বলগোনা-চন্দ্রপুর রোডে চাষিদের জমায়েত। নিজস্ব চিত্র
চাষের জলের দাবিতে ফের অবরোধ হল জেলায়। এ বার রাস্তা অবরোধ করলেন ভাতারের চাষিরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই অবরোধের জেরে বলগোনা-চন্দ্রপুর রোডে আটকে পড়ে বাস থেকে পণ্যবাহী নানা গাড়ি। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পরে পঞ্চায়েতের প্রধান ও পুলিশ গিয়ে কথা বলার পরে যান চলাচল শুরু হয়। বলগোনা পঞ্চায়েতের প্রধান আমজাদ শেখ বলেন, ‘‘চাষিদের সঙ্গে কথা বলার অবরোধ উঠেছে। তার পরে কয়েকজন চাষিকে নিয়ে বিডিও-র কাছে গিয়েছিলাম। সেচখালে জল যাতে পৌঁছয়, সে ব্যাপারে বিডিও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।’’
বুধবার বিকেলে জেলা স্তরে চাষের জল নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে জেলায় ৩৫০ মিলিমিটার বৃষ্টির ঘাটতির কথা উঠে আসে। মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধারে পর্যাপ্ত জল না থাকায় ৩১ অক্টোবরের বদলে আজ, শুক্রবার পর্যন্ত জল ছাড়া যাবে বলে সেচ দফতর জানিয়ে দেয়। অথচ, চাষের জন্য এখনও ১২০-১২৫ মিলিমিটার জল প্রয়োজন। এই পরিস্থিতিতে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে জমিতে জল দেওয়ার জন্য পাম্প ভাড়া নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সেই সঙ্গে কৃষি দফতরের কর্তারা দাবি করেছেন, জলের প্রয়োজন থাকলেও জমির ফসল এখনও ক্ষতির মুখে পড়েনি।
এ দিন অবরোধকারীরা অবশ্য কৃষি দফতরের কর্তাদের সঙ্গে একমত হননি। তাঁদের দাবি, জলের অভাবে মাঠ খটখটে হয়ে গিয়েছে। ধান গাছের পাতা লাল হতে শুরু করেছে। কয়েক দিন পরেই গাছের পাতা শুকিয়ে খড় হয়ে যাবে। যে সব গাছে ধানের ফলন শুরু হয়েছে, সেগুলি হয় শুকিয়ে যাবে, নয়তো কালো হতে শুরু করবে। এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ বলগোনা-চন্দ্রপুর রোডের ডাঙাপাড়া মোড়ে আশেপাশের ৫-৬টি গ্রামের কয়েকশো চাষি সেচখালে জলের দাবিতে রাস্তায় গাছের চারা রেখে অবরোধ শুরু করেন।
স্থানীয় চাষি লালচাঁদ শেখ, বাবর আলি শেখরা বলেন, ‘‘আমরা কেউ নিজের জমিতে চাষ করি। কেউ বা ভাগচাষ করে থাকি। ফসল ওঠার ঠিক আগে জলের টান রয়েছে। সে জন্যে গাছ বাড়ন্ত হচ্ছে না। জল না পেলে ফসলের ক্ষতি হয়ে যাবে।’’ পাশে দাঁড়ানো মহম্মদ কালু, সুকুমার দাসদের কথায়, ‘‘জমির দিকে তাকালে সবুজ নয়, গাছের লাল পাতা দেখা যাচ্ছে। গাছগুলি যেন খড় হওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে রয়েছে!”
ভাতারের সহ-কৃষি আধিকারিক বিপ্লব প্রতিহারের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘জলের অভাবে গাছ লাল হয়নি। ব্যাকটেরিয়া-জনিত রোগ দেখা দিয়েছে। আশা করছি, দু’এক দিনের মধ্যে নিচু এলাকাতেও জল পৌঁছে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy