Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

জোগানে টান, মাছের দর বাড়ল দুর্গাপুরে

মঙ্গলবার সকাল। দুর্গাপুরের একটি বাজার। গিয়ে দেখা গেল, সেখানে রীতিমতো ক্ষুব্ধ ডিএসপি-র এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মী সুশান্ত বসু।

ফাঁকা: দুর্গাপুরের বিদ্যাসাগরপল্লিতে। —নিজস্ব চিত্র।

ফাঁকা: দুর্গাপুরের বিদ্যাসাগরপল্লিতে। —নিজস্ব চিত্র।

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:৩০
Share: Save:

ব্যারাজ থেকে বেরিয়ে গিয়েছে মাছ। এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুর শহরের নানা বাজারে জোগান কম থাকায় মাছের দর এক লাফে মঙ্গলবার বেশ খানিকটা বেড়েছে বলে দাবি ক্রেতা-বিক্রেতা, সবারই।

মঙ্গলবার সকাল। দুর্গাপুরের একটি বাজার। গিয়ে দেখা গেল, সেখানে রীতিমতো ক্ষুব্ধ ডিএসপি-র এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মী সুশান্ত বসু। তাঁর দাবি, ‘‘যে মাছ রবিবার কিনেছিলাম আড়াইশো টাকায়, মঙ্গলবার তাইই কিনলাম তিনশো টাকা কেজি দরে। বিক্রেতাকে বললাম, বললেন, ব্যারাজে মাছ নেই। তাই দাম বেড়েছে।’’

শহরের নানা পাইকারি মাছ বিক্রেতারা জানান, স্টেশন বাজার, মামরা বাজার-সহ দুর্গাপুরের প্রায় সব বাজারেই মাছের জোগানের একাংশ আসে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে। কিন্তু দুর্গাপুর ব্যারাজে মেরামতের জন্য সব জল বের করে দিতে হয়। সেই জলের তোড়ে সব মাছ বেরিয়ে যায়। ভেসে যায় অনেক জেলের জালও। এর ফলে ব্যারাজ থেকে মাছ আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সোমবার পর্যন্ত মজুত মাছে বাজার স্বাভাবিক থাকলেও মঙ্গলবার থেকেই পরিস্থিতিটা পাল্টে গিয়েছে। মাছ বিক্রেতারা জানান, মূলত বসিরহাট ও নদিয়া থেকে মাছ আমদানি করে বাজার চলছে।

মাছ বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বসিরহাট থেকে কাতলা ও নদিয়া থেকে চিংড়ি মাছ বরাবরই আসে। তবে ব্যারাজের মাছ আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বসিরহাট থেকে চিংড়ি, ভেটকি, পারসে, তেলাপিয়া, ট্যাংরা মাছও আনতে হয়েছে। ফলে পরিবহণ ও বরফের খরচ বাবাদ অধিকাংশ মাছের দর কেজিতে গড়ে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে চিংড়ি, ট্যাংরা মাছের দাম কেজি প্রতি প্রায় একশো টাকা বেড়েছে বলে জানা গিয়েছে। বড় আকারের কাতলা অন্য সময় বিক্রি হয় ২৫০ টাকা কেজি দরে। এ দিন তা ছিল ৩০০ টাকা কিলো। চিংড়ি বিক্রি হয় ৪০০ টাকা কেজি দরে। এ দিন তা ছিল পাঁচশো টাকার মতো। দুর্গাপুর স্টেশন লাগোয়া বাজারে মাছ কিনতে এসেছিলেন সগড়ভাঙা এলাকার বাসিন্দা সৌরভ বাগচী। তাঁর কথায়, ‘‘রাতারাতি মাছের দর অনেকটাই বেড়েছে। বাধ্য হয়ে তাইই কিনেছি।’’

ক্রেতাদের পাশপাশি মাছ ব্যবসায়ীরাও সমস্যায় পড়েছেন। দামোদরের পাড়ে বিদ্যাসাগরপল্লিতে মাছের আড়ত রয়েছে পার্থ বিশ্বাসের। উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি, ইসলামপুরে মাছ রফতানি করেন তিনি। পার্থবাবু বলেন, ‘‘মাছ একেবারেই আসেনি। কী ভাবে ব্যবসা চলবে জানি না। কত দিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তা-ও বোঝা যাচ্ছে না।’’ এমনকী জোগান কম থাকায় বাজারের বেশ কিছু দোকান বন্ধও ছিল বলে জানান সিটি সেন্টারের ডেইলি মার্কেটের মাছ ব্যবসায়ী জগবন্ধু হালদার। ডিসিএল মোড়ের খুচরো মাছ বিক্রেতা স্বপন হালদার অথবা সিটি সেন্টারে বাড়িবাড়ি ঘুরে মাছ বিক্রি করা শ্যামাপদ ধীবরেরা বলেন, ‘‘ব্যারাজের বিপত্তির জেরে আমাদের চরম ক্ষতি হয়ে গেল। লাভ তলানিতে ঠেকেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE