Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Kalna

বাজার করার ধুম, পুলিশ দেখে হুঁশ

কালনা ও কাটোয়া শহরে এমনিতেই প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে মহকুমা প্রশাসন।

উপরে, বর্ধমানের পুলিশ লাইন বাজারে। নীচে বাঁ দিকে, কালনার বাজারে ও ডান দিকে, কাটোয়ার রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র

উপরে, বর্ধমানের পুলিশ লাইন বাজারে। নীচে বাঁ দিকে, কালনার বাজারে ও ডান দিকে, কাটোয়ার রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা ও কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২০ ০৭:৪৮
Share: Save:

করোনা আটকানোর জন্য সতর্কতা-বিধিকে বুড়ো আঙুল। কিন্তু পুলিশ আসতে দেখলেই ফাঁকা। বুধবার এমনই ছবি দেখা গেল কাটোয়ায়। যা দেখে বাসিন্দাদের অনেকের মন্তব্য, ‘‘পুলিশে ভয় আছে, কিন্তু করোনায় যেন ভয় নেই ক্রেতাদের!’’ আজ, বৃহস্পতিবার ‘লকডাউন’। তার আগের দিন কাটোয়ার মতো ভিড় উপচে পড়ল কালনার নানা বাজারেও। দূরত্বিবিধি মানা থেকে ‘মাস্ক’ পরে থাকা, অনেক নিয়মই সেখানে ভাঙা হয়েছে বলে অভিযোগ।

কালনা ও কাটোয়া শহরে এমনিতেই প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে মহকুমা প্রশাসন। তার সঙ্গে আজ, বৃহস্পতিবার ‘লকডাউন’ ঘোষণা হওয়ায় বুধবার সকাল থেকেই বাজারে ভিড় জমতে শুরু করে। কালনায় সকাল ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়। তার পর বৃষ্টি কিছুটা কমতেই মাছ, আনাজের বাজারগুলি ক্রেতায় ভরে যায়। মিষ্টির দোকান, মুদির দোকান থেকে চায়ের দোকান—সর্বত্র ছিল ভিড়। বাজার করে ফেরার পথে কালনা শহরের বাসিন্দা সুবিমল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কাল সারা দিন বেরনোর সুযোগ নেই। এক দিন পরে আবার শনিবার ‘লকডাউন’। তাই মাছ, মুরগির মাংস, আনাজ কিনে নিয়েছি।’’

কাটোয়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়মিত বাড়ছে। মঙ্গলবার রাতেও শহরের মাধবীতলা-টেলিফোন ময়দান এলাকায় এক আক্রান্তের খোঁজ মেলে। বুধবার সকালেই প্রশাসনের তরফ থেকে আক্রান্তের বাড়ি লাগোয়া রাস্তা গণ্ডিবদ্ধ করা হয়। এই পরিস্থিতিতেও শহরের অনেকের মধ্যে এখনও সচেতনতা গড়ে ওঠেনি বলে অভিযোগ। দাঁইহাটে এখনও পর্যন্ত দু’জনের করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। পরে তাঁদের রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ এসেছে। তা সত্বেও ভিড় কমাতে শহরের দোকানপাট দুপুরের পর থেকে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

এ দিন কাটোয়ায় বাজারে আসা ক্রেতাদের অনেককে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করার ফাঁকেই পাশাপাশি দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করতে দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন দোকানের সামনেও ভিড় জমে। এর মধ্যে পুলিশের গাড়ির আওয়াজ পেলেই অনেকে দূরে সরে গিয়েছেন। মুখে তুলে নিয়েছেন ‘মাস্ক’। কিন্তু পুলিশ ফিরে যেতেই আবার এক অবস্থা ফিরে এসেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর অনেকের। শহরের বাসিন্দা শ্রাবণী ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘প্রশাসন প্রচার চালালেও, মানুষ নিয়ম মানছেন কোথায়? শুধু পুলিশ দেখলে মানুষ হঠাৎ সচেতন হয়ে পড়ছেন। করোনা নয়, পুলিশকেই যেন বেশি ভয়! অকারণে রাস্তায় নামা আটকাতে পুলিশ আরও কড়া হলে ভাল হয়।’’

আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে কালনাতেও। বুধবারও এক জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। কালনা মহকুমা হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘এই সময়ে ভিড় মানে বিপদ ডেকে আনা। সচেতনেতাই একমাত্র বিপদ থেকে বেরিয়ে আসার রাস্তা।’’ কালনা পুরসভার প্রশাসক দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শুরু হবে ‘লকডাউন’। তা অমান্য করলেই প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নেবে।’’ পুলিশ জানায়, কিছু বাসিন্দা এখনও নির্দেশ অমান্য করছেন। বিধি ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalna Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE