Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Public Health Engineering Department

গ্রামীণ জলপ্রকল্পের ভার জনস্বাস্থ্য কারিগরির হাতে

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার, পানীয় জলের সংযোগের মতো কাজ করবে পিএইচই। প্রতিটি প্রকল্পের জন্য পঞ্চায়েতের সঙ্গে চুক্তি করবে পিইএচই।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:৩৯
Share: Save:

পঞ্চায়েতের হাত থেকে ফের গ্রামীণ এলাকার জলপ্রকল্পের দায়িত্ব ফিরে যাচ্ছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের (পিএইচই) হাতে। নভেম্বরের গোড়ায় পঞ্চায়েত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের দুই সচিবের সই করা একটি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, রাজ্যে গ্রামীণ এলাকায় ৫৮৭টি নলবাহিত জলের প্রকল্প পঞ্চায়েতের হাতে রয়েছে। সেগুলি ফের পিএইচই নিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করবে। এর মধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলাতেই রয়েছে ১৩২টি প্রকল্প। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (জনস্বাস্থ্য) বাগবুল ইসলাম বলেন, ‘‘এ নিয়ে জেলা স্তরে আলোচনা হয়েছে। জানুয়ারি থেকে ধীরে-ধীরে প্রকল্পগুলি পিএইচই-র হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রামীণ এলাকায় নলবাহিত জলপ্রকল্পগুলি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতে তুলে দেয় পিএইচই। চতুর্দশ অর্থ কমিশন থেকে প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ, কর্মীদের পারিশ্রমিক দেওয়ার নির্দেশ ছিল। ওই প্রকল্প হাতে পেতে পঞ্চায়েতগুলির আরও দু’বছর সময় লেগে যায়। এর মধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় কর্মীরা সময়ে পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না অভিযোগ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। রক্ষণাবেক্ষণও ঠিকমতো হচ্ছে না বলে নানা জায়গা থেকে অভিযোগ জমা পড়ছিল। এ নিয়ে পঞ্চায়েতের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের বারবার বৈঠকও হয়। সেখানে নানা পঞ্চায়েতের তরফে জলপ্রকল্পের কাজ করার জন্য ইঞ্জিনিয়ার বা বিশেষজ্ঞ কর্মী না থাকায় ঠিকাদারদের উপরে ভরসা করতে হচ্ছে বলে জানানো হয়। জেলা পরিষদের সভানেত্রী শম্পা ধাড়া বলেন, “প্রকল্পগুলি হস্তান্তরের পরে, পঞ্চায়েত থেকে জেলা স্তর পর্যন্ত, প্রতি তিন মাস অন্তর জনস্বাস্থ্য নিয়ে বৈঠক করা বাধ্যতামূলক।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শুধু রক্ষণাবেক্ষণ নয়, চতুর্দশ অর্থ কমিশনে সরাসরি পঞ্চায়েতগুলি জনস্বাস্থ্য প্রকল্পের জন্য টাকা পাচ্ছিল। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনে টাকা পেলেও তা কমে গিয়েছে। সেই টাকায় প্রকল্পের দেখভাল, কর্মীদের পারিশ্রমিক দেওয়া সম্ভব নয় বলে দাবি। এ ছাড়া, ওই সব প্রকল্প থেকেই বাড়ি-বাড়ি পানীয় জল পৌঁছনোর জন্য ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। বিনামূল্যে ওই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন বাসিন্দারা। যা আবার রয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের হাতে। ফলে, তার রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে পরে, পঞ্চায়েত এবং পিএইচ দফতরের মধ্যে টানাপড়েন তৈরি হতে পারে। সে জন্যই পঞ্চায়েত দফতর সব প্রকল্প ফের পিএইচই-র হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার, পানীয় জলের সংযোগের মতো কাজ করবে পিএইচই। প্রতিটি প্রকল্পের জন্য পঞ্চায়েতের সঙ্গে চুক্তি করবে পিইএচই। পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হবে। পঞ্চায়েত নলবাহিত পানীয় জল সংক্রান্ত অভিযোগ পেলে, তা পিএইচই-কে জানাবে। পূর্ব বর্ধমান জেলার গ্রামীণ এলাকায় মোট ১৭১টি জলপ্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে ১৩২টি পঞ্চায়েতের হাতে ছিল। সেগুলিই নিতে চলেছে পিএইচই। নতুন করে ২৫টি জলপ্রকল্পের কাজ চলছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বর্ধমানের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সোমনাথ কুণ্ডু বলেন, ‘‘আগের মতোই আমরা প্রকল্পগুলির দেখভাল করব। তাতে ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্পের সঙ্গে নলবাহিত জল সুষ্ঠু ভাবে পৌঁছনো সম্ভব হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE