Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জমি বিক্রিতে ‘জালিয়াতি’, বিপাকে ক্রেতারা

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলের গাড়ুই গ্রামের কাছে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া কয়েক একর জমি বিক্রি করেছে ওই বেসরকারি আবাসন সংস্থা।

মহকুমা প্রশাসনের দ্বারস্থ ক্রেতারা। আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

মহকুমা প্রশাসনের দ্বারস্থ ক্রেতারা। আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৪৮
Share: Save:

বাড়ি তৈরির জন্য এক বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে জমি কিনে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ উঠল আসানসোলে। প্রায় বারোশো ক্রেতা প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ। ক্রেতাদের অনেকে জেলা প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করার পরে তদন্ত শুরু করে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। প্রাথমিক তদন্ত শেষে দফতরের আধিকারিকেরা জানান, জমি বিক্রিতে জালিয়াতি হয়েছে। জমির ক্রেতারা সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবিতে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের দ্বারস্থ হয়েছেন। ওই সংস্থা কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলের গাড়ুই গ্রামের কাছে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া কয়েক একর জমি বিক্রি করেছে ওই বেসরকারি আবাসন সংস্থা। ২০১২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে প্রায় বারোশো জনকে তিন কাঠা করে প্লট বিক্রি করে তারা। এর মধ্যে কয়েকশো ক্রেতার জমি রেজিস্ট্রিও হয়। রেজিস্ট্রির পরে কিছু ক্রেতা বাড়ি তৈরির জন্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে জমির মিউটেশন করাতে যান। তাঁরা অভিযোগ করেন, তখনই জানতে পারেন, সেগুলি খাস জমি। তাই মিউটেশন হবে না। অর্থাৎ, তাঁরা বাড়িও তৈরি করতে পারবেন না। এ কথা শুনে তাঁদের মাথায় হাত পড়ে।

ওই ক্রেতারা জানান, এর পরে তাঁরা ছুটে যান আবাসন সংস্থাটির দুর্গাপুরের কার্যালয়ে। তাঁদের অভিযোগ, সংস্থার কর্মী-আধিকারিকেরা তখন রীতিমতো দুর্ব্যবহার করেন। জমির ক্রেতা বলরাম অধিকারী, রমেশকুমার গুপ্তদের কথায়, ‘‘প্রায় সাত বছর ধরে ওদের দরজায় ঘুরেছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। শেষে দুর্গাপুরের অফিসই গুটিয়ে ফেলেছে ওই সংস্থা।’’ তাঁদের দাবি, এক-এক জন অন্তত ছ’লক্ষ টাকা করে খুইয়েছেন। শেষে তাঁরা জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। সোমবার তাঁদের কয়েকজন দল বেঁধে আসানসোলের মহকুমাশাসকের দফতরে এসে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত শুরু করে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) খুরশিদ আলি কাদরি জানান, ওই ব্যক্তিদের নামে জমি রেজিস্ট্রি হওয়ার পরেও কেন মিউটেশন হচ্ছে না, তা খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, জমিগুলির পুরোটাই খাস জমি। ওই আবাসন সংস্থা জালিয়াতি করে জমির কাগজ তৈরি করে তা বিক্রি করেছে। খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, ‘‘শহরে এই ধরনের আরও নানা ঘটছে বলে খবর পেয়েছি। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

যে সংস্থাটির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে সেটির অন্যতম ডিরেক্টর কালীদাস মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, তাঁদের সংস্থাকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়েছে। সংস্থার সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর ল ট্রাইবুনালে মামলা চলছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি বিচারাধীন। তাই এ নিয়ে আমার কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Scam Land Asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE