প্রতীকী ছবি।
কোথাও বিরোধীশূন্য, কোথাও বা হাতে গোনা কয়েক জন বিরোধী পঞ্চায়েতে। কিন্তু তার পরেও কোথাও আ়়ড়াই বছর করে দু’জন প্রধান দায়িত্ব সামলাবেন। কোথাও বা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে বেছে নেওয়া হল পদাধিকারীকে। মঙ্গলবার পশ্চিম বর্ধমানের তিন পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন ঘিরে এমনই ঘটনা দেখা গিয়েছে। পঞ্চায়েত তিনটি, অণ্ডাল ব্লকের উখড়া ও কাঁকসা ব্লকের কাঁকসা, ত্রিলোকচন্দ্রপুর পঞ্চায়েত। এই ধরনের ঘটনা সামনে আসায়, তৃণমূল কর্মীদের একাংশ মনে করছেন, ‘বিরোধ’ আসলে দলের অন্দরেই।
উখড়া পঞ্চায়েত। সংসদের সংখ্যা ২২টি। ১৮টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং বাকি চারটি আসনে ভোটে জেতে তৃণমূল। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, উখড়ায় প্রধান ও উপপ্রধান হিসেবে দল মনোনয়ন দেয় উৎপলা চট্টোপাধ্যায় ও শরণ সাইগলকে। কিন্তু সোমবার খান্দরা পঞ্চায়েতে প্রধান প্রার্থী পরাজিত হন। এমন ঘটনা ফের যাতে না হয়, সে জন্য দলের তরফে জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের নির্দেশে নির্বাচিত সদস্যদের পছন্দকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন। তিনি বলেন, ‘‘প্রধান হিসেবে উৎপলাদেবী ও রিতা ঘোষকে এগারো জন করে সদস্য সমর্থন করেন। এরপর টস করা হয়। তাতে রিতাদেবী জিতে যান। ঠিক হয়, রিতাদেবী প্রথম আড়াই বছর ও উৎপলাদেবী পরের আড়াই বছর প্রধান হবেন। একই ভাবে রাজু মুখোপাধ্যায় প্রথমে, তার পরে শরণবাবু আড়াই বছর করে উপপ্রধানের দায়িত্ব সামলাবেন।”
এই আড়াই-আড়াই বছর ভাগেই প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীদের মধ্যে। তাঁদের মতে, এই পঞ্চায়েতে ২০১৩ সালেও বোর্ড তৈরির সময়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছিল। এ বারেও তেমনই হল বলে মনে করছেন তাঁরা। যদিও দ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি রিতাদেবী বা উৎপলাদেবী। রিতাদেবীর কথায়, ‘‘এর ফলে দলীয় গণতন্ত্রই মজবুত হল।’’ উৎপলাদেবীর বক্তব্য, ‘‘নির্বাচিত প্রধানকে সবরকম সহযোগিতা করব।”
একই ছবি কাঁকসা ব্লকেও। কাঁকসা পঞ্চায়েতে মোট আসন ২৫টিতে তৃণমূল, বিজেপি ও সিপিএমের আসনসংখ্যা যথাক্রমে ২০টি, তিনটি ও দু’টি। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, দলের বিভিন্ন স্তর থেকে স্বপ্না বৈদ্যকে প্রধান হিসেবে বেছে নেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু এ দিন দেখা যায়, কয়েক জন সদস্য এই নামের বিরোধিতা করেন। আলোচনায় উঠে আসে শুক্লা সিংহ ও সুমনা সাহার নাম। শেষমেশ ভোট হয়। এক তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সুমনা সাহার নাম প্রস্তাব করলেও তা গৃহীত না হওয়ায় ভোটদান থেকে বিরত থাকেন প্রস্তাবক সদস্য। ১৯ জন জয়ী সদস্য ভোট দেন। শুক্লাদেবী ও স্বপ্নাদেবী যথাক্রমে ১৩টি ও ছ’টি ভোট পান। প্রধান হন শুক্লা সিংহ। উপপ্রধান পদের জন্য সাবিরুল মল্লিক সাতটি ভোটে লাল্টু চট্টোপাধ্যায়কে হারান।
ভোট হল ত্রিলোকচন্দ্রপুরেও। এখানেও মোট ১৮টি আসনের এই পঞ্চায়েতে ১৭টি আসন পেয়েছে তৃণমূল। একটিতে রয়েছে বিজেপি। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, প্রধান হিসাবে প্রথমে নাম ঠিক করা হয়েছিল জারিনা খাতুনের। কিন্তু জয়ী সদস্যদের অনেকেই সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেননি। এখানে তাঁকে তিন ভোটে হারিয়ে দিয়ে প্রধান হন সাহিনা বেগম। তিন ভোটেই বিনোদবিহারী গোস্বামীকে হারিয়ে উপপ্রধান হন জুলফিকর আলি।
তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীদের একাংশ জানান, কাঁকসায় সাম্প্রতিক অতীতেও একাধিক বার কোন্দলের ঘটনা সামনে এসেছে। এ ভাবে ভোটাভুটির মাধ্যমে পদাধিকারী বেছে নেওয়া সেই ধারারই ফল। যদিও দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘দল থেকে নির্দিষ্ট কারও নাম ঠিক করা হয়নি। পঞ্চায়েতের জয়ী সদস্যরা নিজেরাই তা করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy