Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জমিতে ধান, আশঙ্কায় আলু চাষিরা

নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে খেত থেকে খামারে আনা যাচ্ছে না ধান। জেলার নিচু জমিগুলিতে আলু চাষের জন্য জমি তৈরিতেও সমস্যা শুরু হয়েছে বলে জানান চাষিদের একাংশ। কৃষি দফতরের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে আলু চাষ অনন্ত ২০ দিন পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বহু জমিতেই এখনও পড়ে রয়েছে ধান। —নিজস্ব চিত্র।

বহু জমিতেই এখনও পড়ে রয়েছে ধান। —নিজস্ব চিত্র।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
কালনা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ০০:২২
Share: Save:

নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে খেত থেকে খামারে আনা যাচ্ছে না ধান। জেলার নিচু জমিগুলিতে আলু চাষের জন্য জমি তৈরিতেও সমস্যা শুরু হয়েছে বলে জানান চাষিদের একাংশ। কৃষি দফতরের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে আলু চাষ অনন্ত ২০ দিন পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলা কৃষি দফতরের হিসেবে অনুযায়ী বর্ধমানে প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। প্রতি বছর উৎপাদন হয় প্রায় ২০ লক্ষ মেট্রিক টন। জেলার চাষিদের বক্তব্য, শীতকালীন অর্থনীতির অনেকটাই নির্ভর করে এই চাষের উপরে। ইতিমধ্যে চাষিদের একাংশ জলদি পোখরাজ আলুর চাষ শুরু করেছেন। বেশির ভাগ চাষিই জ্যোতি আলু চাষের জমি তৈরি করেন নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে।

এই জ্যোতি আলুর চাষ নিয়েই চাষিরা শঙ্কিত। চাষিরা জানান, খেতের জমি তৈরির জন্য ট্র্যাক্টর বা নাঙল ব্যবহার হয়। কিন্তু শুক্রবার রাত থেকে বৃষ্টির ফলে বেশ কিছু নীচু জমিতে জল জমে যাওয়ায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না বলে দাবি। কালনার আলু চাষি বিপদভঞ্জন দে’র আশঙ্কা, ‘‘জমিতে অনেকটা জল রয়েছে। বৃষ্টি না ধরলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।’’ পূর্বস্থলী ২ ব্লকের আলু চাষি কপিল সরকার বলেন, ‘‘ভাল দর পাওয়ার আশায় দিন কয়েক আগে জমিতে জলদি আলুর চাষ করেছি। কিন্তু যে ভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, তাতে জমিতেই না আলু বীজ পচে যায়।’’

বৃষ্টির সঙ্গে সমস্যা বাড়িয়েছে জমিতে থাকা ধান। সাধারণ ভাবে আলু চাষ শুরুর আগে জমি থেকে আমন ধান কেটে খামারে তোলা হয়। মেমারি, মন্তেশ্বর, রায়না, খণ্ডঘোষ, কালনা১ ও ২ ব্লকে ধান কাটার কাজ শুরুও হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির জেরে ধান জমিতেই পড়ে রয়েছে। কালনার ধান চাষি রমেশ ঘোষ জানান, জমিতে জল জমলে ধানের রং কালচে হয়ে যাবে অথবা জমিতে অঙ্কুরোদ্গম হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে ধান খামারে তুলে আলু চাষের উপযোগী জমি তৈরি করতে আরও মাস খানেক সময় লেগে যাবে বলে ধারণা চাষিদের একাংশের। তেমনটা হলে আলু গাছ পুরো সময় শীত নাও পেতে পারে। সে ক্ষেত্রে নাবি ধসা রোগের সংক্রমণ ঘটারও আশঙ্কা করছেন অনেকে।

বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় কৃষি বিশেষজ্ঞরাও। জেলার এক সহ কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘নিচু জমিতে জল থাকায় তা আলু চাষের উপযোগী করে তুলতে সময় লাগবে। চাষিদের জমি থেকে জল দ্রুত বের করে দিতে হবে। একই সঙ্গে বৃষ্টি ও মেঘলা পরিবেশের কারণে পেঁয়াজের বীজ তলা, সব্জি খেতে গোড়াপচা রোগেরও প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে।’’ তবে ক্ষতি এড়াতে বিষয়টি নিয়ে আগেভাগেই চাষিদের সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে কৃষি দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rain paddy field
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE