Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বারবার দেহ উদ্ধার, পরিত্যক্ত খনি ভরাট করার দাবি

সোমবার সকালে জামুড়িয়ার খাসকেন্দায় এক পরিত্যক্ত খোলামুখ খনি থেকে উদ্ধার হয় স্থানীয় এক যুবকের দেহ। পরিত্যক্ত এই খনিগুলি ভরাটের দাবিতে সরব হয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি।

খাসকেন্দায় জমায়েত বাসিন্দাদের। —নিজস্ব চিত্র।

খাসকেন্দায় জমায়েত বাসিন্দাদের। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০২:২৬
Share: Save:

দীর্ঘদিন আগে কয়লা তোলার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। তার পরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে খাদান। রানিগঞ্জ-জামুড়িয়া খনি এলাকায় এই ধরনের নানা খাদান থেকে বারবার দেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘটায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। সোমবার সকালে জামুড়িয়ার খাসকেন্দায় এক পরিত্যক্ত খোলামুখ খনি থেকে উদ্ধার হয় স্থানীয় এক যুবকের দেহ। পরিত্যক্ত এই খনিগুলি ভরাটের দাবিতে সরব হয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি।

জামুড়িয়ার খাসকেন্দ গোঁসাই মন্দির লাগোয়া এলাকায় পরিত্যক্ত ওই খনিমুখ থেকে করণ ডোম (২৫) নামে এক যুবকের দেহ মেলে এ দিন। তিনি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে ইস্টকেন্দা ডোমপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। এলাকাবাসীর দাবি, প্রায় চল্লিশ বছর আগে এই খোলামুখ খনির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। তার পরে জল জমে পুকুরের আকার নিয়েছে। এখান থেকে বছর আটেক আগে আরও এক জনের দেহ উদ্ধার হয়েছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান।

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ করণ বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। তাঁর বাবা জুগনুবাবু জানান, তিনি বিহারে তাঁদের আদি বাড়ি থেকে শনিবার ফিরেছেন। তার পরে কেন্দা ফাঁড়িতে মৌখিক ভাবে ছেলের নিঁখোজ থাকার বিষয়টি জানিয়েছিলেন। জুগনুবাবুর কথায়, ‘‘মনে করেছিলাম, কোথাও গিয়েছে, ফিরে আসবে। সোমবার সকালে প্রতিবেশীদের কাছে জানতে পারি, পরিত্যক্ত খোলামুখ খনির জলে একটি দেহ ভেসে উঠেছে। কেন্দা ফাঁড়িতে গিয়ে ছেলের দেহ শনাক্ত করি।’’ কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না বলে পরিজনেরা জানান। পুলিশ জানায়, দেহ ময়না-তদন্তে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট পাওয়ার পরে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

বারবার খোলামুখ খনি থেকে দেহ মেলায় ক্ষুব্ধ শ্রমিক সংগঠনগুলি। তাদের দাবি, ইসিএলকে পরিত্যক্ত খোলামুখ খনিগুলির দিকে নজর দিতে হবে। খনিগুলি থেকে কয়লা কেটে নেওয়ার পরে মাটি ভরাট করে সেখানে বৃক্ষরোপণ করা প্রয়োজন। তা না হলে জল জমে পুকুরের আকার নেয়। যদি মাছ চাষের অনুমতি দেওয়া হয় তবে যাঁরা চাষ করবেন তাঁদের নজরদারিতে থাকবে।

আইএনটিটিইউসি নেতা নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাঁকোলা, ডালুরবাঁধ, কুমারডিহি-সহ নানা এলাকায় পরিত্যক্ত খোলামুখ খনি থেকে বিভিন্ন সময়ে দেহ উদ্ধার হয়েছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।’’ ইন্ডিয়ান ন্যাশানল মাইন ওয়ার্কার্স ফেডারশেনের সম্পাদক তরুণ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘কয়লা কেটে নেওয়ার পরে ভরাট করে দেওয়া প্রয়োজন। তাতে চাষ-আবাদও করতে পারবেন স্থানীয় বাসিন্দারা।’’

ইসিএল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, পরিত্যক্ত খোলামুখ খনি বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। কিন্তু এলাকাবাসীর একাংশই তা ভেঙে দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jamuria Mine জামুরিয়া
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE