গোলমাল দুর্গাপুর হাউসের সামনে। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
স্থায়ী চাকরির দাবিতে কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী চৌধুরী বীরেন্দ্র সিংহের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন ডিএসপি-র এক দল শিক্ষানবীশ। কিন্তু দেখা না হওয়ায় মন্ত্রীর গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠল সিআইএসএফ-এর বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে দুর্গাপুর হাউসের সামনের ঘটনা।
ডিএসপি সূত্রে জানা যায়, সালেমের কারখানা পরিদর্শন সেরে মন্ত্রী বিশেষ বিমানে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অণ্ডাল বিমানবন্দরে নামেন। দুর্গাপুর হাউসে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করা হয়। শুক্রবার সকাল ৯টা নাগাদ দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট ও অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট (এএসপি) কারখানা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল মন্ত্রীর। কিন্তু সকাল ৮টা থেকে দুর্গাপুর হাউসের সামনের রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কয়েকশো ‘ট্রেড অ্যাপ্রেনটিস’।
বিক্ষোভকারীরা দাবি জানান, ডিএসপি-তে তাঁদের স্থায়ী চাকরি দিতে হবে। কর্তব্যরত সিআইএসএফ কর্মীরা তাঁদের সরে যেতে বললেও লাভ হয়নি। পৌনে ১০টা নাগাদ মন্ত্রীর কনভয় বার হওয়ার তোড়জোড় শুরু হতেই বিক্ষোভ চরমে ওঠে। সিআইএসএফ-এর পাহারা সত্ত্বেও কয়েক জন বিক্ষোভকারী দুর্গাপুর হাউসের গেটের কাছে মন্ত্রীর কনভয়ের সামনে শুয়ে পড়েন। বিক্ষোভকারীরা জানান, সিআইএসএফ কর্মীরা লাঠি চালিয়ে ও চ্যাংদোলা করে তাঁদের সরিয়ে দেন। শেষমেশ সকাল ১০টা নাগাদ বেরিয়ে যায় মন্ত্রীর কনভয়।
বিক্ষোভকারীদের পক্ষে সৈকত কুড়ি জানান, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষানবীশদের বরাবর ডিএসপি-র স্থায়ী পদে নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে তা হচ্ছে না। এর ফলে প্রায় পাঁচশো শিক্ষানবীশ প্রশিক্ষণের পরেও চাকরি পাননি। সৈকতবাবুর কথায়, ‘‘অতীতে নন-টেকনিক্যালদেরও স্থায়ী চাকরি দেওয়া হয়েছে। অথচ আমরা আইটিআই থেকে পড়াশোনা করেছি। অল ইন্ডিয়া ট্রেড টেস্ট উত্তীর্ণ হয়ে এক বছর ধরে প্রশিক্ষণ নিয়েছি ডিএসপি-তে। প্রশিক্ষণের সময় খুব কম ‘স্টাইপেন্ড’ দেওয়া হয়। তবু আমরা কাজ করি ভবিষ্যতের কথা ভেবে। কারখানার অগ্রগতিতে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’’ বিক্ষোভকারীরা জানান, তাঁদের দাবি ছিল, মন্ত্রীর সঙ্গে এক বার দেখা করে কথা বলতে। কিন্তু মন্ত্রী দেখা করেননি। এক বিক্ষোভকারীর ক্ষোভ, ‘‘এত তোড়জোড় ‘স্কিল ইন্ডিয়া’ নিয়ে। আমরা তো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। অথচ চাকরি চাইতে এসে লাঠি খেয়ে রক্তাক্ত হতে হল।’’
ডিএসপি সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রশিক্ষণের পরে শিক্ষানবীশদের চাকরি দিতেই হবে এমন কোনও নিয়ম নেই। অতীতে শূন্যপদ থাকায় সেই সব পদে নিয়োগ হয়েছে। কিন্তু এখন সে পরিস্থিতি নেই। ডিএসপি-র মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক চিন্ময় সমাজদারের কথায়, ‘‘লাঠি চালানোর ঘটনার কথা জানা নেই। ইস্পাতমন্ত্রীকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল, সিআইএসএফ সেই দায়িত্বই পালন করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy