প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগে পোস্টার পড়ল অণ্ডালের উখড়ায়। পঞ্চায়েত প্রধানের পদত্যাগের দাবিও জানানো হয়েছে। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা বলে দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ ও এলাকাবাসীর অনেকের অনুমান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার উখড়া পঞ্চায়েত কার্যালয়ের গেটে, স্কুল মোড় ও পুরাতন হাটতলার দু’টি দোকানের দেওয়ালে ও নতুন হাটতলায় তৃণমূল কার্যালয়-সহ বেশ কয়েক জায়গায় পোস্টারগুলি নজরে পড়ে। ‘উখড়া নাগরিক সমাজ’-এর নাম করে সাঁটানো পোস্টারগুলিতে স্বজনপোষণ, দুর্নীতি ও ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। প্রধান রীতা ঘোষের পদত্যাগও দাবি করা হয়েছে।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে উখড়া পঞ্চায়েতের ২২টি আসনই দখল করে তৃণমূল। কিন্তু পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের আগে ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ তৈরি হয়। তার জেরে সিদ্ধান্ত হয়, প্রথম আড়াই বছর রীতা ঘোষ প্রধান ও রাজু মুখোপাধ্যায় উপপ্রধানের দায়িত্ব সামলাবেন। বাকি আড়াই বছর উৎপলা চট্টোপাধ্যায় প্রধান ও শরণ সাইগল উপপ্রধান হবেন। কিন্তু অগস্টে ১৪ জন পঞ্চায়েত সদস্য রীতাদেবীর বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ, দুর্নীতি, পছন্দের সদস্যদের উন্নয়নের কাজ পাইয়ে দেওয়া, বিভিন্ন সংসদে জল সমস্যা ও নর্দমা সাফাই না হওয়ার অভিযোগে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি পাঠান। তার পরে অণ্ডালের বিডিও প্রধান-সহ সব সদস্যকে নিয়ে বৈঠক করেন।
এ দিন পোস্টারের ঘটনার পরে রীতাদেবী বলেন, “পোস্টারে লেখা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমার দলের লোকজন ও এলাকার মানুষ এ সবে বিশ্বাস করেন না।’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘স্বঘোষিত এক তৃণমূল নেতা নিজের আখের গোছাতে আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন। আগে তিনি অন্য দলে ছিলেন, যার এখন কোনও অস্তিত্ব নেই। আমাদের দলের নাম করে মানুষকে প্রতারণা করছেন তিনি। গোটা বিষয়টি দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি।”
স্থানীয় তৃণমূল কর্মী ও এলাকাবাসীর একাংশের অনুমান, রীতাদেবীর অভিযোগের তির প্রাক্তন নকশাল নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। সোমনাথবাবু জানান, তিনি ২০০৯ সালে আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য কোর কমিটির সদস্য হন। কিছু নেতার দুর্নীতির প্রতিবাদে ২০১৩ সালে পদত্যাগ করলেও গত লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলে ফিরেছেন। পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি তাঁকে দলের উখড়া অঞ্চল যুগ্ম-আহ্বায়কের দায়িত্বও দিয়েছেন বলে দাবি করেন সোমনাথবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘আমি কাউকে পোস্টার সাঁটাতে বলিনি। তবে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সমর্থন করি। এর আগে বেশিরভাগ পঞ্চায়েত সদস্যও একই অভিযোগ জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন।’’
অণ্ডালের বিডিও ঋত্বিক হাজরা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে পুজোর পরেই অডিট করা হবে। দুর্নীতি হয়েছে কি না তখনই বোঝা যাবে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy