দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ বারবারই ওঠে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের নানা কারখানার বিরুদ্ধে। সে নিয়ে বাসিন্দারা আন্দোলনেও নেমেছেন। অভিযোগ জমা পড়েছে প্রশাসনের কাছে। শেষমেশ বুধবার রাতে তিনটি কারখানায় আচমকা হানা দিলেন মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তারা। তিনটি কারখানাতেই দূষণ নিয়ন্ত্রণের নির্দিষ্ট নিময় মানা হয়নি বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। মহকুমাশাসক শঙ্খবাবু জানান, কারখানাগুলিকে নোটিস পাঠিয়ে জবাবদিহি চাওয়া হবে।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ‘স্মার্ট সিটি’র তকমা জুটবে না, নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে পুরসভাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েক মাস আগে। শহরবাসীর অভিযোগ, অতিরিক্ত মুনাফার লোভে বিদ্যুৎ খরচ বাঁচাতে শিল্পাঞ্চলের বহু কারখানা দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র ব্যবহার করে না। ফলে, বাতাসে বিপজ্জনক ভাসমান কণার পরিমাণ বাড়ে। চিকিৎসকদের মতে, এর ফলে, শ্বাসকষ্টজনিত নানা সমস্যা, ‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ’ (সিওপিডি)-এ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আবার দামোদরে কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য মিশছে।
সগরভাঙা, অঙ্গদপুর, রাতুরিয়া, ডিটিপিএস কলোনি থেকে শুরু করে সিটি সেন্টার, বিধাননগর, দূষণের থাবা থেকে রক্ষা নেই কারও। পুকুরের জলে দূষণের আস্তরণ। বাড়ির উঠোনে, বারান্দায় কালো ছাপ। দরজা-জানালা খুলে রাখার উপায় নেই। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনে দূষণের মাত্রা কম থাকলেও সন্ধ্যা নামলেই রাস্তা দিয়ে খালি চোখে হাঁটা বা মোটরবাইক চালিয়ে যাওয়া যায় না। চোখ জ্বালা করে। তাঁদের দাবি, দিনে কারখানাগুলি দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র ব্যবহার করে। কিন্তু রাতে উৎপাদন খরচ বাঁচাতে তা খুলে দেওয়ায় সন্ধ্যার পরে দূষণ বাড়ে।
বুধবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুকের তিনটি বেসরকারি কারখানায় অভিযান চালিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র পরীক্ষা করে দেখা হয়। সরকারি আধিকারিকেরা কথা বলেন কারখানার কর্মী-আধিকারিকদের সঙ্গে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনটি কারখানাতেই অনিয়ম নজরে এসেছে। কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি চেয়ে নোটিস পাঠানো হবে। উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে সেক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy