ঠাঁই-নাই: অপেক্ষা চলে এই গাছের নীচেই। নিজস্ব চিত্র
দিনের বেলায় বিভিন্ন রুটের কুড়ি-বাইশটি বাস চলাচল করে। পরদিন সাতসকালে বেরোতে হবে বলে রাতে থেকে যায় দশ, বারোটি বাস। প্রতিদিন হাজারখানেক যাত্রীও ওঠানামা করেন। কিন্তু কোনও যাত্রী প্রতীক্ষালয় না থাকায় অসুবিধেয় পড়তে হয় তাঁদের। বাস ধরার জন্য কিংবা এক বাস থেকে নেমে অন্য বাস ধরতে অপেক্ষা করতে ভরসা গাছতলা কিংবা রাস্তার ধারের কোনও দোকান ঘরের ছাউনি। আর বাসকর্মীদের ভরসা একচিলতে ইউনিয়ন অফিস ঘর।
প্রায় কুড়ি বছর আগে আউশগ্রামের ভেদিয়া বাসস্ট্যান্ড চালু হলেও কার্যত এমন জোড়াতালি দিয়েই চলে আসছে এত দিন। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে বাসকর্মীরা এখানে বহু দিন ধরেই যাত্রী প্রতীক্ষালয় করার দাবি জানিয়ে আসছেন। প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।
বর্ধমান জেলার একেবারে সীমানা ঘেঁসে এনএইচ ২বি জাতীয় সড়কের ধারেই ভেদিয়া বাসস্ট্যান্ড। এর কিছু দূরেই অজয় নদের উপর অবন সেতু। যা পেরোলেই বীরভূম। ভেদিয়া হয়ে বর্ধমান, দুর্গাপুর, গুসকরা, কাটোয়া, বোলপুর, কৃষ্ণনগর-সহ বেশ কয়েক’টি রুটের বাস চলে। ভেদিয়া স্টেশনে নেমেও অনেক যাত্রী বাসস্ট্যান্ডে এসে বাস ধরে বিভিন্ন জায়গায় যান। হাওড়ার বাসিন্দা গৌরগোপাল দাস বলেন, “পাণ্ডুক গ্রাম যাব বলে ট্রেনে করে ভেদিয়ায় এসেছি। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর বাস। এত গরমে কোনও জায়গা পাচ্ছি না যেখানে দাঁড়াবো।”
ছোড়া হাটতলার বাসিন্দা কল্পনা মণ্ডলকে কাজের জন্য প্রায়ই ভেদিয়া আসতে হয়। তিনি জানান, প্রবল গরমেও গাছতলা ভরসা। বৃষ্টি এলে এ দোকান-সে দোকানে ছুটোছুটি করতে হয়। মহিলাদের আলাদা কোনো শৌচালয়ও নেই। ভেদিয়ার বাসস্ট্যান্ডের কর্মী ধরম হাজরা জানান, সবচেয়ে সমস্যা হয় রাতের দিকে এবং বৃষ্টির সময়। নানা অসুবিধের কথা জানিয়েছেন মোহিদ শেখ, স্বপনদাস বৈরাগ্য, আবুল হোসেন খাঁয়ের মতো বাসকর্মীরাও। বহু বার প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি, অভিযোগ তাঁদের। স্থানীয় সূত্রেই জানা গেল, বাসস্ট্যান্ডের কিছু দূরে পঞ্চায়েত থেকে কয়েক বছর আগে একটা ছোটো প্রতীক্ষালয় করা হলেও সেটি কেউ ব্যবহার করেন না। তা ছাড়া স্বজলধারার জলের সংযোগও দেওয়া হয়েছিল এখানে। কিন্তু রাস্তা চওড়া হতে তা বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে ভরসা একটা মাত্র টিউবওয়েল। সেটা আবার অধিকাংশ সময় খারাপ থাকে বলে অভিযোগ বাসকর্মী থেকে নিত্যযাত্রীদের।
আউশগ্রাম ২ এর বিডিও দীপ্তিময় দাস বলেন, “বিষয়টি জানা ছিল না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করব।” ভেদিয়া পঞ্চায়েতের সভাপতি অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস, চলতি বছরেই কাজ শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy