Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
কুলটি রেলপাড়ে সঙ্কট

দু’বালতি জলের জন্য কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা

কখনও কাকভোরে লাইন দিতে হয় কলতলায়। আবার মধ্যরাতেও বালতি হাতে ছুটতে হয়। অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এত কিছুর পরে দু’বালতি পানীয় জল ঘরে তুলতে পারেন না অনেকেই। এই ছবি কুলটির রেলপাড় এলাকার।

জলের জন্য লাইন। নিজস্ব চিত্র

জলের জন্য লাইন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কুলটি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:৪০
Share: Save:

কখনও কাকভোরে লাইন দিতে হয় কলতলায়। আবার মধ্যরাতেও বালতি হাতে ছুটতে হয়। অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এত কিছুর পরে দু’বালতি পানীয় জল ঘরে তুলতে পারেন না অনেকেই। এই ছবি কুলটির রেলপাড় এলাকার।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরেই এই অবস্থায় রয়েছেন তাঁরা। অথচ পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে বহুবার সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েও লাভ হয়নি। তাই এ বার সই সংগ্রহ করে পুরসভার কাছে সমস্যা মেটাতে দরবার করা হবে বলে জানান বাসিন্দারা। যদিও পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, কুলটির নতুন জলপ্রকল্পের জন্য পাইপলাইন পাতানোর কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত সমস্যা মিটবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের।

কুলটির রেলপাড় এলাকায় পাঁচটি ওয়ার্ড আছে। কমবেশি এক লক্ষ বাসিন্দার বাস। এই রেলপাড়বাসীদের জন্য বছর দশেক আগে রামনগর এলাকায় দেড় লক্ষ গ্যালনের একটি জলাধার নির্মাণ করা হয়েছিল। পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা ভেবেছিলেন পাঁচটি ওয়ার্ডে আর কোনও জলের সমস্যা থাকবে না। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে লাগাম ছাড়া জল চুরি, এমনটাই অভিযোগ পুর-কর্তৃপক্ষের। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মনবেরিয়া লাগোয়া বরাকর নদে সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে পাইপ লাইনের মাধ্যমে রামনগরের জলাধারে জল তোলা হয়। সেখান জল পাঁচটি ওয়ার্ডে সরবরাহ করার কথা। পুর-কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কিন্তু পাথরখাদ-সহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা চালু পাইপলাইন ফুটো করে অবৈধ সংযোগ নিয়েছেন। ফলে, রামনগর জলাধারে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল না থাকায় এলাকাতেও সরবরাহ করা যাচ্ছে না। যদিও বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রামনগরের ওই জলাধার থেকে সারাদিনে একবারই আধ ঘণ্টার জন্য জল সরবরাহ করা হয়। এতে সমস্যা মেটে না।

বাসিন্দারা আরও জানিয়েছেন, আগে এই এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে কুলটি ইস্কো কর্তৃপক্ষ পানীয় জল সরবরাহ করত। কিন্তু, কারখানা বন্ধ হওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জল সরবরাহের পরিমাণ কমাতে কমাতে এখন সপ্তাহে চার দিন আধ ঘণ্টার মতো জল সরবরাহ করে। ফলে, সঙ্কট এখন মাত্রাছাড়া হয়ে উঠেছে।

বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে কুলটি স্টেশন লাগোয়া রেল আবাসন অঞ্চল অথবা অটো ভাড়া করে আরও দূরের আপার কুলটি নিউরোড থেকে জল বয়ে আনতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দা নিরঞ্জন দেবনাথ বলেন, ‘‘গত ২০ দিন ধরে আমরা পানীয় জলের চরম সঙ্কটে ভুগছি।’’ এই পরিস্থিতিতে তাঁরা গণ-সাক্ষরিত চিঠি পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আসানসোল পুরসভার জল দফতরের মেয়র পারিষদ পূর্ণশশী রায় বলেন, ‘‘আমরা অবৈধ পাইপ লাইন কাটতে শুরু করেছি। কুলটির জন্য নতুন জলপ্রকল্প তৈরির কাজ চলছে।’’ আগামী বছরের গোড়াতেই এই প্রকল্পটি চালু হয়ে যাবে বলে আশা পুর-কর্তৃপক্ষের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water Kulti Water Supply
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE