Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
অসন্তুষ্ট কর্তা, দ্রুত ব্যবস্থার নির্দেশ

প্রশ্নের মুখে দুর্গাপুর রেল স্টেশন

পরিচ্ছন্নতা-স্বাচ্ছন্দ্যের বিচারে সারা দেশে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। সে জন্য পুরস্কারও মিলেছে। তা সত্ত্বেও প্রশ্নের মধ্যে পড়তে হল দুর্গাপুর স্টেশনকে। প্রশ্ন উঠেছে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি স্টেশনের পরিচ্ছন্নতা নিয়েও।

অপরিচ্ছন্ন। নিজস্ব চিত্র

অপরিচ্ছন্ন। নিজস্ব চিত্র

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১৩
Share: Save:

পরিচ্ছন্নতা-স্বাচ্ছন্দ্যের বিচারে সারা দেশে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। সে জন্য পুরস্কারও মিলেছে। তা সত্ত্বেও প্রশ্নের মধ্যে পড়তে হল দুর্গাপুর স্টেশনকে। প্রশ্ন উঠেছে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি স্টেশনের পরিচ্ছন্নতা নিয়েও। তাই সব দিক বিবেচনা করেই অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের ডিআরএম প্রশান্তকুমার মিশ্র।

এই স্টেশন দিয়ে রাজধানী, শতাব্দী-সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন চলাচল করে। রেল সূত্রে জানা যায়, বছরে গড়ে দুর্গাপুর স্টেশন দিয়ে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন। আদর্শ স্টেশন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে বহু বছর আগেই। গত মে মাসে রেলের পরিচ্ছন্নতা-সমীক্ষায় দুর্গাপুর স্টেশন সারা দেশে পঞ্চম স্থান অধিকার করে। অগস্ট মাসে ডিআরএম স্টেশন পরিদর্শনে এসে নানা ‘গাফিলতি’ খুঁজে পান। ৪ ও ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ঘুরে দেখার পরে একটি স্টলে গিয়ে দেখেন, খালি হাতে খাবার পরিবেশন করছেন কর্মীরা। স্টলে থাকা কাপড়ও পরিষ্কার নয়। খাবার আঢাকা। আর একটি স্টলে দেখেন, রেলের নিজস্ব জলের পরিবর্তে অন্য সংস্থার জল বিক্রি হচ্ছে। স্টল মালিকদের সতর্ক করে দেন ডিআরএম। চলমান সিঁড়ি সেদিন বন্ধ ছিল। সামনে সিঁড়ি বন্ধ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ডিআরএম। শৌচাগার নিয়মিত সাফাই করার নির্দেশ দেন তিনি।

ওই দিনের পরিদর্শনের পরে পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি যে হয়েছে তা কিন্তু নয়। বৃহস্পতিবার স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, রেলের যাত্রীরা জানিয়েছেন, মাঝে মাঝেই চলন্ত সিঁড়ি বিকল হয়ে থাকে। এমনকী কোনও সতর্কতামূলক বোর্ডও দেওয়া থাকে না বলে যাত্রীদের দাবি। যাত্রীদের দাবির সত্যতা খুঁজেও পাওয়া গিয়েছে। নিত্যযাত্রী বর্ধমানের বাসিন্দা গোপাল পাল বলেন, ‘‘কোনও যাত্রী না বুঝে বন্ধ থাকা সিঁড়িতে চেপে পড়লে সমস্যা বা বিপদ ঘটতে পারে।’’

দেখা গিয়েছে, ২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের পূর্বদিকে পুরুষদের শৌচাগারের বেহাল অবস্থা। বেসিন থেকে শুরু করে পাইপ-সব ভেঙে পড়ে গিয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় পাইপ উধাও। দু’টি শৌচাগার অপরিচ্ছন্ন, কিছু জিনিস নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শৌচকর্মের জন্য জল নেওয়ার কোনও পাত্র নেই। মেঝে সাফাইও হয় না ঠিকমতো। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।

২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে নির্মাণ কাজ চলছে। সে জন্য বালি ঢেলে রাখা আছে প্ল্যাটফর্মের মেঝেতেই। স্টেশনের বাইরের চত্বরও বেশ অপরিষ্কার। সামান্য বৃষ্টি হলেই ঢোকার মুখে জল দাঁড়িয়ে যায়। যাত্রীদের নোংরা জল ডিঙিয়েই স্টেশনে ঢুকতে-বেরোতে হয় বলে অভিযোগ। রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্টেশন কর্তৃপক্ষকে।

ডিআরএম ২৮ নভেম্বর রাতে হঠাৎ পরিদর্শনে এসেছিলেন দুর্গাপুর স্টেশনে। রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘দুর্গাপুর স্টেশনের যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য আরও ভাল করার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন ডিআরএম। সেই মতো আমরা ব্যবস্থা নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur Railway Station Clealiness Surveillance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE