে শুনে এসেছি।’’ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তিনি ফিরে যান। বিকাল ৪টে নাগাদ একজন শিক্ষিকা আসেন শিল্পোদ্যগীর মেয়েকে টিউশন পড়ানোর জন্য। তাঁকেও ঢুকতে দেয়নি সিআরপি।
কিন্তু কেন তল্লাশি? মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রেস-বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এনআইএ জানায়, কয়েকটি সংস্থার নাম তাদের হাতে এসেছে। অভিযোগ, ওই সংস্থাগুলি অতি বাম সংগঠন হিসেবে পরিচিত দু’টি সংগঠনের তহবিলে অর্থ সাহায্য করেছে। ওই সংস্থাগুলি ঝাড়খণ্ডের আম্রপালি ও মগধ কয়লাখনি চত্বরে কয়লা কারবারের সঙ্গে যুক্ত।
এনআইএ-র দাবি, এ দিন তল্লাশিতে বেশ কিছু আর্থিক লেনদেনের জরুরি নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তা থেকে ওই দু’টি সংগঠনের সঙ্গে এই সংস্থাগুলির আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে বলে এনআইএ জানিয়েছে। এই লেনদেনের পরিমাণও জানানো হয়েছে এনআইএ-র প্রেস-বিজ্ঞপ্তিতে। সেখানে জানানো হয়েছে, অর্থ সাহায্যের পরিমাণ, ভারতীয় মুদ্রায় ৬৮ লক্ষ টাকা, ১০ হাজার সিঙ্গাপুর ডলার ও ১৩০০ আমেরিকান ডলার। সেই সঙ্গে বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৮৬ হাজার টাকার বাতিল নোট। এনআইএ-র তল্লাশি চলছে শুনে পথচলতি মানুষ ওই শিল্পোদ্যোগীর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন। দেশবিরোধী কোনও কাজের অভিযোগ রয়েছে কি না, তা নিয়েও শুরু হয় জল্পনা। তবে যে কারখানায় এ দিন অভিযান চলে, সেই কারখানাটির বিরুদ্ধে অতীতেও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই কারখানায় স্টেইনলেস স্টিল, কার্বন স্টিল ও অ্যালয় স্টিলের পাইপ, কয়েল, প্লেট, বার প্রভৃতি তৈরি হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy