চলছে যাত্রী ওঠা-নামা।—নিজস্ব চিত্র।
অন্ডাল থেকে দুর্গাপুর ঢোকার মুখে গোপালমাঠ। উড়ালপুলে ওঠার মুখে ট্রাফিক আইন ভেঙে আচমকা দাঁড়িয়ে পড়ল দুর্গাপুর-বরাকর রুটের যাত্রীবাহী বাস। পিছনে জোরে ব্রেক কষল মোটরবাইক। দুর্গাপুর ও লাগোয়া এলাকায় এমন ছবিই দ্বস্তুর। অভিযোগ, রাস্তার পাশেই ‘বাস বে’ থাকলেও সেখানে বাস থামে না।
জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের সময়ে বিভিন্ন মোড়ে বাস-বে’গুলি ভেঙে ফেলা হয়। সেই সময়ে রাস্তার উপরে দাঁড়িয়েই যাত্রী তোলা শুরু করে বাসগুলি। কিন্তু এখন বেশ কিছু মোড়ে উড়ালপুল তৈরির কাজ প্রায় শেষ। যান চলাচলও শুরু হয়েছে। উড়ালপুলের নীচে বাস দাঁড়ানোর জন্য তৈরি করে হয়েছে নতুন ‘বাস বে’। কিন্তু অধিকাংশ বাসই সময় বাঁচাতে সেই নির্দিষ্ট জায়গাগুলি ব্যবহার করে না বলে অভিযোগ। এর জেরে পিছন থেকে আসা অন্য চালকদের পক্ষেও গাড়ির নিয়ন্ত্রণ রাখা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ছে। প্রাণ হাতে করে বাসে উঠতে-নামতে হচ্ছে যাত্রীদেরও।
সমস্যার ছবিটা কী রকম? জাতীয় সড়কের মেনগেট এলাকায় উড়ালপুল নেই। তবে আড়াআড়ি ভাবে জাতীয় সড়কের উপরে রয়েছে ডিএসপি-র একটি উড়ালপুল। তার তলায় মূল রাস্তার পাশেই বাস দাঁড়ানোর জন্য তৈরি হয়েছে বাস-বে। শুক্রবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, সেই বাস-বে’র বদলে জাতীয় সড়কের উপরেই বাসগুলি যাত্রী ওঠানো-নামানো করছে। অথচ, সেই সময়েই পিছনে রয়েছে দ্রুত গতির ট্রাক, গাড়ি, মোটরবাইক। এক যাত্রীর আশঙ্কা, ‘‘যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’
ট্রাফিক আইন ভাঙার এমন দৃশ্য দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি মোড়, মুচিপাড়া মোড়েও হরদম চলছে। অনিতা বসু নামে এক মহিলা নিয়মিত মুচিপাড়া বাস ধরেন। তিনি জানান, ২০১১ সালে এই মোড়ে ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল এক আট বছরের বালকের। সেই সময়ে রাস্তা অবরোধ, ট্রাক ভাঙচুরও হয়েছিল। ঘটনার পরে কয়েক দিন নজরদারির কড়াকড়ি দেখা গেলেও এখন অবস্থা আগের মতোই। গোপালমাঠের উড়ালপুলটি দিয়ে মোটরবাইকে চড়ে ফি দিন যাতায়াত করেন একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী পিন্টু সাঁপুই। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘উপযুক্ত নজরদারির অভাবেই এমনটা চলছে। যে কোনও মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা হতে পারে।’’
ট্রাক চালকদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট জায়গায় বাস না দাঁড়ানোয় জাতীয় সড়কের একাংশ প্রায় সবসময়েই আটকে থাকে। এর জেরে পথচারী থেকে গাড়ির চালক, সকলেই সমস্যায় পড়ছেন। পরিবহণ দফতরের দুর্গাপুরের আঞ্চলিক দফতরে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, যাত্রীবাহী বাসগুলির নির্দিষ্ট জায়গাতেই থামার কথা। কিন্তু সময় বাঁচাতে বা ‘লেট ফাইন’ এড়াতে বহু বাসই সেই নিয়ম মানে না। ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘পর্যাপ্ত কর্মী না থাকায় সব মোড়ে কড়া নজরদারি চালানো যায় না। মাঝেসাঝে বিশেষ অভিযানও চলে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy