Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কাগজ কল বন্ধ, বিপাকে শ্রমিকেরা

তিন বার মালিকানা বদলেছে। তবু ৩০ বছর ধরে স্থানীয় শ্রমিকদের ভরসা ছিল কাগজ কলটি। কিন্তু ২০১৩ সালে সেটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে মুশকিলে পড়েছেন পূর্বস্থলীর ওই ১৬৫ শ্রমিক পরিবার।

দীপঙ্কর চক্রবর্তী
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৪
Share: Save:

তিন বার মালিকানা বদলেছে। তবু ৩০ বছর ধরে স্থানীয় শ্রমিকদের ভরসা ছিল কাগজ কলটি। কিন্তু ২০১৩ সালে সেটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে মুশকিলে পড়েছেন পূর্বস্থলীর ওই ১৬৫ শ্রমিক পরিবার।

জানা যায়, ১৯৭৯ সালে রঞ্জিত ভৌমিক নামে এক ব্যক্তি কলকাতা থেকে এসে পূর্বস্থলীর সুলন্টুতে ওই কাগজ কলটি চালু করেন। তখন নাম ছিল গ্লোব পেপার মিল। তিন বছর চলার পরে কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক বছর পরে দীনেশ জালান ‘শ্রেষ্ঠ পেপার মিল’ নাম দিয়ে ওই কারখানা কিনে বছর চারেক চালান। আবারও বন্ধ হয়ে যায় কারখানা। পরে ‘শ্রীকৃষ্ণ পেপার মিল’ নাম দিয়ে ওই কারখানা খোলেন তরুণ দেবনাথ নামে এক ব্যাক্তি। তিনিই শেষ মালিক। তরুণবাবুর দাবি, ২০০৮ সালের ২৯ জানুয়ারি গর্ভমেন্ট ফিনান্সিয়াল কর্পোরেশনের কাছ থেকে কারখানা নেওয়ার সময় বকেয়া বিদ্যুতের বিল ছিল ১৬ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। কয়েক কিস্তিতে তা শোধ করার পরে জেনারেটরে কারখানা চালাতে শুরু করেন তিনি। ২০০৯ সালের নভেম্বরে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ পান। তরুণবাবু বলেন, ‘‘দিনে ১৫-১৬ ঘন্টা বিদ্যুৎ পেতাম। কিন্তু সরবরাহ ভাল ছিল না। ২০১৩ সাল পর্যন্ত তা নিয়েই কারখানা চালিয়েছি।’’

স্থানীয় শ্রমিকদের দাবি, প্রতিদিন ২০ টন কাগজ উৎপাদিত হত। মূলত ক্রাফ্ট কাগজ, বাঁশ কাগজ, পেটির মোটা কাগজ তৈরি হতো। কিন্তু মধ্যপ্রদেশ থেকে কম দামে মাল পাওয়ায় কলকাতার বাজারে ধীরে ধীরে চাহিদা কমে এই কাগজের। প্রথম থেকে ১৬৫ জন শ্রমিক কাজ করলেও তরুণবাবুর সময় ৭৩ জন শ্রমিক কাজ করতেন। বাকিদের রাজ্য সরকারের লেবার কমিশনের আওতায় প্রতি মাসে ৭৫০ টাকা করে দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল বলে জানান কারখানার তৎকালীন শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক কানাই কর। কিন্তু কারখানা বন্ধ হওয়ার পর সবই গিয়েছে। শ্রমিক নেহরু কুরি, গোপাল দাসদের অভিযোগ, জঞ্জাল, আগাছায় ভরে গিয়েছে কারখানা চত্বর। রাতে অসামাজিক কাজকর্মের ঠেক বসে। বহু লোহার সামগ্রী, যন্ত্রপাতি, গাছ চুরিও হয় প্রায়শই। তার মধ্যেও আবার কারখানা খোলার আশায় রয়েছেন তাঁরা।

তরুণবাবুরও দাবি, কারখানা খোলার জন্য মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। স্থানীয় বিধায়ক প্রদীপ সাহারও আশ্বাস, শ্রমিকেরা যাতে পেনশন পান তার জন্য চেষ্টা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Paper Mill Distress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE