Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মহালয়ার ভোরে ‘অসুর’ শব্দবাজি

পিতৃপক্ষের অবসানের দিনই টের পাইয়ে দিল উৎসবের দিনগুলিতে শব্দবাজির দৌরাত্ম্য কতটা হতে পারে।

বাজির ধোঁয়া, বর্ধমান শহরে। নিজস্ব চিত্র

বাজির ধোঁয়া, বর্ধমান শহরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৫৪
Share: Save:

পিতৃপক্ষের অবসানের দিনই টের পাইয়ে দিল উৎসবের দিনগুলিতে শব্দবাজির দৌরাত্ম্য কতটা হতে পারে।

রবিবার রাত থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় শব্দবাজি ফাটতে শুরু করেছিল। সোমবার, মহালয়ার ভোরে তা মাত্রা ছাড়ায়। অসুস্থ মানুষ ও শিশুদের নিয়ে উদ্বেগেই মহালয়া কাটে বর্ধমান শহর-সহ কাটোয়া, কালনার বাসিন্দাদের। বাজির দাপটে অস্থির হয়ে ওঠে পোষ্য থেকে রাস্তার কুকুরেরাও। পুলিশের যদিও দাবি, গত বছরের থেকে তুলনামূলক ভাবে শব্দবাজি কম ফেটেছে।

বর্ধমান শহরের লক্ষ্মীপুর মাঠ, মেহেদিবাগান, কলেজ মোড়, গোলাপবাগ, কাঞ্চননগর, তেজগঞ্জ এলাকায় শব্দবাজির প্রভাব ছিল। তবে অন্য বছরের তুলনায় বাজির দৌরাত্ম্য কম ছিল কালীবাজার, নীলপুর এলাকায়। কাটোয়া শহরেও বিভিন্ন এলাকাতেও শব্দবাজির ভালই প্রভাব ছিল। কাটোয়া ব্যবসায়ী সমিতির কর্তা বিদ্যুৎ নন্দী বলেন, “আনন্দ থাকুক কিন্তু দিনদিন সব বেপরোয়া হয়ে উঠছে। প্রশাসনের কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ কালনার ভাগীরথী তীরবর্তী এলাকা, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড-সহ গ্রামীণ এলাকাতেও রাতভর শব্দবাজির তান্ডব ছিল। যদিও জেলা পুলিশের কর্তাদের দাবি, শব্দবাজি বন্ধ করার জন্য টানা তল্লাশি চলছে। গত কয়েক দিনে প্রচুর শব্দবাজি আটক করা হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‌হেড কোয়ার্টার) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, “পুলিশের তল্লাশি চলার সঙ্গে সঙ্গে শব্দবাজি নিয়ে সচেতনতাও চালানো হচ্ছে। শব্দের মাত্রা ছাড়ালে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে।’’

শহরের এক বাসিন্দার কথায়, “বাজির আওয়াজে রাস্তার কুকুরগুলি কী রকম নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিল। বাড়ির কুকুরটাও ছটফট করছিল।’’ তেজগঞ্জের বৃদ্ধা উৎপলা দত্তচৌধুরী বলেন, “প্রাতর্ভ্রমণটা আমার অভ্যাস। পাড়ার কয়েকজনের সঙ্গে প্রাতর্ভ্রমণে যাই। মহালয়া শুনে যাব ভেবেছিলাম। বাজি ফাটানোর বহর দেখে বাড়ি থেকে ভয়ে বেরোতেই পারলাম না।’’ আর এক বাসিন্দা সুদীপ্ত ঘোষের কথায়, “বাজির দাপটে ভোর তিনটে থেকে জেগে বসে থাকতে হয়েছে। মহালয়ার শান্ত পরিবেশের তাল কেটে গেল বাজির শব্দে।’’ কালনার বাসিন্দা সুনীল মল্লিকের কথায়, “বাড়িতে অসুস্থ মানুষ নিয়ে বাস করি। ভাল করে দু’চোখের পাতা এক করতে পারিনি।’’

শহরবাসীর একাংশের দাবি, শব্দবাজি বন্ধ করার জন্য পুলিশ যতই তল্লাশি বা সচেতনতার প্রচার চালাক, কোথাও একটা প্রশাসনের তরফে শিথিলতা থেকেই গিয়েছে। ফলে যতই নজরদারি চলুক, বাজির দাপট বন্ধ হয়নি। পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত বলেন, “বাজির শব্দে আমারই ঘুম ভেঙে গিয়েছে। কী বলব! পুলিশ চেষ্টা করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sound Pollution Fire Cracker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE