Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কর্তৃপক্ষ, ছাত্রদের নিয়ম মানার বার্তা দিলেন শিক্ষামন্ত্রী

বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র

বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৩৪
Share: Save:

বিজ্ঞান কংগ্রেসের উদ্বোধনে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ছাত্রদের আচরণ থেকে নির্দিষ্ট সময়ে ফল বার করতে না পারা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেন তিনি। মঞ্চ থেকে পড়ুয়াদের উদ্দেশে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, “নিমাইবাবুকে (উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহা)) ঘেরাও করে, কম ক্লাস করে নম্বর চাইলে হবে না। তাতে ভাল বিজ্ঞানী কেন, ভাল মানুষও তৈরি হবে না। নিয়ম মেনে চলতেই হবে।’’

বিগত কয়েক বছর ধরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে নির্দিষ্ট সময়ে ফলপ্রকাশ, পরীক্ষা নেওয়া নিয়ে বারবার গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। স্নাতক স্তরে বেশ কিছু পড়ুয়ারও অভিযোগ, ঠিকমতো খাতা দেখা হয় না। সম্প্রতি এই দাবিতে বীরভূম, হুগলি, পূর্ব বর্ধমানের বেশ কিছু কলেজ পড়ুয়া ধর্নায় বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটী ক্যাম্পাসে। ঘেরাও করা হয় উপাচার্যকে। পরিচালন সমিতি (ইসি)-র বৈঠকের পরে ফের খাতা দেখার সিদ্ধান্ত হয়। তখন আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজন পাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়ারাও নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা ও ফল বার করার দাবিতে পরপর দু’বার উপাচার্যকে ঘেরাও করে রাখেন।

পড়ুয়াদের এই আচরণ নিয়ে রাজ্যের দুই মন্ত্রী তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র স্বপন দেবনাথ, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় সমালোচনা করেছিলেন। শিক্ষামন্ত্রীও এ দিন বললেন, ‘‘নিয়মিত ক্লাস করতে হবে। নিয়ম মেনে যাঁরা চলেছেন, তাঁরাই সমাজের বুকে দাঁড়িয়েছেন। আর যারা তালগোল পাকিয়েছে, তারা বেকার হয়ে বসে রয়েছে।’’

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেরও সমালোচনা করতে ছাড়েননি শিক্ষামন্ত্রী। উপাচার্যকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “নিমাইবাবু সময়মতো রেজাল্ট বার করতে হবে। মার্কশিটও ঠিক সময়ে দিতে হবে।’’ ফল বা মার্কশিটের গোলমালে রেজাল্ট প্রস্তুতকারী সংস্থাকে অনেক ক্ষেত্রেই দোষী করা হয়। এ দিন শিক্ষামন্ত্রী সে প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “এজেন্সির দোষ কেউ মেনে নেবে না।’’ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও, স্নাতক স্তরে দ্বিতীয় ও চতুর্থ সেমেস্টারের ফল বার হয়নি। স্নাতকোত্তর স্তরেও পরীক্ষা সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে। আইন বিভাগেও একটি সেমেস্টারেরও ফল এখনও বার হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তার দাবি, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে মার্কশিট নিয়ে যে কেলেঙ্কারি হয়েছিল, তার জের এখনও টানতে হচ্ছে। সেই সময়ে নিয়মিত পরীক্ষা হত না। সবগুলিই এখন একসূত্রে বাঁধার চেষ্টা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেমে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সে জন্য প্রক্রিয়াটা একটু পিছিয়ে গিয়েছে। আশা করছি, দু-’এক বছরের মধ্যে সবটাই নিয়মিত হবে।’’

এ দিন স্বপনবাবু পড়ুয়াদের বলেন, ‘‘বিজ্ঞানের অগ্রগতি নিচুতলায় পৌঁছে দিতে হবে। সেই কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের গ্রামে গ্রামে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।’’ আর এক মন্ত্রী আশিসবাবুর প্রস্তাব, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব খামার রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন কৃষি বিজ্ঞানীদের নিয়ে এসে আলোচনা সভা করা যেতে পারে। জৈব রং উৎপাদনে নজর দিতে পারি।’’

পার্থবাবুর খেদ, “গবেষণা নিয়ে আমাদের কাজ খুবই কম। উৎসাহ ও উদ্দীপনাও নেই। শুধু আলোচনা করলেই হবে না। তার নির্যাস যাতে মানুষের উপকারে পৌঁছয়, সে ব্যবস্থা করতে হবে।’’ উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহা বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীর কথাকে মান্যতা দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Partha Chatterjee University of Burdwan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE