Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জল-রাস্তা নেই, গাছ ফেলে পথ অবরোধ গ্রামে

ভাঙাচোরা রাস্তা-সেতু, মজে যাওয়া নিকাশি নালা সংস্কার-সহ নানা দাবিতে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে পথ অবরোধ করলেন বাসিন্দারা। সোমবার বৈকুন্ঠপুর ২ পঞ্চায়েতের রায়নগর গ্রামে বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে। গ্রামবাসীদের দাবি, বারবার প্রশাসনের নানা মহলে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি।

রায়নগরের রাস্তায় চলছে অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র।

রায়নগরের রাস্তায় চলছে অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৫ ০১:১৯
Share: Save:

ভাঙাচোরা রাস্তা-সেতু, মজে যাওয়া নিকাশি নালা সংস্কার-সহ নানা দাবিতে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে পথ অবরোধ করলেন বাসিন্দারা। সোমবার বৈকুন্ঠপুর ২ পঞ্চায়েতের রায়নগর গ্রামে বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে। গ্রামবাসীদের দাবি, বারবার প্রশাসনের নানা মহলে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি।

বাসিন্দাদের দাবি, এলাকায় ৪টি পানীয় জলের কল রয়েছে। তবে তার তিনটিতেই জল পড়ে না। রাস্তাঘাট এতটাই ভেঙে গিয়েছে যে গাড়ি চলাচল তো দূর, হাঁটাচলা করলেও বিপদের সম্ভাবনা রয়ে যায়। এ ছাড়া বাঁকা নদীর উপর যে সেতুটি রয়েছে তাও সেটিও ভেঙে পড়তে পারে যে কোনও সময়। তাঁদের দাবি, প্রশাসন বা পঞ্চায়েত কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাধ্য হয়েই অবরোধ করতে হয়েছে। এ দিন দুপুরে গিয়ে দেখা যায় বর্ধমান-কালনা রোডের পাশে রায়নগর গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় রাস্তা জুড়ে নানা দাবিদাওয়া সংবলিত পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বাসিন্দারা। স্থানীয় মানিক দাস, অনিমেষ মণ্ডলেরা জানান, রায়নগর পূর্ব ও পশ্চিমপাড়া মিলিয়ে হাজার পাঁচেক মানুষের বাস। কিন্তু পানীয় জলের কল একটিই। ফলে গরমকালে পানীয় জলের জন্য হাহাকার করতে হয় তাঁদের। এলাকার বাসিন্দা অমলা বিশ্বাস বলেন, ‘‘পাড়ার ক্লাবে শিশুদের একটি অঙ্গনওয়াড়ি চলে। রোজই জনা পঞ্চাশেক শিশু আসে সেখানে। কিন্তু পানীয় জলের কল থাকলেও বছরভর খারাপ হয়ে পড়ে তাকে সেটি।’’ তাঁর আরও দাবি, রাস্তার পিচ উঠে, বড় পাথরের টুকরো ছড়িয়ে থাকে। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। নিকাশি নালাগুলিও দীর্ঘদিন সাফাই হয়নি বলে বাসিন্দাদের দাবি। ফলে নালার পাশে যাঁদের বা়ড়ি সেখানে দুর্গন্ধে টেকা দায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বৈকুণ্ঠপুর পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিতে বারবার সমস্যা মেটানোর জন্য আবেদন করেছেন তাঁরা। আশপাশে কিছু কাজ হলেও রায়নগরে কোনও উন্নয়নই হয়নি। কিছুক্ষণ অবরোধ চলার পরে অবরোধকারীদের একাংশ স্থানীয় পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যা উমা বিশ্বাসের বাড়িও ঘেরাও করেন। পরে উমাদেবী বলেন, ‘‘প্রধান, উপপ্রধানের কাছে পঞ্চায়েতের সমস্যার কথা জানিয়েছি। ওরা কাজ হবে বলে আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু দেরি হওয়ায় মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।’’

তবে বৈকুণ্ঠপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্যামল দত্তের দাবি, ‘‘রায়নগরের অধিকাংশ জায়গা রেলের সম্পত্তি। তাই আমরা চাইলেও অনেক কাজ করতে পারছি না। তবে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে। শীঘ্রই পানীয় জলের সজলধারা প্রকল্প চালু করা হবে ওই এলাকায়।’’ নিকাশি নালা সংস্কারের কাজও তাড়াতাড়ি শুরু হবে বলে তাঁর আশ্বাস। রাস্তা সংস্কারের জন্য বিডিও দরপত্র ডাকতে চলেছে বলেও জানিয়েছেন শ্যামলবাবু।

তবে ঝুড়িভর্তি আশ্বাস পেয়েও ভরসা রাখতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। গ্রামের কল্যাণ, অমলাদের কথায়, ‘‘এত দিন তো দেখলাম, শুকনো কথায় চিঁড়ে ভিজবে না এ বার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

agitation burdwan village drinking water road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE