এই বাড়িতে দেহ মেলে। নিজস্ব চিত্র
গলায় ফাঁসের দাগ। মুখ থেকে রক্ত বেরোচ্ছে। বিছানায় এই অবস্থায় পড়ে থাকা এক যুবকের দেহ মিলল বর্ধমানের মহাজনটুলিতে। শহরের যৌনপল্লি এলাকার তিনতলা একটি বাড়ি থেকে শনিবার সকালে সেন্টু চৌধুরী (২৮) নামে ওই যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, গলায় শাড়ির ফাঁসে খুন করা হয়েছে তাঁকে। এক যৌনকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
বিসি রোড থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাতায়াতের জেবি মিত্র রোডে মহাজনটুলি এলাকায় রয়েছে যৌনপল্লি। বেশ কয়েক বছর আগে সেখানে পরপর দু’জন যৌনকর্মী খুন হন। ঠিক তার পাশের বাড়িতে শনিবার সকালে তিনতলার ঘরের দরজা ভেঙে মঙ্গলকোটের পালিশগ্রামের বাসিন্দা সেন্টুর দেহ মেলে। এলাকার কয়েকজন মহিলা জানান, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ সামনের বাড়ির এক মহিলা তাঁদের খবর দেন, তিন তলায় একটি মেয়ের ঘরে এক জন গলায় দড়ি দিয়েছে। তড়িঘড়ি গিয়ে দরজা খুলেই দেখা যায়, বিছানায় আধশোয়া অবস্থায় এক জন পড়ে রয়েছেন। মুখ থেকে রক্ত বেরোচ্ছে।
পাশের বাড়ির এক মহিলার দাবি, যাঁর ঘরে দেহটি মিলেছে, সেই তরুণী মেমারি থেকে তাঁকে ফোন করে জানান, রাতে সেন্টু গলায় দড়ি দিতে গিয়েছিলেন। এখন তিনি কী করছেন, তা দেখতে অনুরোধ করেন। ওই মহিলা বলেন, ‘‘এ কথা শুনে আমি ভয়ে কাঁপতে থাকি। চিৎকার করে লোকজনকে খবর দিই।’’ ওই বাড়ির তিনতলার বাসিন্দা অন্য মহিলারা জানান, সেন্টু মাস তিনেক ধরে নিয়মিত ওই তরুণীর ঘরে আসতেন। মাঝে-মধ্যে অন্য যুবকেরাও আসতেন। শুক্রবার রাতে সেন্টু ও সঙ্গীতার মধ্যে গোলমাল হচ্ছে, তা তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন।
এ দিন ওই ঘরে গিয়ে দেখা যায়, চার দিকে মদের বোতল ভেঙে পড়ে রয়েছে। বাড়িটির মালিক মিনু বিশ্বাস দাবি করেন, ‘‘ভোরেই ওই মেয়েটি বর্ধমান ছেড়ে পালিয়ে যায়। ঘরে দেহ দেখার পরে তাকে আমরা ফোন করি। ও জানায়, রাত ৩টে নাগাদ ঘুম ভেঙে দেখে, সেন্টু গলায় দড়ি দিয়ে ফ্যানে ঝুলছে। বাঁটি দিয়ে কাপড় কাটতেই দেহ নীচে পড়ে যায়। তখন ও দরজায় তালা মেরে পালিয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে। ওকে বর্ধমানে আসতে বলা হয়েছে।’’
পুলিশ জানায়, ওই তরুণী মহাজনটুলিতে ফিরে আসার পরেই আটক করা হয়েছে। তদন্তকারীরা অবশ্য জানান, ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে গলায় বা ফ্যানে কাপড় জড়িয়ে থাকার কথা। এ ক্ষেত্রে তেমন নমুনা মেলেনি। পুলিশের অনুমান, মাদক জাতীয় কিছু খাওয়ানোর পরে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হয়েছে ওই যুবককে। কী কারণে এই ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy