Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

যত্রতত্র ডাঁই আবর্জনা, দুর্গাপুরে ছড়াচ্ছে দূষণ 

সিটি সেন্টার হোক বা ৫৪ ফুট এলাকার আনন্দপুরী এলাকা, সর্বত্রই রাস্তার পাশে ডাঁই বর্জ্য। কয়েক দিন পরপর পুরসভার গাড়ি এসে আবর্জনা সংগ্রহ করে। তা ডাঁই করে রাখা হয় এক জায়গায়। কিন্তু তা প্রক্রিয়াকরণের কোনও ব্যবস্থা না থাকায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ।

সিটি সেন্টারে এ ভাবেই রাস্তার পাশে পড়ে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র

সিটি সেন্টারে এ ভাবেই রাস্তার পাশে পড়ে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৩৫
Share: Save:

শহরের ইতিউতি ছড়িয়ে আবর্জনার স্তূপ। বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণকেন্দ্র তৈরির জন্য দুর্গাপুর পুরসভার প্রস্তাবও সম্প্রতি বাতিল করে দিয়েছে নগরোন্নয়ন দফতর। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ফের প্রস্তাব পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র দিলীপ অগস্তি।

এই পরিস্থিতিতে সিটি সেন্টার হোক বা ৫৪ ফুট এলাকার আনন্দপুরী এলাকা, সর্বত্রই রাস্তার পাশে ডাঁই বর্জ্য। কয়েক দিন পরপর পুরসভার গাড়ি এসে আবর্জনা সংগ্রহ করে। তা ডাঁই করে রাখা হয় এক জায়গায়। কিন্তু তা প্রক্রিয়াকরণের কোনও ব্যবস্থা না থাকায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ।

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ‘জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশন’ (জেএনএনইউআরএম) প্রকল্পের অর্থে ও একটি বেসরকারি সংস্থার লগ্নিতে ২০১০-এ শঙ্করপুরে বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি চালু হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট পরিমাণ বর্জ্যের অভাবে তা বেশি দিন চলেনি। ২০১৩ সালের জুনে বেতন না পাওয়ার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রের কর্মীরা কাজ বন্ধ করে দেন। বকেয়া বিল না মেটানোয় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে দেয় ডিপিএল। ফলে পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রটি। ২০১৪-র এপ্রিলে কেন্দ্রটি ফের চালু করার জন্য পদক্ষেপ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিনের জমে থাকা শুকনো বর্জ্যে আগুন ধরে কেন্দ্রটিই ভস্মীভূত হয়ে যায়। ২০১৫-র মাঝামাঝি পিপিপি মডেলে নতুন কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে পুরসভা। আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) পুরনো কেন্দ্রের পাশে তিন একর জমিও দেয়। কিন্তু সেই পরিকল্পনা শেষমেশ আর বাস্তবায়িত হয়নি।

কেন্দ্রীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএমইআরআই ২০১৭-র নভেম্বরে বিশেষ ধরনের বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র ‘প্লাজমা গ্যাসিফিকেশন প্ল্যান্ট’ তৈরির কথা জানায়। উদ্বোধন করেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের আগে এত দিন জৈব ও অজৈব বর্জ্য আলাদা করতে হত। কিন্তু এই কেন্দ্রে যান্ত্রিক পদ্ধতিতেই দু’ধরনের বর্জ্য আলাদা হয়। অজৈব বর্জ্য থেকে ইট ও জৈব বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপন্ন হয়, যা রান্নার গ্যাস হিসেবে বা বিদ্যুৎ তৈরিতে বিকল্প জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। পুরসভার তরফে সিএমইআরআই-এর সঙ্গে মিলিত ভাবে এমন কেন্দ্র তৈরির জন্য পরিকল্পনা পাঠানো হয় নগরোন্নয়ন দফতরে। কিন্তু সম্প্রতি সেই প্রস্তাব বাতিল করার কথা জানায় নগরোন্নয়ন দফতর।

দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম দু’বছর প্রকল্পটি পরিচালনার কথা ছিল সিএমইআরআই-এর। পরে তা করার কথা ছিল দুর্গাপুর পুরসভার। কিন্তু নগরোন্নয়ন দফতর জানিয়েছে, ১৫ বছর পরে পুরসভা প্রকল্প হাতে নেবে, সে ভাবে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে। নতুন পরিকল্পনা শীঘ্রই নগরোন্নয়ন দফতরে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pollution Garbage Dumping Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE