Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
বিজেপি-তৃণমূল অশান্তিতে তপ্ত বর্ধমান স্টেশন চত্বর

লাঠি হাতে দু’দল, বোমাবাজি রাস্তায়

মঙ্গলবার দিনভর দু’দলের জমায়েতে উত্তেজনা ছিল বর্ধমান স্টেশনের মূল প্রবেশ পথের সামনে।

পুলিশের ধরপাকড়। নিজস্ব চিত্র

পুলিশের ধরপাকড়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ০৫:০৪
Share: Save:

ন’বছর আগেও দুই গোষ্ঠীর বোমাবাজি, পুলিশের লাঠিচার্জ, বাড়ি বাড়ি তল্লাশিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল বর্ধমান স্টেশন এলাকায়। মঙ্গলবারের গোলমালেও ফিরে এল সেই স্মৃতি।

স্টেশন এলাকা দখল, তোলাবাজির অভিযোগকে ঘিরে সকাল থেকেই দু’গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ২০১০ সালে যুযুধান ছিলেন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি ইফতিকার আহমেদ ও লক্ষ্মীপুর মাঠের বাসিন্দা, সিপিএমের খোকন সেন। এ বারও দু’পক্ষ একই রইল, শুধু খোকনবাবু বিজেপির হয়ে মাঠে নামলেন।

মঙ্গলবার দিনভর দু’দলের জমায়েতে উত্তেজনা ছিল বর্ধমান স্টেশনের মূল প্রবেশ পথের সামনে। বিকেল ৩টে নাগাদ পুলিশ দু’পক্ষকে সরিয়ে দেওয়ার পরে রাস্তা ফাঁকা হয়। স্থানীয় লোকজনের দাবি, কিছুক্ষণের মধ্যেই পরপর দুটি বোমা পড়ে গুডস্ শেড রোডে ঢোকার মুখে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রিয়ব্রত রায়ের নেতৃত্বে পুলিশ, র‍্যাফ, স্ট্রাকো বাহিনী এলাকা ঘিরে ফেলে। পরে ওই এলাকার বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি ঢুকে মহিলা-সহ ৩৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। চৌধুরি চিঁড়েমিলের গলি থেকে আটক করা হয় খোকন সেনকেও।

গোলমালটা অবশ্য শুরু হয়েছিল বেশ কিছু দিন আগে থেকেই। পুলিশ জানায়, সোমবার বিকেলে স্টেশন এলাকায় একটি গুমটি থেকে সদস্য সংগ্রহ অভিযান চালাচ্ছিল বিজেপি। তাতে আপত্তি জানায় তৃণমূল। এ নিয়ে লোক জড়ো করে দু’পক্ষ। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল ইফতিকার আহমেদের নেতৃত্বে টোটো চালক, সাইকেল স্ট্যান্ড, গাড়ির স্ট্যান্ড, রেলের ঠিকা শ্রমিক এমনকি, সংবাদপত্রের হকারদের কাছ থেকেও তোলা আদায় করে। এ কথা প্রকাশ্যে বলায় স্টেশন চত্বরের ওই গুমটিতে ভাঙচুর করতে আসে তৃণমূলের কয়েকজন। বাধা দেন বিজেপির কর্মী, সমর্থকেরা। খোকনবাবুর দাবি, ‘‘তোলাবাজি, কাটমানি বন্ধের ডাক দিতেই খেটেখাওয়া মানুষরা বিজেপির পিছনে দাঁড়িয়েছেন। দোকান ভেঙে উত্তেজনা ছড়াতে চাইছে তৃণমূল। কিন্তু এখন থেকে আর স্টেশন চত্বরে তোলাবাজি চলবে না।’’ ইফতিকার আহমেদের পাল্টা, “বর্ধমান স্টেশন চত্বরে অত্যাচারী রাজা ছিলেন সিপিএমের খোকন সেন। বিজেপির জামা গলিয়ে সেই দিন ফিরিয়ে আনতে চাইছেন।’’

স্টেশন চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, প্ল্যাটফর্মের দিকে বিজেপির লোকেরা লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে। আর জিটি রোডের দিকে জমা হয়েছে তৃণমূলের লোকজন। তাঁদের হাতেও লাঠি। মাঝে ডিএসপি (বর্ধমান সদর) শৌভিক পাত্র, বর্ধমান থানার আইসি তুষার করেরা বিশাল বাহিনী নিয়ে দাঁড়িয়ে।

বিজেপির সাংগঠনিক সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর অভিযোগ, “শাসক দল বোমা ফেলল। আর তাদের হয়ে প্রশাসন মাঠে নেমে আমাদের নিরীহ সমর্থক-কর্মীদের মারতে মারতে গাড়িতে তুলল।’’ তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর খোকন দাসের পাল্টা দাবি, “পরিকল্পনা করেই বিজেপি বোমা ছুড়েছে। পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।’’

পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রকাশ্যে বোমাবাজি ও এলাকায় উত্তেজনা ছড়ানোর জন্য পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Clash Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE