—প্রতীকী চিত্র।
রাত হলেই বিকট শব্দে তীব্র গতিতে ছুটতে থাকে মোটরবাইক। কখনও সওয়ারি এক, কখনও বা দু’তিন জন। বেশির ভাগেরই মাথায় থাকে না হেলমেট। রাস্তা জুড়ে চলে প্রতিযোগিতা। রাত যত বাড়ে, ততই বাড়ে দৌরাত্ম্য। বেপরোয়া এই মোটরবাইকের দাপাদাপিতে ঘুম উড়েছে কালনা শহর ও লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের।
প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনাও।
‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ নিয়ে প্রচার চলছে দেদার। অপরাধ কমাতে শহরের কিছু জায়গায় বসেছে সিসিটিভিও। কিন্তু বাইকের দাপাদাপি কমেনি। এমনকী, রাতের শহরে এই বাইক আরোহীদের অনেকেই মত্ত অবস্থায় থাকেন বলে অভিযোগ বিধায়ক থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
কালনা শহরের রাস্তাঘাট এমনিতেই সরু। তার উপরে ফুটপাথ দখল করে চলে ব্যবসা। ফলে হাঁটাচলাতেও সমস্যা হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘিঞ্জি এই শহরে বেপরোয়া গতিতে দাপিয়ে বেড়ায় এই বাইক। চলে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা। কারও মাথাতেই থাকে না হেলমেট। ১০৮ শিবমন্দির থেকে স্টেশন রোড, সুরসাথী মোড় থেকে সিদ্ধেশ্বরী মোড়, স্টেশন রোড থেকে সিদ্ধেশ্বরী মোড়, নিভুজিমোড় থেকে স্টেশন রোড, দাঁতনকাঠি তলা থেকে দুলাল মুচি মোড়, এমনকী এসটিকেকে রোড-সহ বিভিন্ন রাস্তা রাত হতেই চলে যায় এদের দখলে।
সুমিত সেন নামে এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘সন্ধ্যার পরে রাস্তায় চলতে ভয় করে। প্রশাসনের এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ বাসিন্দাদের অভিযোগ, এখন কমবয়সেই ছেলেদের হাতে চলে আসে মোবাইল, মোটরবাইক বা গাড়ি। অনেক ক্ষেত্রেই মত্ত অবস্থায় বাইক ছুটিয়ে বেড়ায় তারা। কিছু দিন আগে পাণ্ডুয়া মোড়ে মত্ত অবস্থায় মোটরবাইক চালাতে গিয়ে মৃত্যু হয় এক যুবকের। কালনা পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যেই বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অভিযোগ আসে। অপরাধ ঠেকাতে ৮০টির বেশি সিসিটিভি বসানো হবে। যাঁরা জোরে গাড়ি চালাচ্ছেন পুলিশ সিসিটিভি দেখে তাদের শনাক্ত করুক।’’
বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, রাস্তার পাশে ছোট গুমটি, পানের দোকান, হোটেলে অবৈধ ভাবে চলে মদ ও গাঁজা বিক্রি। সম্প্রতি দুর্ঘটনা কমাতে শহরের পুরশ্রী মঞ্চে একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়। সেখানে বাইক আরোহীদের তাণ্ডবের পাশাপাশি রাস্তার পাশে গজিয়ে ওঠা ধাবাগুলিতে অভিযান চালিয়ে মদ বিক্রি বন্ধের কথা জানান কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু।
পুলিশের যদিও দাবি, বেআইনি মদ বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। পুলিশের আশ্বাস, বেপরোয়া গাড়ি বা বাইকচালকদের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কালনার এসডিপিও প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘চেষ্টা করছি কালনায় স্পিড-গান আনার। নির্দিষ্ট দূরত্বে ব্যারিকেড করে মাপা হবে বাইকের গতি। সীমা ছাড়ালেই বড় আর্থিক জরিমানা করা হবে। চালক মত্ত অবস্থায় রয়েছেন কি না, তা-ও পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy