ছবি: সংগৃহীত
কর্মী সঙ্কট। আর তার জেরে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ধান কেনার কাজে অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ করল জেলা খাদ্য দফতর। প্রশাসন সূত্রে খবর, ধান কেনার অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন কর্মীদেরই নিয়োগ করা হয়েছে। এই সব কর্মীরা বিভিন্ন ধান কেনার শিবিরে মাস্টার রোল, চালান কাটার কাজ করবেন।
নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানা যায়, জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতীকে মাথায় রেখে একটি কমিটি তৈরি হয়। ওই কমিটিই প্রাথমিক তালিকা তৈরি করে খাদ্য দফতরের কমিশনারের কাছে পাঠায়। সেখান থেকেই চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা অনুমোদন করা হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ৫০ জন প্রাক্তন কর্মী ‘ডিসবার্সন অফিসার’ পদে ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে থেকে ২০ জনকে নির্বাচিত করা হয়। শেষমেশ ওই অস্থায়ী পদে ১৪ জন প্রাক্তন কর্মী যোগ দিয়েছেন।
কিন্তু এর পরেও ধান কেনার শিবিরে কর্মী-সঙ্কট কাটবে না বলেই মনে করছে খাদ্য দফতর। সেখানের কর্তারা জানান, প্রতিটি শিবিরে দু’জন করে কর্মী দরকার। একজন চেকে চাষিদের নাম ও টাকার অঙ্ক লেখেন (চলতি কথায় তাঁরা ‘পার্চেস অফিসার’)। অন্য জন ‘ডিসবার্সন অফিসার’। ব্লক দফতর থেকে ‘পার্চেস অফিসার’ নিয়োগ করা হয়েছে। এই মুহূর্তে জেলায় সব মিলিয়ে ৩৮টি শিবির চলছে। মঙ্গলকোট, মন্তেশ্বর-সহ বেশ কিছু ব্লকে আরও কয়েকটি ধান কেনার শিবির খুলতে হবে খাদ্য দফতরকে।
কর্মীর অভাবে এখনও বেশ কিছু ব্লকে ধান কেনার শিবিরই করতে পারেনি খাদ্য দফতর। সে জন্য ধান কেনার প্রক্রিয়া খুবই শ্লথ বলে অভিযোগ করছেন বেশ কিছু ব্লকের চাষিরা। এই পরিস্থিতিতে কর্মী-সঙ্কট মেটাতে ফের প্রাক্তন কর্মী নিয়োগ করতে হলে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া-সহ নানা প্রক্রিয়া সারতে ন্যূনতম এক মাস সময় লাগবে বলে জানান জেলার খাদ্য নিয়ামক (পূর্ব বর্ধমান) আবির বালি। তাঁর প্রস্তাব, ‘‘প্রশাসনিক দফতর থেকে কর্মী নিয়োগের জন্য জেলাশাসককে বলব বলে ভেবেছি। প্রশাসনের কর্মী পাওয়া গেলে ধান কেনার প্রক্রিয়াও দ্রুত এগোবে।’’
তাঁদের অভিযোগ, খোলা বাজারে ধানের দাম কুইন্টাল পিছু ১,৪০০ টাকার মতো। সেখানে এ বছর সহায়ক মূল্যে ধান কেনা হচ্ছে কুইন্টাল পিছু ১,৮৫০ টাকায়। এ ছাড়াও যাতায়াত ভাড়া বাবদ ২০ টাকা পাওয়া যাবে। এই পরিস্থিতিতে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে চাষিদের আগ্রহ রয়েছে।
কিন্তু গত দু’মাসে জেলায় মাত্র ২৩ হাজার চাষি রেজিস্ট্রশন করিয়েছেন। আর সরকার ধান কিনেছে (গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত) মাত্র ৮০৮ টন! আবার গত বারের ৬,০০০ টন চাল এখনও চালকলের গুদামে পড়ে রয়েছে। খাদ্য দফতরের একাধিক কর্তা অবশ্য জানিয়েছেন, সরকার সব ধান কিনতে পারবে না। গত বছর চার লক্ষ ৯২ হাজার টন ধান কেনা হয়। এ বার বড় জোর তা পাঁচ লক্ষ টন হবে। বাকি ধান খোলা বাজারেই বিক্রি হবে। ফলে, যাতে খোলা বাজারে ধানের দাম বাড়ে, সে জন্য ধীর গতিতে ধান কেনা হচ্ছে বলে দফতর সূত্রে খবর। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, সহায়ক মূল্যের জন্য খোলা বাজারে ধানের দাম বাড়ানো, সরকারের অন্যতম নীতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy