Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
ধরা পড়েনি দুষ্কৃতীরা

মন্দিরে চুরি রুখতে গ্রামে রাত-পাহারা

শনিবার রাতে আউশগ্রামের জঙ্গলমহল এলাকা বলে পরিচিত অমরপুর ও আদুরিয়া, পাশাপাশি এই দু’টি গ্রামের ছ’টি মন্দিরে চুরি হয়। অমরপুরের চারটি ও আদুরিয়ার দু’টি মন্দিরেই তালা ভেঙে গয়না ও বাসনপত্র নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ০১:১২
Share: Save:

দু’দিন কেটে যাওয়ার পরেও আউশগ্রাম ও পূর্বস্থলীর মন্দির চুরিতে ধরা পড়েনি কেউ। চুরির ব্যাপারে কোনও সূত্রও মেলেনি বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে আউশগ্রামের পাশাপাশি দু’টি গ্রাম শীতের রাতে মন্দির, বাড়ি ও গোলার ফসল চুরি আটকাতে রাতপাহারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে জন্য গ্রাম থেকে চাঁদা তুলে টর্চ-লাঠি কেনার ব্যবস্থা হচ্ছে। এ ছাড়াও ‘গ্রাম রক্ষী’দের হাতে তির-ধনুক থাকবে। আলোচনা করে এই সিদ্ধান্তের পরে পুরো বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতি ও পুলিশকে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।

জেলা পুলিশের এক কর্তার অবশ্য দাবি, ‘‘মন্দিরে চুরির তদন্ত শুরু হয়েছে। কারা করেছে, সে ব্যাপারে ধারণাও মিলেছে। আরও নিশ্চিত হতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরাই ওই দু’টি গ্রামের বাসিন্দাদের সিভিক ভলান্টিয়ারদের পাশাপাশি গ্রাম-পাহারা দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলাম। তারই ভিত্তিতেই আলোচনা করে গ্রাম পাহারার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওঁরা।’’ গ্রামবাসীদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আউশগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৈয়দ হায়দার আলি। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের পরামর্শ মেনেই ওই বাহিনী কাজ করবে। তাতে গ্রাম-সুরক্ষা আরও ভাল হবে।’’

শনিবার রাতে আউশগ্রামের জঙ্গলমহল এলাকা বলে পরিচিত অমরপুর ও আদুরিয়া, পাশাপাশি এই দু’টি গ্রামের ছ’টি মন্দিরে চুরি হয়। অমরপুরের চারটি ও আদুরিয়ার দু’টি মন্দিরেই তালা ভেঙে গয়না ও বাসনপত্র নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। রবিবার সকালে স্থানীয় ছোড়া ফাঁড়ির পুলিশ তদন্তে যায়। গ্রামবাসীদের ক্ষোভ, চুরির কোনও কিনারা এখনও করতে পারেনি পুলিশ। ওই দু’টি গ্রামে ১৪টি মন্দির রয়েছে। তা ছাড়া খেতের ফসল গোলায় তোলা শুরু হয়েছে। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, শীতের রাতে ফের চোরের দল হানা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে মন্দির ছাড়া খামার বাড়ি নিয়েও আশঙ্কা থাকছে। তাই শুধু পুলিশের ভরসায় না থেকেই গ্রাম পাহারার জন্য নিজেরা উদ্যোগী হয়েছেন বলে তাঁরা জানান।

বাসিন্দারা ঠিক করেছেন, তিনটি দল গড়ে পাহারা দেওয়া হবে। প্রতি দলে দশ জন করে থাকবেন। রাখা হবে আদিবাসীদেরও। পাহারার দল গঠনে অন্যতম উদ্যোক্তা সাগর বাদ্যকর বলেন, ‘‘ধান কাটার মরসুম বলে দশ জন করে দল তৈরি করা হচ্ছে। ধান কাটা শেষ হলে দল আরও ভারী হবে। ছেলেদের হাতে টর্চ-লাঠি ও তির-ধনুক থাকবে।’’

পূর্বস্থলীর চুপি কালীতলার মন্দিরেও গয়না ও প্রণামী বাক্সের টাকা লুঠ হয় শনিবার রাতে। মন্দিরটি যে পরিবারের, তার কর্তা প্রশান্ত দাসগুপ্ত জানান, পূর্বস্থলী থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ অবশ্য সোমবার রাত পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE