—প্রতীকী ছবি
পেটে জ্বালা, ব্যথা নিয়ে গ্রামের হাতুড়ের কাছে গিয়েছিলেন চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। অভিযোগ, অ্যাপেনডিক্স অস্ত্রোপচার করা হয় ওই মহিলার। কিন্তু ফিরে আসার পরেও রক্তপাত বন্ধ হয়নি। ফের ডাক্তারের কাছে গেলে জানানো হয়, গর্ভস্থ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এরপরেই ওই হাতুড়ের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ করেন কেতুগ্রামের কোজলসার ওই মহিলা। বুধবার রাতে গ্রেফতারও করা হয়েছে কাব্যেন্দু বিশ্বাস নামে ওই হাতুড়েকে। ওই মহিলা আপাতত কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের চিকিৎসকের আবার দাবি, কোনও অস্ত্রোপচারই হয়নি ওই মহিলার। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, ‘‘এখনও অভিযোগ পাইনি, পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২২ অক্টোবর শারীরিক সমস্যা নিয়ে আমগড়িয়ার ওই চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন বছর চব্বিশের ওই মহিলা, জ্যোৎস্না বিবি। তাঁর অভিযোগ, ওই ডাক্তার জানান, তাঁর অ্যাপেনডিক্স হয়েছে। অস্ত্রোপচার না করালে গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হতে পারে। ডাক্তারের কথা মতো কাটোয়ার একটি বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি থেকে কিছু পরীক্ষা করান তিনি। এরপরেই কাটোয়ারই একটি জায়গায় তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। জ্যোৎস্না বিবির দাবি, যেখানে অস্ত্রোপচার হয়েছে সেটি নার্সিংহোম না কোনও ক্লিনিক তা তিনি বুঝতে পারেননি। অস্ত্রোপচারের পরে ওই ডাক্তারের দেখাও পাননি। বাড়ি ফিরে আসার পরে রক্তপাত শুরু হয় তাঁর। বারবার ফোন করার পরে ওই ডাক্তার তাঁকে কান্দরা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেন বলেও তাঁর দাবি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলে তাঁকে জানানো হয়, গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করানোর কথা বলা হয়। আপাতত কাটোয়াতেই ভর্তি তিনি।
জ্যোৎস্না বিবির আরও দুটি সন্তান রয়েছে। স্বামী দিল্লিতে কাজ করায় ডাক্তারের কাছে বেশির ভাগ একাই যেতেন তিনি। বৃহস্পতিবার কাটোয়া হাসপাতালে তাঁর বাবা আনিস শেখ বলেন, ‘‘ওই হাতুড়ে কোথায় নিয়ে গিয়ে কী এমন অস্ত্রোপচার করল যে মেয়েটার বাচ্চাটাই আর থাকল না!’’ যদিও মহিলার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা কাটোয়া হাসপাতালের চিকিৎসকের দাবি, জোৎস্না বিবির অ্যাপেনডিক্সের অস্ত্রোপচার হয়নি। কাটোয়া আসার আগেই তাঁর ‘মিসক্যারেজ’ হয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই হাতু়ড়ে বছর পাঁচেক ধরে ওখানে চিকিৎসা করতেন। পাশাপাশি রক্ত, মল, মূত্র পরীক্ষাও করতেন। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রে আরও কেউ জড়িত কি না তা জানা হবে বলে পুলিশের দাবি। সঙ্গে খতিয়ে হবে তাঁর ডিগ্রিও। এ দিন ধৃতকে আদালতে তোলা হলে চার দিনের পুলিশ হেফাজত হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy