ভাঙা কার্নিশ, বারান্দা। নিজস্ব চিত্র
চুন-সুড়কি দেওয়া ছাদের চাঙর ভেঙে পড়ছে যখন-তখন। ঘরগুলিতে বড় বড় ফাটল। পরিস্থিতি দেখে ৮টি ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ভেঙে ফেলা হয়েছে দোতলার বারান্দাও। এমনই হাল খণ্ডঘোষের শতাব্দী প্রাচীন স্কুল সরঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের।
অভিযোগ, বারবার আবেদন জানিয়েও স্কুলটি সংস্কারের জন্য কোনও রকম সরকারি সাহায্য মেলেনি। বাধ্য হয়ে বিভিন্ন শ্রেণির সেকশন ভাগ তুলে দিয়ে একটি ঘরেই ৬০-৭০ জন পড়ুয়াকে পড়াচ্ছেন শিক্ষকেরা। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের এই স্কুলে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারাও শ্রেণিকক্ষের সমস্যায় ভুগছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০১৫ সালের ২৫ ও ২৬ এপ্রিল, পরপর দু’দিন ভূমিকম্পের জেরে ওই স্কুলের একাংশ সম্পূর্ণ বসে যায়। তারপর থেকে ধীরে ধীরে ইট খসতে থাকে। যে কোনও সময় বিপদের আশঙ্কা করে বারান্দা ভেঙে ফেলা হয়। এখন স্কুলটি ভুতুড়ে বাড়ির চেহারা নেওয়ায় অনেক পড়ুয়া স্কুলেই আসতে চাইছে না বলেও শিক্ষকদের দাবি।
ওই ভূমিকম্পে খণ্ডঘোষের স্কুলটির মতো ভয়ঙ্কর অবস্থা না হলেও পূর্ব বর্ধমান জেলার ২৫টি স্কুল কমবেশি ক্ষতির মুখে পড়েছিল। বিভিন্ন স্কুলের দেওয়াল ও ছাদে বড় বড় ফাটল দেখা দেয়। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভূমিকম্পের জেরে ক্ষতিগ্রস্থ স্কুলগুলিকে সাহায্য করা হবে বলে শিক্ষা দফতর ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর ঘোষণা করেছিল। স্কুলগুলিও সেই মতো সরকারি ইঞ্জিনিয়রদের পরিকল্পনা ও আর্থিক প্রস্তাব চেয়ে জেলাশাসকের দফতরে চিঠি পাঠায়। চিঠি জমা পড়ে স্কুল শিক্ষা দফতরকেও। কিন্তু ঘটনা হল, দু’বছর পরেও ভবন সংস্কারের জন্য আর্থিক সাহায্য পায়নি স্কুলগুলি।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান শহরে সিএমএস উচ্চবিদ্যালয়, বাণীপীঠ গার্লস, রামাশিস হিন্দি স্কুল-সহ পঁচিশটি স্কুল আর্থিক সাহায্য চেয়ে আবেদন করেছিল। সসঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলামের দাবি, “ভূমিকম্পে ক্ষতি হওয়া স্কুলগুলি প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা সর্বশিক্ষা অভিযান থেকে কোনও সাহায্য পায়নি। তবে কোনও কোনও স্কুল সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রকল্প থেকে স্কুলে কিছুটা সংস্কার করেছে। আমাদের স্কুলে সংখ্যালঘু পড়ুয়া নামমাত্র থাকায় ওই প্রকল্প থেকে কোনও সাহায্য পাওয়া যায়নি।’’
খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগ, জেলা পরিষদের সদস্য অপার্থিব ইসলামদের কথায়, “ক্ষতিগ্রস্থ স্কুলগুলিকে সাহায্যের চেষ্টা করা হবে।” পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা ও বিপর্যয় মোকাবিলা) প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা দুটি দফতর থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলির জন্য সাহায্য চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি করেছিলাম। কিন্তু সাহায্য আসেনি। ফের কথা বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy