রানিগঞ্জের সিআর রোডে, ‘লকডাউন’ এলাকায় এ ভাবেই চলছে যাতায়াত। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
রানিগঞ্জ পুর-এলাকার করোনা-পরিস্থিতি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা আগেই জানিয়েছিল জেলা প্রশাসন। পরিস্থিতির মোকাবিলায় দু’টি ‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকা’ তৈরি এবং ৮৮ ও ৮৯, এই দুই ওয়ার্ডে এক সপ্তাহের ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। কিন্তু তার পরেও ওই দুই ওয়ার্ডেই ‘লকডাউন’ ভাঙতে দেখা যাচ্ছে নাগরিকদের একাংশকে, দাবি পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের।
সকাল ১০টা। ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডের শিবমন্দির রোড এলাকা। সেখান থেকে বেশ কয়েকজনকে বাজারের থলি নিয়ে বেরোতে দেখা গেল। সিহারসোলের বাজারে যাচ্ছেন বলে জানান তাঁরা। কেন এমনটা? তাঁদের অনেকেরই পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘টাটকা আনাজ, মাছ না হলে চলে!’’
দুপুর ১২টা। ঘটনাস্থল, ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিআর রোড। দেখা গেল, বাঁশের ব্যারিকেড, গার্ডওয়ালে এক দিকে দাঁড়াল গাড়ি। চালক গার্ডওয়াল সরিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে এলাকা পার করলেন। পরে, আবার গাড়ি থেকে নেমে গার্ডওয়াল ঠিক করে দিলেন। কেন এমনটা? চালকের সহাস্য জবাব, ‘‘এমনটা না করলে হবে না।’’ সেই সময়ে কোনও সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশ দেখা যায়নি। পরে, অবশ্য এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে দেখা যায় ওই এলাকায়। তবে তাঁকেও গাড়ি, মোটরবাইক আটকাতে খুব একটা ‘সক্রিয়’ ভূমিকায় দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের অবশ্য দাবি, ‘‘কিছু বললেই অশান্তি হবে। তাই যতটা পারছি, করছি।’’
পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (সেন্ট্রাল ২) তথাগত পাণ্ডে বলেন, ‘‘শনিবার লকডাউন শুরুর পরে, এ পর্যন্ত ১১২ জনের বিরুদ্ধে ‘মাস্ক’ না পরার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। নিয়মিত অভিযান ও প্রচার চলছে।’’
এই পরিস্থিতিতে ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর সদস্য সমরেন্দ্রকুমার বসু বলেন, ‘‘এ ভাবে আংশিক লকডাউন করে কোনও প্রতিকার হবে না।’’ ‘রানিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স’-এর সভাপতি সন্দীপ ভালোটিয়াও বলেন, ‘‘প্রশাসনের শত চেষ্টাতেও বাসিন্দাদের একাংশ কিছুতেই বিধি মানছেন না।’’ আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) দিব্যেন্দু ভগত জানান, নাগরিক সচেতনতা দরকার। মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির কাছে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকেও পথে নামানোর আর্জি জানিয়েছি। পাশাপাশি, যাঁরা নিয়ম মানছেন না, তাঁদের বাধ্যতামূলক ভাবে নিভৃতবাসে রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলেও তাঁর প্রস্তাব। পাশাপাশি, পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, প্রশাসনের কাছে রানিগঞ্জে ‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকা’র সংখ্যা আরও বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy