এক দিকে নাগরিকদের ঘরের কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। অন্য দিকে জেলা হাসপাতালে রোগীর চাপ কমানো। এক ঢিলে এই দুই পাখি মারার লক্ষ্যে পুরসভা এলাকায় আলাদা স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আসানসোল পুর কর্তৃপক্ষ। সে জন্য ন্যাশনাল আরবান হেলথ মিশনের (এনএইএইচএম) আর্থিক সাহায্য ও প্রশাসনিক অনুমোদনও মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে একটি বিশেষ দল নিরীক্ষণও শুরু করেছে বলে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
আসানসোল পুরসভার পুরো দস্তুর কোনও স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নেই। শুধু এগারোটি সাবেক আরসিএইচ রিপ্রোডাক্টিভ চাইল্ড হেল্থ (আরসিএইচ) কেন্দ্র ও দু’টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। তবে পরিকাঠামোর ও পর্যাপ্ত চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবে প্রসব ছাড়া অন্য কোনও চিকিৎসা মেলে না সেগুলিতে। রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ায় সামান্য পরিকাঠামো থাকলেও কুলটিতে কিছুই ছিল না বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
সে জন্য নাগরিকদের একমাত্র ভরসা সরকারি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা জেলা হাসপাতাল। কিন্তু সেখানেও রোগীর প্রচণ্ড চাপ। এই পরিস্থিতিতে নাগরিকদের জন্য এনএইএইচএম প্রকল্পে পৃথক পরিকাঠামো গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে পুরসভা। মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত শেষ করে ফেলা হবে।’’
কী পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে? পুরসভা সূত্রে খবর, আসানসোলের আরসিএইচ কেন্দ্রগুলিকে আরও উন্নত করে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র করা হচ্ছে। কুলটিতে ছ’টি, রানিগঞ্জে চারটি ও জামুড়িয়ায় তিনটি নতুন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হবে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, সেগুলির ভবন তৈরির জমিও মিলেছে। প্রতিটি কেন্দ্রে এক জন সর্বক্ষণ ও এক জন আংশিক সময়ের চিকিৎসক থাকবেন। এক জন ফার্মাসিস্ট, পর্যাপ্ত নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন। প্রত্যেক কেন্দ্রে একটি করে ল্যাবরেটরি, সেটি দেখভালের জন্য এক জন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হবে। এ ছাড়া এক জন স্টোরকিপার, এক জন করণিক ও একাধিক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী থাকবেন বলে পুরসভা সূত্রের আশ্বাস।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাছাই কয়েকটি কেন্দ্রে আল্ট্রাসনিক যন্ত্র বসানো হবে। নাগরিকেরা ন্যূনতম খরচে তার পরিষেবা পাবেন। বিপিএল তালিকাভুক্তদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থাও রাখা হতে পারে। পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) দিব্যেন্দু ভগত জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই পুর এলাকায় এই উন্নত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরির উদ্যোগ হয়েছে। মেয়র বলেন, ‘‘এখন নাগরিকদের ন্যূনতম স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতে জেলা হাসপাতালে ছুটতে হয়। পুরসভার এই পরিকাঠামো গড়ে তুললে তা আর হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy