Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মাটি মেশানো জাল সিমেন্ট তৈরির কারখানা রায়নায়

জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই গুদাম থেকে ১৫৫৪ প্যাকেট জাল সিমেন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গুদামের মালিক, বর্ধমান শহরের বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ বৈরাগ্য ও ম্যানেজার মঙ্গলকোটের আওগ্রামের তারাপদ বৈরাগ্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

রায়নার এই গুদামেই চলত নকল সিমেন্টের কারবার। নিজস্ব চিত্র

রায়নার এই গুদামেই চলত নকল সিমেন্টের কারবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়না শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৮ ০২:৫০
Share: Save:

নামী সিমেন্ট কোম্পানির বস্তা থেকে জমাট বাঁধা সিমেন্ট বের করে গুঁড়ো করছেন কয়েকজন। তার সঙ্গে মেশানো হচ্ছে গঙ্গার মাটি ও অন্য রাসায়নিক। তারপর ফের ওই সিমেন্ট বস্তায় ভরে সিল করে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ডিলারের ঘরে। নামী সংস্থা অনুমোদিত ওই ডিলার খোলা বাজারে চড়া দামে বিক্রি করছেন সেই সিমেন্ট। জাল সিমেন্টের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে এমনই তথ্য পেয়েছে জেলা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখা (ইবি)। বুধবার সকালে রায়নার বাঁকুড়া মোড়ের কাছে একটি গুদামে গিয়ে হাতেনাতে ধরাও হয়েছে নকল সিমেন্টের কারবার।

জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই গুদাম থেকে ১৫৫৪ প্যাকেট জাল সিমেন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গুদামের মালিক, বর্ধমান শহরের বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ বৈরাগ্য ও ম্যানেজার মঙ্গলকোটের আওগ্রামের তারাপদ বৈরাগ্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ এনফোর্সমেন্ট শাখা ওই গুদাম থেকে এক বস্তা গঙ্গার মাটি, একটি ল্যাপটপ ও বেশ কিছু যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্ত করেছে। গুদামটিকেও ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সুপারকে তিন পাতার একটি প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়েছেন জেলা এনফোর্সমেন্ট শাখার ডিএসপি অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়। ইবি জানিয়েছে, ডিলারদের কাছে মেয়াদ ফুরনো সিমেন্ট থাকে। আবার দীর্ঘ সময় ধরে সিমেন্ট থাকলেও তা জমাট বেঁধে যায়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, রবীন্দ্রনাথবাবু ডিলারদের কাছ থেকে ওই সিমেন্ট বাঁকুড়া মোড়ের গুদামে নিয়ে আসতেন। তারপর ৫-৬ জন কর্মীর সাহায্যে ওই সিমেন্টের সঙ্গে গঙ্গার মাটি, রাসায়ানিক মিশিয়ে সিমেন্টের গন্ধ ও রং নিয়ে আসার পর বিভিন্ন নামী সংস্থার পুরনো বস্তার একদিক ফুটো করে ফানেল দিয়ে ওই ‘নকল’ সিমেন্ট ঢুকিয়ে সেলাই করে দেওয়া হত। তারপরে ফের ডিলারদের কাছেই তা বিক্রি করতেন। প্রতি প্যাকেট পিছু প্রায় ১৯০ টাকা পেতেন রবীন্দ্রনাথবাবু। ইবির আধিকারিকদের দাবি, দু’বছর ধরে গুদামটি ভাড়া নিয়ে জাল সিমেন্ট তৈরির কারবার চালাতেন রবীন্দ্রনাথবাবু। বর্ধমান শহরের মিরছোবায় তাঁর একটি লোহালক্করের দোকানও রয়েছে।

ইবির ধারণা, রবীন্দ্রনাথবাবু খোলা বাজারে ক্রেতাদের কাছে সরাসরি নকল সিমেন্ট বিক্রি করতেন না। ডিলারের মাধ্যমেই সিমেন্ট বিক্রি করতেন তিনি। কোন কোন ডিলারের কাছ থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ বা জমাট বাঁধা সিমেন্ট আনা হত, তা জানার চেষ্টা চলছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ওই সিমেন্টের নমুনা ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cement Fake Factory
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE