Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

খাদানের খোঁজ দেবে পঞ্চায়েত

জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘প্রশাসনের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। পঞ্চায়েত প্রধানদেরও বুঝতে হবে তাঁরা এই কাজে যুক্ত।’’

জেলা প্রশাসনের বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র

জেলা প্রশাসনের বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৩
Share: Save:

বেআইনি বালি খাদান বন্ধ করা হোক বা চোলাই কারবার আটকানো, সবেই জনপ্রতিনিধিদের এগিয়ে আসতে বলছে জেলা প্রশাসন। এক দিকে ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে তাঁরা বেআইনি খাদানগুলিকে চিহ্নিত করবেন। পাশাপাশি এলাকায় বেআইনি বালি খাদান চলছে কি না কিংবা চোলাইয়ের কারবার হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কাছে শংসাপত্র দিতে হবে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধানকে।

জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘প্রশাসনের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। পঞ্চায়েত প্রধানদেরও বুঝতে হবে তাঁরা এই কাজে যুক্ত।’’

এলাকায় পোস্ত চাষ নিয়ে ফি বছর প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট পাঠাতে হয় পঞ্চায়েত প্রধানদের। ভুল রিপোর্ট পাঠালে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। জেলা ভাগের আগে বেশ কয়েকজন প্রধানকে অস্বস্তিতেও পড়তে হয়েছিল। এ বারও কী তাহলে ‘দায়িত্ব’ পালন না করলে মুশকিল হবে? জেলাশাসক সরাসরি এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘‘এই সব বেআইনি কারবারে কারা মদত দিচ্ছে তার একটা গোপন তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সেই তালিকায় যাঁদের নাম থাকবে, তাঁদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজন হলে সেই নাম উচ্চ পর্যায়েও জানানো হবে।’’

বুধবার আবগারি দফতরের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের একটি বৈঠকে ঠিক হয়েছে, পূর্ব বর্ধমানকে ‘চোলাইমুক্ত জেলা’ গড়ে তোলা হবে। তারই প্রাথমিক ধাপ হিসেবে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি পঞ্চায়েতের প্রধানকে তাঁদের এলাকায় কোথায় কোথায় চোলাই-কারবার চলে তার তালিকা প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে হবে। পুলিশ ও আবগারি দফতর যৌথ অভিযান চালানোর পরে পঞ্চায়েত সরেজমিন খতিয়ে দেখে ফের রিপোর্ট পাঠাবে। এ দিনই বালি নিয়ে একটি বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ব্লক স্তরের যৌথ কমিটি নদীর ধারগুলি পরিদর্শন করে বেআইনি বালি খাদানগুলি চিহ্নিত করবেন। পাশাপাশি কাদের মদতে ওই খাদান চলছে, তার রিপোর্ট দিতে হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বৈঠকে একাধিক জন দাবিতোলেন, বৈধ ইজারাদাররা নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে গিয়েও বালি তুলে বিক্রি করেন। অনেক সময় ভুয়ো চালানে ওই বালি বিক্রি হয়। এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে বোর্ড টাঙিয়ে মৌজা-দাগ চিহ্নিত করা উচিত। পাশাপাশি খাদানের চারিদিকে খুঁটি পুঁতে দিলে বালি চুরি হচ্ছে কি না ধরা যাবে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘ইজারাদাররা যাতে নির্দিষ্ট এলাকা থেকেই বালি তোলেন, সে ব্যাপারে ব্লক স্তরের যৌথ কমিটিকে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। নিয়ম না মানলে ইজারাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তাঁর দাবি, বেআইনি বালি খাদান বা চোলাইয়ের কারবার বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের কাছে যথেষ্ট লোকবল আছে। পরিকাঠামোর অভাব নেই। শুধুমাত্র বাড়তি দায়িত্ব নিলেই বেআইনি কারবার বন্ধ করা সম্ভব হবে।

জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘বেআইনি বালি কারবার, অতিরিক্ত বালি বোঝাই গাড়ির বিরুদ্ধে আমাদের কড়া অবস্থান থাকবে। অতিরিক্ত বালি নিয়ে গেলে লরির চালক বা মালিককে জরিমানা দিতে হবে। আবার গাড়িতে থাকা অতিরিক্ত বালি নামিয়ে নেওয়া হবে। তবে অন্য গাড়িতে সেই বালি নিয়ে যেতে পারবেন মালিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Burdwan Minig Sand
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE