Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Strikre

বন্‌ধ, সভার জোড়া ফলায় ‘দুর্ভোগ’

বন্‌ধের কোনও প্রভাব পড়েনি জেলার শিল্পাঞ্চলে। তবে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে সমস্যায় পড়তে হয়েছে অনেককে।

আসানসোলে বাসের অপেক্ষায় যাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র।

আসানসোলে বাসের অপেক্ষায় যাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:৩৬
Share: Save:

আশঙ্কা ছিল, মঙ্গলবার পথে বেরিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হবে। বাস্তবে তা-ই হয়েছে, বলে অভিযোগ তুললেন পশ্চিম বর্ধমান জেলাবাসীর একাংশ। কারণ, এ দিন রানিগঞ্জে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক জনসভা ছাড়াও, ছিল কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে ভারত বন্‌ধ। নিত্যযাত্রীদের একাংশের দাবি, এ দিন জেলার প্রায় সব রুট থেকেই উধাও হয়ে গিয়েছে যাত্রীবাহী বাস। কম দূরত্বের তো বটেই দূরপাল্লার বাসও চলাচল করেনি। প্রয়োজন মেটাতে অটোয় করে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়েছে তাঁরা। সে জন্য বেশি ভাড়া দিতে হয়েছে বলেও অভিযোগ।

জেলা পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য এসবিএসটিসি-সহ বেসরকারি বড় ও মিনিবাস মিলিয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচশো বাস ওই সভায় যাওয়ার কথা ছিল। প্রত্যেকটি রুট থেকে বাস তোলা হয়েছে এ দিন। আসানসোল বড় বাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য আড়াইশো বাস গিয়েছে। বেশ কিছু দলের সদস্যদের নিয়ে যাওয়ার জন্য বাস ভাড়া করা হয়েছে। এ ছাড়া, এ দিন বন্‌ধ থাকায় মালিকেরা রাস্তায় বাস নামাতে চাননি।’’ বাস ‘তুলে’ নেওয়া প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা পরিবহণ দফতরের সদস্য ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘কাউকে জোর করা হয়নি। অনুরোধেই সাড়া দিয়েছেন বাস মালিকেরা। স্থানীয় নেতারাই উদ্যোগী হয়ে এই কাজ করেছেন।’’

এ দিন সকালে রাস্তায় বেরিয়ে দেখা গেল, এসবিএসটিসির কিছু বাস পথে নেমেছিল। তবে যাত্রী প্রায় ছিল না। তবে পর্যাপ্ত সংখ্যায় অটো চলাচল করেছে। এ দিন পঞ্জাব থেকে ট্রেনে করে সপরিবার আসানসোলে এসেছেন গৌরব মণ্ডল। তাঁর যাওয়ার কথা বহরমপুরে। কিন্তু আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে শুনেছেন বাস যাবে না। গৌরববাবু বলেন, ‘‘খুবই বিপদে পড়ে গিয়েছি। এক অটোচালক যেতে রাজি হওয়ায় হাজার দেড়েক টাকায় রফা করেছি।’’ দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও বাস না পেয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন যাত্রীদের একাংশ। বার্নপুরের দামোদর রেল আবাসনের বাসিন্দা মধুমিতা পাল জানান, বিএনআর স্টপে বাস না পেয়ে চড়া ভাড়া দিয়ে অটো রিজ়ার্ভ করে গন্তব্যে গিয়েছেন। একই অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুরেও।

বন্‌ধের কোনও প্রভাব পড়েনি জেলার শিল্পাঞ্চলে। তবে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে সমস্যায় পড়তে হয়েছে অনেককে। মঙ্গলপুর শিল্পতালুকের একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী পরিমল বাইন জানান, অনুপস্থিত হলে কর্তৃপক্ষ কোনও অজুহাত শুনতে চান না। বেতন কাটা যায়। বেশি ভাড়া হলেও অটোয় যেতে হয়েছে।

সকালের দিকে বন্‌ধের সমর্থনে বামেদের একটি মিছিল হয়েছে জেলার নানা প্রান্তে। আসানসোলে মিছিলে যোগদানকারীরা এসবিএসটির বাসে উঠে যাত্রীদের হাত জোড় করে নেমে যাওয়ার অনুরোধ করেন। এ দিকে, দুর্গাপুর-বাঁকুড়া রাজ্য সড়কের উপরে বাঁকুড়া মোড়ে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে সিপিএম। আধ ঘণ্টা পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কংগ্রেস মিছিল করে বেনাচিতি বাজারে। কুলটির নিয়ামতপুরেও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাস্তায় অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। ডিএসপির সামনে বিক্ষোভ দেখায় সিটু। বেনাচিতি ও দুর্গাপুর বাজারে বহু দোকানপাট বন্ধ ছিল। সিটিসেন্টারে শপিং মল খোলেনি। তবে মাঠেঘাটে চাষের কাজে বন্‌ধের খুব একটা প্রভাব পড়েনি।

জেলা প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, এ দিনের বন্‌ধকে ঘিরে বিক্ষোভ-অবরোধ হলেও, অশান্তির খবর নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Strikre Passengers New Farm Bill CPM TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE