থানা ভাঙচুরে অভিযুক্তরা। নিজস্ব চিত্র
ছেলেধরা ঢুকেছে, এই গুজবকে কেন্দ্র করে এই শহরেরই বারুইপাড়ায় দিনের আলোয় দু’জনকে পিটিয়ে খুনের ঘটনা ঘটেছিল। ফের সেই শহর, কালনাতেই গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। গ্রেফতারির পরে অভিযুক্তকে ছাড়াতে এসে থানায় ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে পূর্বস্থলীর পাঠানগ্রামের এক দল বাসিন্দার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনাটা কী? পূর্বস্থলী থানার পুলিশ জানায়, শুক্রবার জানা যায়, পাঠান গ্রামের বাসিন্দা, মাঝবয়সী গোলাম কুদ্দুস মল্লিক নামে এক জন তাঁর মোবাইল থেকে হোয়াটস অ্যাপে একটি মেসেজ নানা জায়গায় পাঠিয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, এসএমএস-এ লেখা ছিল, ‘ভিন রাজ্য থেকে পাঁচশো জন এসেছে এলাকায়।’ মেসেজে আরও দাবি করা হয়, ওই লোকজন নানা অছিলায় ঘরে ঢুকে শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ কেটে নিচ্ছে। বাংলায় লেখা ওই মেসেজটি পরিচিতদের পাঠিয়ে তা নানা জায়গায় পাঠানোরও আর্জি জানানো হয় ওই মেসেজে। এর পরে পুলিশ পাঠানগ্রাম থেকেই গোলামকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারির খবর চাউর হতেই রাতে থানায় ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁরা আর্জি জানান, না বুঝেই মেসেজ পাঠানো হয়েছে। গোলামকে যেন ছে়ড়ে দেওয়া হয়। পাঠানগ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, এর পরেই পুলিশ পাঁচ জনকে আটক করে। রাত ৮টার পরে ফের বাসিন্দাদের একাংশ থানায় ভিড় জমায়। তাঁরাও অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান। অভিযোগ, এর পরেই ভিড় সরাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। স্থানীয় বাসিন্দা জাকির হোসেন শেখের অভিযোগ, ‘‘গ্রামের সাধারণ মানুষকে মারধর করা হয়েছে।’’ এর জেরে তাঁদের কয়েক জন জখমও হয়েছেন বলে দাবি গ্রামবাসীদের।
যদিও এসডিপিও (কালনা) শান্তনু চৌধুরী বলেন, ‘‘লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেনি। গুজব যে কতটা ক্ষতিকারক, তা কালনার বারুইপাড়ার ঘটনাতেই প্রমাণিত। তাই গুজব ছড়ানোর ঘটনাটি জানার পরেই পূর্বস্থলী থানা ব্যবস্থা নিয়েছে।’’ হামলা ও থানায় ভাঙচুরে জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে আলমগীর মল্লিক, সেলিম হোসেন শেখ, মদন মোল্লা ও গোলাম নবি মল্লিক নামে চার গ্রামবাসীকে।
শনিবার আদালতে যাওয়ার পথে গোলাম দাবি করেন, স্মার্টফোন ভাল ভাবে ব্যবহার করতে তিনি জানেন না। তাঁর হোয়াটস অ্যাপে ওই মেসেজটি এসেছিল। তিনি তা না বুঝে পাঠিয়ে ফেলেছেন। ধৃত আলমগীর, সেলিম, মদনদের দাবি, তাঁরা কোনও হামলা, ভাঙচুর চালাননি।
এ দিন ধৃতদের কালনা মহকুমা আদালতে তোলা হলে ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy